ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল
২৯ মার্চ ২০১৭ইইউ-র লিসবন চুক্তির সনদ ৫০ অনুযায়ী কোনো সদস্য দেশ এই রাষ্ট্রজোট ত্যাগ করতে পারে৷ দেশের মধ্যে ব্রেক্সিট-কে ঘিরে নানা বিতর্ক এবং রাজনৈতিক ও আইনি জটিলতার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে অবশেষে সেই কাঠামোর আওতায় আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করলেন৷
অভূতপূর্ব এই ঘটনা এই দুই বছরে ঠিক কোনদিকে গড়াবে, তার পূর্বাভাষ দেওয়া কঠিন৷ ইইউ ব্রিটেনকে কোনোরকম ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়৷ ব্রাসেলস এমন এক দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চায়, যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করা বাকিদের জন্য মোটেই আকর্ষণীয় হবে না৷
নিয়ম অনুযায়ী দুই বছরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শেষ না হলে আলোচনার মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব, তবে তার জন্য ২৭টি সদস্য দেশের সম্মতি প্রয়োজন৷ আরেকটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি হলো, ব্রিটেন মেয়াদ অনুযায়ী দুই বছরের মাথায় ইইউ ত্যাগ করবে, কিন্তু ইইউ-র সঙ্গে ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের বিষয়ে এত দ্রুত কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না৷ সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংগঠন ডাব্লিউটিও-র নিয়ম অনুযায়ী দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য চলবে৷ ব্রিটেনে কিছু মহল এখনো ইইউ-তে থেকে যাবার আশাও করছে৷
ব্রেক্সিট ব্রিটেনের জন্য বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ জটিলতাও সৃষ্টি করতে পারে৷ স্কটল্যান্ড এর মধ্যেই ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য ত্যাগ করার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে৷ ব্রেক্সিট সংক্রান্ত আলোচনা শেষ হবার আগেই স্কটল্যান্ড এই প্রশ্নে দ্বিতীয় গণভোট আয়োজন করতে চায়৷ উল্লেখ্য, সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইইউ-তে থেকে যাবার পক্ষেই ভোট দিয়েছিলেন৷ অন্যদিকে উত্তর আয়ারল্যান্ড ও প্রতিবেশী আইরিশ প্রজাতন্ত্রের সীমান্ত নিয়েও দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে৷ ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তির অন্যতম ভিত্তি ছিল উন্মুক্ত এই সীমানা৷ ব্রিটেন ইইউ ত্যাগ করলে সেই সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে৷ এই প্রেক্ষাপটে দুই আয়ারল্যান্ডের পুনরেকত্রীকরণের দাবিও উঠতে শুরু করেছে৷ সে ক্ষেত্রে ব্রিটেন স্কটল্যান্ডের পাশাপাশি উত্তর আয়ারল্যান্ডকেও হারাতে পারে৷ ব্রিটেনের অর্থনীতি ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতির উপরেও এই প্রক্রিয়ার গভীর প্রভাব পড়তে চলেছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)