ব্যাকস্টপের বিকল্প খুঁজতে জনসনকে এক মাস সময় ম্যার্কেলের
২২ আগস্ট ২০১৯ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হবার পর বরিস জনসন তাঁর প্রথম বিদেশ সফরের জন্য জার্মানিকেই বেছে নিয়েছিলেন৷ তাঁর নিজের শর্তে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানোর একমাত্র আশা ছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ব্রেক্সিট চুক্তির মধ্যে রদবদলের ক্ষীণ আশ্বাস আদায় করতে পারলেও তার বদলে কঠিন দায়িত্ব নিয়ে লন্ডনে ফিরতে হলো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে৷ আয়ারল্যান্ড সীমান্তে ‘ব্যাকস্টপ' ব্যবস্থা নিয়ে জনসনের ঘোর আপত্তির প্রেক্ষাপটে ম্যার্কেল তাঁকে ৩০ দিনের মধ্যে বিকল্প প্রস্তাব পেশ করার চ্যালেঞ্জ করেছেন৷
এমন অবস্থায় চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলে সেই ব্যর্থতার দায় ইউরোপের উপর চাপিয়ে দেওয়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর জন্য আরও কঠিন হয়ে পড়লো৷ ব্যাকস্টপের বদলে ‘কিছু একটা সমাধানসূত্র' উঠে আসবে বলে এতকাল দাবি করে আসছিলেন বরিস জনসন৷ কিন্তু তিনি এখনো এই মর্মে কোনো স্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত প্রস্তাব পেশ করেন নি৷ বৃহস্পতিবার তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেও এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় আদায় করতে পারবেন না, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ ম্যার্কেল ক্ষীণ আশ্বাস দিলেও মাক্রোঁ বুধবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে কোনোরকম আলোচনা সম্ভব নয়৷ চুক্তিহীন ব্রেক্সিট কার্যকর হলে সেই দায় সম্পূর্ণ ব্রিটেনকেই নিতে হবে, বলেন তিনি৷
ম্যার্কেল নিজেও ব্রেক্সিট চুক্তির মধ্যে রদবদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন৷ তবে বর্তমান অচলাবস্থা কাটাতে তিনি এই চুক্তি অনুমোদনের পর ব্যাকস্টপের বদলে আইরিশ সীমান্তে দ্রুত কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা চালু করার পক্ষে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটেনের বিচ্ছেদের পর দুই পক্ষের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক স্থির করার সময় এই প্রশ্নের মীমাংসা খোঁজার কথা ছিল৷ সেই সমাধানসূত্র এখনই পাওয়া গেলে কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিদের ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত আপত্তির আর কোনো কারণ থাকবে না, ম্যার্কেল এমনটাই আশা করছেন৷ তবে সেই দায় তিনি ব্রিটেনের উপরেই চাপিয়ে দিয়েছেন৷ ফলে জনসন ও কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিদের ব্যাকস্টপ-বিরোধিতার বদলে এবার গঠনমূলক প্রস্তাব পেশ করতে হবে৷
বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনার পর জনসন দেশে ফিরে ইইউ-বিরোধিতার বদলে গঠনমূলক সমাধানসূত্রের লক্ষ্যে সক্রিয় হয়ে উঠবেন, এমনটা ধরে নেওয়া কঠিন৷ আগামী ৩১শে অক্টোবরের মধ্যে ব্যাকস্টপ ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্য বিকল্প খুঁজে ইইউ-র সম্মতি আদায় করে সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করানো অত্যন্ত কঠিন কাজ৷ ব্রিটিশ সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করানোর পর ইইউ পার্লামেন্ট ও সদস্য দেশগুলিকেও সেই চুক্তি অনুমোদন করাতে হবে৷ তবেই চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানো সম্ভব হবে৷ অথবা ব্রিটিশ সরকারকে এই সময়সীমা আবার পেছানোর আবেদন করতে হবে৷ আগাম সংসদ নির্বাচন ও ব্রেক্সিট পুরোপুরি বাতিল করার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি)