ম্যার্কেলের জন্য সতর্কবার্তা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩বাভেরিয়ার ব্যাপার-স্যাপারই আলাদা, সে কথা জার্মানির সবাই জানে৷ রবিবার বাভেরিয়ার রাজ্য নির্বাচনে হলও তাই: খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী সিএসইউ দল শুধু জিতলই না, জিতল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে, ক্ষমতাসীন থাকাকালীন যেটা জার্মানিতে অন্য কোনো দলের পক্ষে – এবং অন্য কোনো প্রদেশে – প্রায় অসম্ভব৷ জার্মানরা এটাকেই বলে ‘বায়ারিশে ফ্যারহেল্টনিসে' বা ‘বাভেরিয়ার বিশেষত্ব'৷
২০০৮ সালে একবার সিএসইউ দল পা ফসকে তাদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় এবং মুক্ত গণতন্ত্রী এফডিপি-কে সঙ্গে নিয়ে জোট সরকার গঠন করতে বাধ্য হয়৷ এবার সে বালাই আবার চুকল৷ চুকল বলে চুকল! মাত্র তিন শতাংশ ভোট নিয়ে এফডিপি এবার বাভেরিয়ার বিধানসভা থেকেই বিদায় হল৷ সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দুই শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছে বটে, কিন্তু তাও দৃশ্যত সবুজদের অনেক ভোটার এসপিডি-কে ভোট দেওয়ার ফলে – যেমন বহু এফডিপি ভোটার সিএসইউ-কে ভোট দিয়েছেন৷ যাই হোক, সবুজদের হাঁড়ির হালের মানে তাদের নিয়ে এসপিডি-র জোট সরকার গঠনের স্বপ্নেরও এখানেই সলিলসমাধি৷
ভোট দিয়ে যা, আয় ভোটার আয়
সবচেয়ে মজার কথা: এবার কি পরিমাণ ভোটার ভোট দিতে যাবেন অথবা যাবেন না, তাই নিয়েই সব রাজনীতিক, ভাষ্যকারদের আশঙ্কা ছিল৷ কিন্তু দেখা গেল, ভোট দিতে গেছেন ৬৫ শতাংশ ভোটার, ২০০৮ সালের তুলনায় মোট সাত শতাংশ বেশি৷ ফলে উল্টে এখন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে: আগামী সপ্তাহান্তে সংসদীয় নির্বাচনে কি হবে – কেননা সিএসইউ-র বাভেরিয়ার গদি নিশ্চিত হবার পর এবার বার্লিনে যাতে ম্যার্কেলের শাসন কায়েম হয়, সে জন্য সিএসইউ-কে দ্বিতীয়বার উঁচু ভোটে জিততে হবে, যে জন্য ভোটারদের আবার পোলিং বুথে যেতে হবে, ইত্যাদি৷
আগামী সপ্তাহান্তে বাভেরিয়ার ভোটাররা আরো একটি নতুনত্ব দেখবেন: সদ্যসৃষ্ট ‘আল্টারনাটিভে ফ্যুর ডয়েচলান্ড' বা এএফডি দল বাভেরিয়ার রাজ্য নির্বাচনে অংশ না নিলেও, সংসদীয় নির্বাচনে উপস্থিত থাকছে৷ কাজেই বাভেরিয়ার ভোটাররা ইউরো-বিরোধী এই নতুন দলটিকে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন৷
সংসদীয় নির্বাচনের মাত্র এক সপ্তাহ আগে এফডিপি-কে বাভেরিয়ার বিধানসভা থেকে বিদায় নিতে হল৷ কাজেই বুন্ডেসটাগ নির্বাচনে এফডিপি-র একমাত্র আশা হল ভোটারদের সহানুভূতি, বলছেন পর্যবেক্ষকরা৷ জার্মান নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রথম ভোটটি কোনো একক প্রার্থীকে এবং দ্বিতীয় ভোটটি কোনো দলকে দেওয়া যায়৷ বাভেরিয়ায় সিএসইউ দলের প্রার্থীদের সরাসরি ভোটে জেতার সম্ভাবনা এতো বেশি যে, সিডিইউ-সিএসইউ শিবিরের অনেক ভোটারই হয়তো তাদের দ্বিতীয় ভোটটি এফডিপি-কে দিয়ে সেই পন্থায় কেন্দ্রে ম্যার্কেলের জোট সহযোগীকে বাঁচিয়ে রাখতে চাইবেন৷