বিবর্তনবাদ পড়ে সমালোচনা বা বর্জনের অনুরোধ
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩তিনি বলেছেন, ‘‘ডারউইনকে এখনও অনেকে মানতে চায় না৷ তাকে পড়ে আপনি রিফিউজ করতে পারেন, কিন্তু অনেকে বলছে বিবর্তনবাদ পড়বে না৷ বিবর্তনবাদ পড়ে তার ত্রুটি থাকলে সেটার সমালোচনা করুন৷
‘‘অনেকে এখনও বিশ্বাসই করে না যে, পৃথিবী ঘুরছে৷ আমরা ডিএনএ টেস্ট করবো, কিন্তু বিবর্তনবাদ পড়বো না! আমরা বলি, মানুষ আশরাফুল মাকলুকাত৷ ডারউইন আরেকটু এগিয়ে বলছেন, ‘অবশ্যই আশরাফুল মাকলুকাত নয়তো পৃথিবী ধ্বংস করার জন্য এত মুখিয়ে আছে কেন?' এটা আমরা এখন দেখছি, পরমাণু অস্ত্র নিয়ে৷”
বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘দোঁহার পূর্বাপর ও ইউসুফ মুহম্মদের দোঁহা' শীর্ষক সেমিনারে প্রশ্নোত্তরে পর্বে তিনি এসব কথা বলেন৷
শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ বলেন, ‘‘মানুষ নিজে যা চিন্তা করে তা নয়, অন্যে তাকে নিয়ে যা চিন্তা করে, সে তাই- এটা ফ্রয়েড বলেছেন৷ ফ্রয়েড, মার্ক্স, ডারউইনের মত লোকেরা জ্ঞান সৃষ্টি করেছেন৷ পেছনে তাকালে তাই দেখতে পাই৷ আমাদের মধ্যে এমন মানুষ জন্মেছেন, তাদের আমরা হয়ত এখনও চিনতে পারিনি৷
‘‘কবির, লালন ফকির এরাই আধুনিক৷ কিন্তু এদের বীজ আমরা মাটিতে পড়তে দিইনি৷ ইউরোপীয়রা মানুষের কল্যাণে যা করেছে, তার সবই আমরা নিব, তাদের আধুনিকতা আমরা নিব; তবে তাদের সবকিছুই ভালো, এমনটা নয়৷”
আরেক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ বলেন, ‘‘মুক্তিযুদ্ধের যে কারণ ছিল, সেটা আমরা দেখি না কোথাও৷ এখন মনে হয় সব যেন অলিক হয়েছে৷ কোনো একটা দেশ স্বাধীন হয়েছে কি না তার প্রমাণ, সেদেশের সব থেকে দুর্বল জনগোষ্ঠী কেমন আছে৷
‘‘আমরা যে এখন‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী' বলছি, তা তো মুক্তিযুদ্ধের কথা ছিল না৷ মুক্তিযুদ্ধ যে ব্যর্থ হয়েছে- তার প্রমাণ, সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষরা কেমন আছে? অনেকে বলবেন- কত উন্নয়ন হয়েছে, জিডিপি বেড়েছে, অনেক অবকাঠামো হয়েছে৷ কিন্তু ন্যূনতম মজুরি আর স্বাস্থ্যসেবার কী হল, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার কী হলো?”
প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘‘দরিদ্রতম কৃষকের যে দুরবস্থা ছিল ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে, তার কি গুণগত কোনো পরিবর্তন হয়েছে? শিক্ষা যে সবার কাছে নিতে পারিনি এর ব্যাখ্যা কী? ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের বাচ্চাদের বেতন মাসে ৩০ হাজার টাকা৷ পয়সা থাকলেই এখন শিক্ষা কেনা যাচ্ছে৷ শিক্ষা আর অধিকার নেই৷
‘‘এখনও জটিল রোগ হলে ভারতে ছুটতে হচ্ছে৷ যার পয়সা আছে, সে সিঙ্গাপুর যেতে পারছে, আমি পারছি না৷ অথচ শতকরা একশ ভাগ লোককে স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনার কথা ছিল৷ সেটা সম্ভবও ছিল৷ কত শতাংশ হয়েছে? হয়নি৷”
দুপুরলতা সাহিত্য পত্রিকা আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন কবি রিজোয়ান মাহমুদ৷ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হাটখোলা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা জিল্লুর রহমান৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)