বার্লিনে হাসিনা-ম্যার্কেল বৈঠক
২৬ অক্টোবর ২০১১সকাল থেকেই বার্লিন ছিল ধূসর৷ মনে হয় নি রোদ দেখা দেবে৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি যখন চ্যান্সেলর দপ্তরের চত্বরে এসে পৌঁছালো, তখন রোদ দেখা দিয়েছে বেশ কিছুটা৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল বেরিয়ে এলেন, শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানালেন৷ ক্যামেরার ক্লিক, ক্লিক, ক্লিক৷ শুভেচ্ছা বিনিময় হলো৷ তারপর সামরিক মর্যাদায় গার্ড অফ অনার৷ বেজে উঠলো বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সুর৷ দুই নেত্রী গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করলেন৷ ম্যার্কেল তাঁর অতিথিকে নিয়ে গেলেন ভিতরে৷
প্রায় দু'টোর দিকে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হলেন চ্যান্সেলার ম্যার্কেল এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ চ্যান্সেলার তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দু'দেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্কের কথা জোর দিয়ে বললেন৷ তাঁদের আলোচনায় নানা বিষয়ের সঙ্গে, বিশেষ করে সহযোগিতার দু'টি ক্ষেত্রের কথা জানালেন তিনি৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে ক্লিষ্ট বাংলাদেশ তা প্রশমিত করতে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতার কথা জানালেন চ্যান্সেলার৷ চ্যান্সেলার ম্যার্কেল মনে করেন, বাংলাদেশের বেশ ভাল প্রবৃদ্ধি ঘটছে এবং তা নিয়ে উন্নয়নের সঠিক পথেই চলেছে বাংলাদেশ৷ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন৷ বিশেষ করে দারিদ্র দূরীকরণে এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে শেখ হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের প্রশংসাও করেন চ্যান্সেলার ম্যার্কেল৷
প্রত্যুত্তরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে এবং স্বাধীনতার পর থেকে জার্মানি এবং জার্মান জনগণ যে সাহায্য-সহযোগিতা দিয়ে আসছে, তার উল্লেখ করেন৷ জ্ঞাপন করেন ধন্যবাদ৷ তিনি একথাও উল্লেখ করেন, যে ১৯৭৫ সালে যখন জাতির জনক বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হবার সময় তিনি এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যান৷ প্রথম আশ্রয় পান তাঁরা এই জার্মানিতেই৷ শেখ হাসিনা জানান, চ্যান্সেলার ম্যার্কেলকে তিনি বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং সে আমন্ত্রণ তিনি গ্রহণ করেছেন৷ চ্যান্সেলার ম্যার্কেল যথাশীঘ্র সেই সফর করবেন, এই তাঁর প্রত্যাশা৷ চ্যান্সেলার অবশ্য বলেন, তিনি কখন যাবেন তা এখন বলতে পারছেন না৷ তবে তিনি বাংলাদেশে যাবেন৷
শেখ হাসিনা প্রসঙ্গত এও উল্লেখ করেন, যে আগামী নভেম্বর মাসে জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন৷ বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন দুই নেত্রী৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন