1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভবিষ্যতের কগনিটিভ কার তৈরির গবেষণায় জার্মানি

২১ নভেম্বর ২০১১

গাড়ির বাজারে একের পর এক নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসছে জার্মানি৷ দুর্ঘটনা ঠেকাতে নতুন অটোনোমাস কার তৈরির চেষ্টা করছে জার্মানির কার্লসরুয়ে ইন্সটিটিউটের গবেষকরা৷ এই গাড়ি চালক ছাড়াই নিজে থেকে চলবে৷

https://p.dw.com/p/13E85
Ein 3er-BMW steht am Freitag (14.10.2011) während der Präsentation des neuen 3er-BMW in München (Oberbayern) in der BMW-Welt. Feierlich präsentierte BMW die sechste Generation des 3er BMW. Foto: Andreas Gebert dpa/lby
আর কিছুদিন পর এসব গাড়ি হয়তো চালক ছাড়াই চলবেছবি: picture-alliance/dpa

রাস্তাঘাটে গাড়ি চালানোর ঝক্কি অনেক৷ স্টিয়ারিং হুইলে হাত, প্যাডেল ও ব্রেকের ওপর সবসময় দুই পা এবং সামনের দিকে সতর্ক দৃষ্টি৷ একটু এদিক সেদিক হলেই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে৷ জার্মানিতে প্রতি তিনটি দুর্ঘটনার একটি ঘটে চালকের অসতর্কতার জন্য৷ মানুষের মন সবসময় সতর্ক থাকতে পারে না৷ তাই গাড়ি চালনায় চালকের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা৷ তারা চান, মানুষ নয় গাড়িই চালাবে নিজেকে৷ এর ফলে মানুষ চালকের ওপর নির্ভরশীলতা যেমন কমবে তেমনি দুর্ঘটনার আশঙ্কাও আর থাকবে না৷

সেই কাজ করে যাচ্ছেন জার্মানির কার্লসরুয়ে ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি বা কেআইটির গবেষকরা৷ রাস্তার গাড়িকে স্বাবলম্বী করে তুলতে তারা গাড়ির প্রযুক্তিকে আরও অত্যাধুনিক করে তোলার চেষ্টা করছেন৷ একটি গাড়ি সহজেই বুঝতে পারবে তার অবস্থান কোথায়৷ কেবল নিজের অবস্থান নয় আশেপাশে থাকা সব গাড়িগুলোর অবস্থানও সে সহজে শনাক্ত করতে পারবে৷ গবেষকরা এর নাম দিয়েছেন ভবিষ্যতের কগনিটিভ কার৷

এই গবেষণাকর্মে যুক্ত রয়েছেন কেআইটির ক্রিস্টোভ স্টিলার৷ তিনি ব্যাখ্যা করলেন তাদের ভবিষ্যত গাড়ি কেমন হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘কগনিটিভ কার হচ্ছে এমন গাড়ি যেটা আশেপাশের অবস্থা দেখতে পারে, এবং যা দেখছে তা তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারে৷ সে ধরে ফেলতে কোন রাস্তা ধরে তার যাওয়া উচিত এবং সেভাবে গাড়ির যন্ত্রগুলোকে পরিচালিত করবে৷ এভাবে গাড়িটি কোন দুর্ঘটনা না ঘটিয়ে নিরাপদে অনেকক্ষণ চলতে পারে৷''

Lexus RX400 Quelle: http://www.auto-reporter.net/1380/2_1380_104_45005_1.php
ছবি: Lexus/Auto-Reporter.NET

কিন্তু মানুষ যেভাবে গাড়িকে পরিচালিত করে, একটি গাড়ি কীভাবে নিজেকে সেভাবে পরিচালিত করবে? এই কাজটি কিন্তু সহজ নয়৷ এজন্য একটি গাড়িকে যেমন সার্বক্ষণিকভাবে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে, তেমনি তাকে আশেপাশের গাড়িগুলোর সঙ্গেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে৷ তাহলেই কেবল কগনিটিভ কার রাস্তায় ঠিকঠাকভাবে চলতে পারবে৷ কেআইটির গবেষকরা নানা ধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে দেখছেন৷ তাদের একজন মার্টিন লাওয়ার৷ তিনি একটি নতুন সফটওয়্যার তৈরি করেছেন এবং সেটি বসিয়ে দিয়েছেন ছোট্ট একটি খেলনা গাড়িতে৷ শুরুতে খেলনা গাড়িটি বেশ কয়েকবার ভুল করলেও পরে দেখা গেলো সেটি ঠিকঠাক মত সঠিক রাস্তা দিয়েই চলছে৷

কিন্তু গাড়িটিকে তো রাস্তাও চিনতে হবে৷ এজন্য গবেষকরা তাদের পরীক্ষার গাড়িটিতে বসিয়েছেন ক্যামেরা এবং গাড়িটিতে করে একই পথ ধরে কয়েকবার আসা যাওয়া করেন৷ ক্যামেরাটি আশেপাশের সবকিছু থ্রিডি ছবির মাধ্যমে রেকর্ড করে রাখলো৷ এর উদ্দেশ্য, গাড়িটি যেন ওই রাস্তার প্রত্যেকটি কোণ চিনে রাখতে পারে এবং যে কোন পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷ কোন জায়গাটিতে থামতে হবে, কোন জায়গাটিতে পার্কিং করা হয় এইসব কিছু গাড়িটির ক্যামেরার থ্রিডি ছবির মাধ্যমে রেকর্ড হয়ে থাকলো৷ গাড়িটি সেন্সরের মাধ্যমে তার অবস্থানও চিহ্নিত করে রাখে৷

কেআইটির ক্রিস্টোভ স্টিলার বলেন, ‘‘এই পদ্ধতি ইতিমধ্যেই মানুষের চেয়ে দ্রুত কাজ করছে, কারণ এটি মিলিসেকেন্ডের মধ্যে আশেপাশের অবস্থা দেখে ফেলে৷ সাধারণত: মানুষের প্রতিক্রিয়া আসতে কিছুটা সময় লাগে, তাই এই গাড়ি আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই যখন মানুষের মতো পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা অর্জন করবে তখন এটি অত্যন্ত দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে৷''

গবেষকদের মতে, গাড়ির চালকের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বেলায় কিছুটা সময় লাগে, তাই রাস্তায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়৷ কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে রাস্তায় চলা গাড়িগুলো রেডিও সিগন্যালের মাধ্যমে একটি অপরটির সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং তৎক্ষণাৎ তারা সিদ্ধান্ত নেবে৷ ফলে গাড়িগুলো চলবে সুশৃঙ্খলভাবে এবং কোন যানজট তৈরি হবে না৷

তবে এই রেডিও সিগন্যালের পরীক্ষাতে কিছুটা সমস্যা দেখা গিয়েছে৷ পরীক্ষার সময় দেখা গেছে, দুটি গাড়ির মাঝখানে যদি কোন বড় ট্রাক চলে আসে তাহলে রেডিও সিগন্যাল যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটে৷ গবেষকরা জানিয়েছেন, সেই বাধা দূর করা যায় কীভাবে সেটি নিয়েও তারা এখন কাজ করছেন৷

প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান