বার্লিন প্রাচীর পতনের ২২ বছর পরও পিছিয়ে রয়েছে পূর্বাঞ্চল
১০ নভেম্বর ২০১১বার্লিন প্রাচীর পতনের পর ২২ বছর কেটে গেছে৷ বুধবারই সরকার এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যাতে দেখা যাচ্ছে যে অর্থনৈতিক কার্যকলাপের ক্ষেত্রে জার্মানির পূর্বাঞ্চল পশ্চিমের তুলনায় এখনো বেশ পিছিয়ে রয়েছে৷ তবে আশার কথা হলো, সাবেক পূর্ব জার্মানির ৫টি রাজ্য ধীরে হলেও ক্রমশঃ এগিয়ে চলেছে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হান্স-পেটার ফ্রিডরিশ এপ্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে পূবের জাতীয় গড় উৎপাদনের দিকে তাকালেই এই প্রবণতা দেখা যাবে৷ এখন তা পশ্চিমের প্রায় ৭৩ শতাংশের কাছাকাছি৷
আসলে পূবে শুরু থেকেই কিছু বিশেষ সমস্যা রয়ে গেছে, যার ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি যথেষ্ট দ্রুত হতে পারছে না৷ এর মধ্যে অনেকগুলি একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত৷ যেমন পূবে বেতনের হার পশ্চিমের তুলনায় কম৷ অবসর ভাতার ক্ষেত্রেও এই বৈষম্য চোখে পড়ে – গড় হিসেব অনুযায়ী যা পশ্চিমের ৮৯ শতাংশ৷ তবে পূবে বেকারত্বের হার বহুদিন পশ্চিমের তুলনায় অনেক বেশি ছিল৷ গত ১২ মাসে তা অনেক কমে গেছে৷ পুনরেকত্রীকরণের পর এই প্রথম পূবে বেকারদের সংখ্যা ১০ লক্ষের থেকে কমে গেছে৷ বর্তমানে সেখানে কর্মহীনদের সংখ্যা ৮৬০,৫০০৷ তাছাড়া গত ২০ বছরে মানুষের আয় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে বলে দাবি করেছেন জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রিডরিশ৷ বিকল্প জ্বালানির বিকাশের ক্ষেত্রে জার্মানির পূর্বাঞ্চল অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন৷
সরকার পূবের উন্নয়ন নিয়ে এমন উচ্ছ্বাস দেখালেও বিরোধীরা অভিযোগ করছে, যে সরকার ইচ্ছে করে দেশের পূর্বাঞ্চল সম্পর্কে অনেক কঠিন সত্য গোপন করে যাচ্ছে৷ যেমন সাবেক পূর্ব জার্মানির কমিউনিস্ট পার্টির উত্তরসুরি – আজকের বামপন্থী দল ‘ডি লিঙ্কে' দাবি করছে, যে গোটা ইউরোপে বেতনের হারের বিচারে জার্মানির পূর্বাঞ্চল সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে৷ সেখানে বেকারত্বের হার এখনো পশ্চিমের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ, অর্থাৎ ১০.২ শতাংশ বেশি৷
দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের পর পূবের তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় পশ্চিমে পাড়ি দিয়েছিল৷ নিজেদের এলাকায় উন্নয়নের সম্ভাবনার কোনো আশা তাদের মনে ছিল না৷ কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানির বেশিরভাগ কল-কারখানা বাজার অর্থনীতির কাঠামোর মধ্যে টিকে থাকতে পারে নি৷ ফলে সার্বিক উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক