ভারতে টয়লেট
১৪ মার্চ ২০১২ভারতের গার্হস্থ্য জীবনযাত্রার এক বিপ্রতীপ ছবি উঠে এসেছে গত বছরের আদমশুমারিতে৷ প্রথম পর্বে গ্রাম ও শহর মিলিয়ে ২৪ কোটি ৬৭ লাখ পরিবারে সমীক্ষা চালিয়ে যে সব তথ্যউপাত্ত পাওয়া যায়, তাতে দেখা গেছে অর্ধেকের বেশি পরিবারে মোবাইল ফোন রয়েছেছে, কিন্তু টয়লেট নেই৷ তাঁরা টয়লেটের কাজ সারে মাঠেঘাটে৷
রেজিস্ট্রার-জেনারেল ও সেন্সাস কমিশনার সি. চন্দ্রমৌলি বলেন, স্যানিটারি সুবিধার অভাব দেশের পক্ষে উদ্বেগের কারণ৷ এর একদিকে আছে সাংস্কৃতিক ও পরম্পরাগত কারণ৷ অন্যদিকে শিক্ষার অভাব৷ যদিও সবক্ষেত্রে তা নয়৷ যেমন দুই-তৃতীয়াংশ পরিবার এখনো রান্নার কাজে ব্যবহার করে কাঠ, খড়বিচালি, গোবর কিংবা কয়লা৷ ফলে মহিলাদের স্বাস্থ্যহানি হয়৷
পরিসংখ্যান আরো বলছে, মাত্র ৩২% পরিবার পরিশোধিত পানীয় জল পায়৷ ১৭% পরিবারকে জল আনতে যেতে হয় দূরে৷ তবে শহর ও গ্রামে বিদ্যুতের ব্যবহার বেড়েছে৷ ছোট পরিবারের সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ৭০%৷ আর প্রায় অর্ধেক বাড়িতে আছে টেলিভিশন, রেডিও৷
ভারতে টয়লেট ও মোবাইল ফোনের বিপরীত ছবিটা প্রখ্যাত সমাজ বিজ্ঞানী আশীষ নন্দী ব্যাখ্যা করলেন অন্যভাবে৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বললেন, ‘‘মোবাইল ফোনটা আজকাল গরিব লোকের বাহন হয়ে উঠেছে৷ আর টয়লেটের জন্য তো রয়েছে মাঠঘাট৷ গ্রামাঞ্চলে কোনোকালেই টয়লেট ব্যবহারের খুব একটা চল ছিলনা৷ এটা শুধু ভারতেই নয়, চীনেও তাই৷'' তিনি জানান, ‘‘আমি এটাকে খুব বেশি গুরুত্ব দেবনা৷ কারণ প্রত্যেক সমাজের নিজস্ব অগ্রাধিকার আছে৷''
উদাহরণস্বরুপ উনি বলেন, ‘‘একটি এনজিও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য কাজ করতে গিয়েছিল গুজরাটে গ্রামে৷ সেখানকার বেশিরভাগ লোক বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে আগ্রহী নয়৷ তাঁরা চায় কমিউনিটি টেলিভিশন৷ আসলে আমাদের দেশ এক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে চলেছে৷''
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ