মুজাহিদের রায় বুধবার
১৬ জুলাই ২০১৩মুজাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০১০ সালের ২৯শে জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায়৷ এরপর আগস্ট মাসে তাকে যুদ্ধাপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷ তার বিরুদ্ধে একাত্তরে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটতরাজসহ মানবতাবিরোধী সাত ধরণের অভিযোগ আনা হয়েছে৷ ট্রাইব্যুনাল ২-এ গত ৫ই মে এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হয়৷ বুধবার এই মামলার রায় দেয়ার কথা জানান ট্রাইব্যুনালের রেজিস্টার৷
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ডয়চে ভেলেকে জানান, মুজাহিদ একাত্তরে জামায়াতের তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি ছিলেন৷তার নেতৃত্বেই গঠন করা হয়েছিল আলবদর বাহিনী৷ আর এই আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন করে৷ আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে মুজাহিদ একটি বিশেষ জিপ গাড়িতে ঘুরে বেড়াতেন এবং গাড়িতে আলবদর লেখা ব্যানারও ছিল৷
মোখলেসুর রহমান বাদল বলেন, মুজাহিদ শুধু বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং গণহত্যার পরিকল্পনাকারীই ছিলেন না, তিনি নিজেও সরাসরি গুলি করে মানুষ হত্যা করেছেন৷ ফরিদপুর এলাকায় তার নৃশংসতার সাক্ষী এখনো আছে৷ একাত্তরে তিনি সেখানে হিন্দুস্তান দখলের পরিবর্তে হিন্দুদের বাড়ি-ঘর দখল করেন তার বাহিনী নিয়ে৷ এছাড়া সারা দেশে তার আলবদর বাহিনী হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজও করে৷ প্রসিকিউটর জানান, তারা আদালতে মুজাহিদের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন৷ তাই তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আশা করছেন মোখলেসুর রহমান বাদল৷
এদিকে জামায়াতে ইসলামী এই রায় ঘোষণার প্রতিবাদে বুধবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছে৷ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন যে, বিচারের নামে সরকার জুডিশিয়াল কিলিং-এর ষড়যন্ত্র করছে৷ প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে সাজা দেয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে সরকার৷
মুজাহিদের বিরুদ্ধে এই রায় হবে ট্রাইব্যুনালের ষষ্ঠ রায়৷ এর আগে ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সাবেক নেতা আবুল কালাম আযাদকে ফাঁসি, জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে ফাঁসি, মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসি এবং সর্বশেষ সোমবার গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে৷