বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ
২৪ এপ্রিল ২০১২অল্পবয়সে বিয়ে এবং অপরিণত বয়সে মা হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারী শিশুরা৷ এছাড়া বাল্যবিবাহের ফলে কিছুদিন পরই স্বামীর নির্যাতন, স্বামীর উপর নির্ভরশীলতা, বিবাহ বিচ্ছেদ, মা ও শিশুর অসহায়ত্ব ও অযত্ন – এসব কিছু যেন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই ছোট্ট দেশটিতে৷ একইসাথে নারী শিক্ষার উপরও পড়ছে বাল্যবিবাহের বিরূপ প্রতিক্রিয়া৷ অল্প বয়সে বাবা-মার চাপে বিয়ে ও সংসার শুরু করে বিদ্যালয় ছাড়া হচ্ছে অনেক নারী শিশু৷
শিশুদের বৈশ্বিক অবস্থা নিয়ে ২০১২ সালে প্রকাশিত ইউনিসেফ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ বছর বয়স না হতেই বাংলাদেশের ৬৬ শতাংশ মেয়েকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ ফলে এদের একটি বিশাল অংশ শিক্ষা জগত থেকে ঝরে পড়ছে৷
এ বিষয়ে ডয়চে ভেলের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে নারী শিশুদের বাল্যবিবাহের পেছনে কারণগুলো তুলে ধরলেন নারী অধিকার কর্মী ও সাংবাদিক জিনাত রহমান৷ তিনি বলেন, ‘‘পিতা-মাতার অশিক্ষা, সচেতনতার অভাব, মেয়েদের নিরাপত্তাহীনতা এবং পিতা-মাতার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মেয়েদের প্রতিবাদ করার সক্ষমতা না থাকায় জোর করে বাল্যবিবাহের ঘটনা এখনও ঘটে চলেছে৷ এমনকি এটি একটি বড় ধরণের সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে৷''
বাংলাদেশের সমাজ থেকে জোরপূর্বক বাল্যবিবাহ দূর করতে করণীয় সম্পর্কে জিনাত রহমান বলেন, ‘‘একদিকে পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে৷ অন্যদিকে, মেয়েদের শিক্ষিত ও অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল করে গড়ে তোলার কাজ করতে হবে৷'' এক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাসমূহের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী নারী নেত্রী জিনাত রহমান৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, ডিপিএ
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন