ব্লগার টিপু’র মৃত্যুতে গভীর শোক
২ ডিসেম্বর ২০১১টিপু কখনো সরাসরি তাঁর ব্লগে নিজের অসুখের কথা প্রকাশ করেননি৷ তবে ব্ল্যাডক্যান্সার বিষয়ক একটি নিবন্ধন লিখেছিলেন তিনি৷ সেটা ছ'মাস আগে৷ টিপু'র মৃত্যুর পর তাঁর ব্লগে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অসংখ্য ব্লগার৷
জনপ্রিয় কমিউনিটি বাংলা ব্লগ সামহয়্যার ইন ব্লগের প্রথম পাতায় টিপুর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রকাশ করা হয়েছে৷ ব্লগ কর্তৃপক্ষ সেখানে লিখেছে, ‘‘ব্লগার নোবেলবিজয়ী_টিপু এর অকাল প্রয়াণে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত৷ আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করছি এবং তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি''৷ এই ব্লগটির প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দা গুলশান ফেরদৌস জানা এই প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে বলেন, একটি পোস্টে টিপু বলেছেন, ‘‘খুব কাছের কেউ এই অসুখটিতে ভুগছে৷ আমি জানি সে আর বেশিদিন নেই৷ আসলে এটাই যে উনি, সেব্যাপারে আমরা কেউ নিশ্চিত ছিলাম না৷ তাঁর মৃত্যুর পরে জানা গেল এটাই ছিলেন টিপু''৷
টিপু'র ব্লগ নিক ‘নোবেলবিজয়ী_টিপু'৷ নামের সঙ্গে নোবেলবিজয়ী শব্দটি টিপু কেন জুড়ে দিয়েছিলেন, সুনির্দিষ্টভাবে তার কারণ জানা যায়নি৷ হয়ত মজা করার জন্যই এমন ব্লগ নিক বেছে নিয়েছিলেন তিনি৷ কিংবা বেঁচে থাকার সাহস জোগাতে এমনটা লিখে থাকতে পারেন টিপু৷ ব্লগ সাইট টেকটিউনসে রিজভী লিখেছেন, ‘‘২৫/১১/২০১১ইং থেকে ইসমাইল টিপু ব্লগারদের পাশাপাশি অনেকের কাছে এখন একটি পরিচিত মুখ৷ যে নামের আড়ালে লুকিয়ে ছিল কালো চাদরে ঢাকা ইতিহাস৷ সে ইতিহাস গোপন রাখতে চেয়েছে একান্ত নিজের করে৷ বিদায়ের আগ পর্যন্ত তা গোপন করেই রেখে গেছে''৷
টিপুর লেখনিতে বিদায়ের সুর অবশ্য কিছুটা হলেও ছিল৷ মৃত্যুর কিছুদিন আগে একটি মন্তব্যে টিপু লিখেছিলেন, ‘‘আমার হাতে বেশি সময় নেই, তিন চারদিনের মধ্যে... বিদায় নেব''৷ তিনি আরো লিখেছেন, ‘‘অনেক দূরের ভিসা হয়ে গেছে''৷ ব্লগার রিজভী তাঁর পোস্টে এই মন্তব্যের প্রতিচ্ছবি প্রকাশ করেছেন৷
ক্যান্সারের সঙ্গে টিপুর এই একান্ত লড়াইকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ব্লগার বাসন্ত বিষুব৷ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর ব্লগে তিনি লিখেছেন, ‘‘মৃত্যুর কাছে আমরা সবাই অসহায়, কিন্তু নিজের সেই অসহায়ত্ব প্রকাশ করেনি টিপু৷ তাই সে মহৎ৷ স্যালুট করি টিপুর মহত্বকে''৷
উল্লেখ্য, ব্লগার ইসমাইল টিপু একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন৷ মাত্র ২২ বছর বয়সে হারিয়ে গেলেন তিনি৷ আগামী ১১ই ডিসেম্বর তাঁর জন্মবার্ষিকী৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক