ভাইয়ের কারণে বোনকে ধর্ষণের নির্দেশ
৩১ আগস্ট ২০১৫রবিবার কথিত দুই বোনের বিরুদ্ধে খাপ পঞ্চায়েতের নির্দেশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং পুরো বিষয়টির প্রতিকার দাবি করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ ইন্টারনেটে জানানো অ্যামনেস্টির এ আহ্বানে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ সাড়া দিয়েছে৷ গ্রাম্য সালিশের নামে নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর নির্দেশ দেয়া খাপ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আরো অনেক মানুষ সোচ্চার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
উত্তর প্রদেশের ভাগপাত জেলার এক অখ্যাত গ্রামের দুই মেয়েকে গত জুলাইয়ে ধর্ষণের নির্দেশ দেয়া হয় তাঁদের ভাইয়ের কারণে, শাস্তি হিসেবে৷ ভাইয়ের অপরাধ – দলিত, অর্থাৎ নিম্নবর্ণের হিন্দু হয়েও তিনি ‘উচ্চ' বর্ণের হিন্দু পরিবারের এক বিবাহিত নারীকে নিয়ে পালিয়েছেন৷ ভারতের গ্রামাঞ্চলে অলিখিত স্থানীয় প্রশাসন হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে খুব দাপটের সঙ্গেই কাজ করে খাপ পঞ্চায়েত৷ গ্রামের প্রবীণরাই মূলত খাপ পঞ্চায়েতে বিচারকের ভূমিকা পালন করেন৷ বিচারকরা প্রায় সব ক্ষেত্রেই উচ্চবর্ণের হিন্দুদের প্রতিনিধি৷ তাই বিচারের নামে মানবাধিকার, নারীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার মতো অভিযোগ খাপ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে প্রায়ই ওঠে৷
উত্তর প্রদেশের ভাগাপত জেলার অখ্যাত গ্রামটির দলিত শ্রেণির দুটি মেয়ে খাপ পঞ্চায়েতের এমনই এক বিচারের কারণে গ্রামছাড়া৷ গ্রামের এক তরুণ এক বিবাহিত নারীকে নিয়ে পালানোয় খাপ পঞ্চায়েত পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তির দুই বোনকে ধর্ষণ করে নগ্ন অবস্থায় সারা গ্রামে ঘোরানোর শাস্তি ঘোষণা করে৷ নিজেদের রক্ষা করতে মেয়ে দু'টি তখন গ্রাম থেকে পালায়৷ দুই বোনের মধ্যে ছোটজনের বয়স ১৫ এবং বড় বোনের বয়স ২৩ বছর৷ কয়েক দিন আগে তাঁদের পরিবারকে রক্ষা করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন বড় বোন৷ ওই মামলার কারণেই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি সবার নজরে আসে৷ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৫ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাদির অভিযোগ সম্পর্কে নিজেদের বক্তব্য জানানোর জন্য খাপ পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট৷
তবে ভাগপাত জেলার পুলিশ প্রধান শারদ সাচান দাবি করেছেন, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত করা হয়েছে, কিন্তু খাপ পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ধর্ষণের নির্দেশ দেওয়ার কোনো প্রমাণ তাঁরা পাননি৷ বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, ‘‘তদন্ত করে দেখা গেছে, উল্লেখিত বিষয়টি নিয়ে খাপ কোনো সভা করেনি এবং মেয়ে দু'টিকে ধর্ষণের কোনো নির্দেশও প্রদান করেনি৷''
এসিবি/ডিজি (এএফপি)