ব্রাজিলের ফুটবলারদের মানসিক চাপ
৬ এপ্রিল ২০১৪একদিকে নিজের দেশের জনগণের প্রত্যাশার চাপ, অন্যদিকে গণমাধ্যম – এই চাপ কতটা কাটিয়ে উঠতে পারে ব্রাজিল, সেটাই এখন মুখ্য হয়ে উঠেছে৷ স্টেডিয়ামগুলোর নির্মাণ কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় ঘরে-বাইরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ব্রাজিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে৷
তবে আশার কথা হল, গত ১৪টি ম্যাচের মধ্যে ব্রাজিল হেরেছে মাত্র একটিতে৷ কনফেডারেশন্স কাপ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ব্রাজিলের ঝুলিতে মাত্র একটা পরাজয়৷ কনফেড কাপে বিশ্বজয়ী স্পেনকে ৩-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের হারানো আস্থা ফিরে পায় দলটি৷
তবে এখনো কিছু মানসিক বিষয় আছে, যেগুলো সামাল দিতে হবে খেলোয়াড়দের৷ ব্রাজিলে প্রথমবার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৫০ সালে৷ সেবার ফাইনালে হেরে যাওয়ার ব্যথাটা এখনো দুঃস্বপ্নের মত তাড়া করে তাদের৷ ব্রাজিলের কোচ লুইস ফেলিপে স্কোলারির কাছেও নিজ দেশে খেলাটাই একটা বড় চাপ বলে মনে হয়৷ প্রত্যাশার চাপটা সেখানে অনেক বেশি বলে মনে করেন তিনি৷ স্থানীয় ভক্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘নিজ দলকে সমর্থন দিয়ে যান, দলের সাথে থাকুন৷ আপনাদের উৎসাহ আমাদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে৷''
ক্রীড়া মনোবিজ্ঞানী জোসে আনিবাল মার্কুয়েজ বলেন, ‘‘পুরোনো খেলোয়াড়দের জন্য এই চাপ সামাল দেয়ার অভিজ্ঞতা থাকলেও তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য এটা সামল দেয়া কঠিন৷ আর বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা মানে নিজের পেশার সবচেয়ে উঁচু স্থানে আরোহণ করা, সেই সাথে কাঁধে একরাশ দায়িত্বের বোঝা৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘প্রতিটি দেশের খেলোয়াড়দের এই চাপ থাকে৷ তবে ব্রাজিলিয়ানদের জন্য ফুটবল আসলেই অন্য জিনিস৷ এটা এখানকার সংস্কৃতির একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷''
মার্কুয়েজের মতে, ‘‘খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে স্কোলারিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন৷'' নেইমারের মত কমবয়সি অনেক খেলোয়াড় রয়েছে, এবারের দলে যারা প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে খেলছে৷ নেইমারের বয়স মাত্র ২২ বছর৷
ব্রাজিলের ক্রীড়া মন্ত্রী আলডো রেবেলো সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘‘১৯৫৮ সালে ব্রাজিল প্রথমবার বিশ্বকাপ জয় করেছিল৷ কিন্তু এখনো যখন আমাদের ফুটবল ইতিহাসের কথা ভাবি, তখন প্রথমেই চলে আসে ১৯৫০'র সেই পরাজয়ের স্মৃতি, দুঃস্বপ্নের মত তাড়া করে ফেরে আমাদের৷ তাই আমাদের খেলোয়াড়দের মাথায় রাখা উচিত সেই দুঃস্বপ্ন যেন সত্যি না হয়৷''
এপিবি/এসবি (রয়টার্স)