ব্রেক্সিটের পর ইইউ’র আয় কমবে
৩০ জুন ২০১৭ব্রিটেন বিদায় নেওয়ার পর ২০২১ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আয় কমবে প্রায় ১৭ শতাংশ৷ ইইউ'র বাজেটে এটি একটি বড় পরিবর্তন, যার মোকাবিলা করার পন্থা নিয়ে ওয়টিঙ্গার গত বুধবার ব্রাসেলসে একটি নথি পেশ করেন: তাঁর ‘রিফ্লেকশন পেপারে’ ইইউ বাজেটের দীর্ঘমেয়াদি বিকাশ নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়েছে৷ বর্তমানে ইইউ'র বাৎসরিক বাজেটের আয়তন হলো ১৫৮ বিলিয়ন ইউরো৷
লভ্য অর্থের উপযুক্ত ব্যবহার, ব্যয়সাশ্রয় ও সদস্যদেশগুলির কাছ থেকে বর্ধিত অনুদানের একটি মিশ্র পন্থা অবলম্বন করে সম্ভাব্য ঘাটতি পূরণ করতে হবে, বলেছেন ওয়টিঙ্গার৷ একদিকে জার্মানির মতো দেশ, যারা ইইউ'র কাছ থেকে যা পায়, তার চেয়ে বেশি অনুদান প্রদান করে থাকে – এই সব দেশের ভবিষ্যতে আরো বেশি অনুদান দিতে হতে পারে৷ অপরদিকে অবকাঠামো, বিনিয়োগ ও কৃষি সংক্রান্ত বাজেট কমানো হলে পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, রোমানিয়া, গ্রিস, হাঙ্গেরি বা স্পেনের মতো দেশ কম ভরতুকি পাবে৷ ‘‘এক্ষেত্রে সব সদস্য দেশের স্বার্থ যে এক নয়, তা স্পষ্ট,'' বলেন বাজেট কমিশনার ওয়টিঙ্গার৷ ‘‘কিন্তু আমাদের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, একটি চতুর আপোশ খুঁজে পেতে হবে৷ আমাদের ভারসাম্য রেখে চলতে হবে৷’’
কে বেশি দেবে, কে কম পাবে
নির্বাচনের বছরে জার্মানিতে ইতিমধ্যেই তা নিয়ে বিতর্ক চলেছে৷ সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের রাজনীতিক ও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল বহুদিন আগেই বলেছেন যে, জার্মানিকে ইউরোপের জন্য আরো বেশি অর্থদান করতে প্রস্তুত থাকতে হবে৷ অর্থমন্ত্রী ভল্ফগাং শয়েবলে কিন্তু এখনই তা নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ৷ আলাপ-আলোচনা আগে শুরু হোক – এই হলো তাঁর মনোভাব৷
অপরদিকে পোল্যান্ড বা হাঙ্গেরির মতো দেশের মুশকিল এই যে, একদিকে যেমন তারা ইইউ'র বাজেট থেকে প্রচুর অর্থ পেয়ে থাকে, অপরদিকে তেমন বিভিন্ন ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তাদের কাজিয়া৷ ‘আইনের শাসন' মেনে না চলার দায়ে এই দু'টি দেশের বরাদ্দ কমানোরও প্রস্তাব উঠেছে৷ গত মে মাসে জার্মান অর্থনীতিমন্ত্রী ব্রিগিটে সুইপ্রিস (এসপিডি) পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির প্রতি অবকাঠামো সংক্রান্ত সাহায্য কমানোর প্রস্তাব দেন৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ-ক্লোদ ইয়ুঙ্কার সঙ্গে সঙ্গে সে প্রস্তাব নাকচ করলেও, ওয়টিঙ্গার এবার বলেছেন: ‘‘সে প্রস্তাব এখনও বজায় আছে৷’’
গুড কন্ডাক্ট প্রাইজ?
ইইউ থেকে ভরতুকি পেতে গেলে ‘আইনের শাসন’ মেনে চলতে হবে– এ প্রস্তাব সম্পর্কে ওয়টিঙ্গারের বাজেট রিফ্লেকশন পেপারে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা মনস্থির করিনি, কিন্তু বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে৷’’ ইইউ-এর আঞ্চলিক নীতি কমিশনার করিনা ক্রেতু জানিয়েছেন, ২০২০ সাল অবধি বলবৎ চলতি বাজেটে সেরকম কোনো সূত্র না থাকলেও, ভবিষ্যতে তা বদলাতে পারে, ‘‘সংহতি মানে দেওয়া এবং নেওয়া,’’ বলেন ক্রেতু৷ যেসব দেশ ইটালি বা গ্রিস থেকে উদ্বাস্তু নিতে অস্বীকার করছে, তাদের প্রাপ্য কমানোর কথা তিনি এখনই ভাবতে পারেন৷ এক্ষেত্রে পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার বরাদ্দ কাটা যেতে পারে৷
গত সপ্তাহে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ পূর্ব ইউরোপের দেশগুলির বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে একটি ‘সুপারমার্কেট’ হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন৷
ব্যার্ন্ড রিগ্যার্ট ( ব্রাসেলস)/এসি