বাইডেনকে 'জয়ী' বলেও হার মানলেন না ট্রাম্প
১৬ নভেম্বর ২০২০তিনি ভাঙলেন কিন্তু মচকালেন না। নির্বাচনে জো বাইডেন জিতেছেন, এ কথা মানলেন, কিন্তু নিজের হার স্বীকার করলেন না। বরং ফের প্রশ্ন তুললেন নির্বাচনের পদ্ধতি এবং কারচুপি নিয়ে। ডনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন, এত সহজে তিনি ছাড়ছেন না। উচ্চ আদালতে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মার্কিন সময়ে রোববার সকালে একটি টুইট করেন ট্রাম্প। যেখানে এই প্রথম জো বাইডেন জিতেছেন বলে মেনে নেন ট্রাম্প। ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে রেকর্ড ভোট পেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস। ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২ টি ইলেকটোরাল কলেজের ভোট। বাইডেন পেয়েছেন ৩০৬টি। ২০১৬ সালে ঠিক এই সংখ্যক ভোটেই জয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প। নিজের জয়কে 'বিশাল জয়' বলে হোয়াইট হাউসে প্রথম বক্তৃতা করেছিলেন তিনি। কিন্তু বাইডেনের জয় তিনি মানতে পারছেন না।
ট্রাম্পের বক্তব্য, ভোটে কারচুপি হয়েছে। রিগিং হয়েছে। পোস্টাল ব্যালট নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এ হেন অভিযোগ নিয়ে বেশ কয়েকটি রাজ্যের আদালতে গিয়েছিল ট্রাম্প বাহিনী। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বিশেষ লাভ হয়নি। প্রায় প্রতিটি আদালতই ট্রাম্পের পারিষদদের বলেছে, যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ তাঁদের কাছে নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও হার স্বীকার করছেন না ট্রাম্প। রোববার বাইডেনকে জয়ী বললেও, পরমুহূর্তে জানিয়ে দিয়েছেন, রিগিং করে জিতেছেন বাইডেন। ফলে তিনি হার মেনে নিচ্ছেন না। এর শেষ দেখে ছাড়বেন।
ট্রাম্পের টুইট নিয়ে অবশ্য টুইটার বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, টুইটের সত্যতা নিয়ে বিতর্ক আছে।
তবে অ্যামেরিকায় অন্য এক সমস্যা ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। ট্রাম্প হার স্বীকার না করলে একটি সাংবিধানিক সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। সংবাদমাধ্যম গুলি বাইডেনকে জয়ী ঘোষণা করে দিলেও অ্যামেরিকার জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিএসএ) বাইডেনকে এখনো জয়ী বলে ঘোষণা করেনি। জানুয়ারি মাসে শপথ গ্রহণ করে হোয়াইট হাউসে যেতে হলে জিএসএ-কে সরকারি ভাবে জয়ী প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করতে হবে। এই জিএসএ-কেই আগামী দুই মাস ধরে হোয়াইট হাউসে বাইডেনের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করতে হবে। বাইডেনকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাতে হবে। জানুয়ারি মাসে নতুন অফিসে বসে প্রেসিডেন্টের যাতে সব কিছু বুঝতে সময় না লাগে। কিন্তু জিএসএ তার কোনো কাজই এখনো পর্যন্ত করছে না। বাইডেন যে নতুন করোনা টাস্ক ফোর্স গঠন করেছেন, সেখানেও জিএসএ কোনো রকম সাহায্য করছে না।
জিএসএ-র প্রধান অফিসার এমিলি মারফি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ। এর মধ্যে ট্রাম্প এমিলিকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইটও করেছেন। মুশকিল হলো, এমিলি যতদিন বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বলে সরকারি ভাবে ঘোষণা না করছেন, তত দিন একপ্রকার অচলাবস্থা তৈরি হয়ে থাকবে। অনেকেই মনে করছেন, এটাই ট্রাম্পের পরিকল্পনা। অচলাবস্থা তৈরি করা। রোববার অনেকেই মনে করেছিলেন, এ বার রণে ভঙ্গ দিলেন ট্রাম্প। হার স্বীকার করার প্রথম পদক্ষেপ নিলেন। কিন্তু ট্রাম্পের দ্বিতীয় টুইট বুঝিয়ে দিয়েছে, এত সহজে জমি ছাড়তে রাজি নন তিনি।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)