ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে চারটি চুক্তি সই
১২ নভেম্বর ২০১২ভারত সফরে এসে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এবং প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর মধ্যে প্রথমে এককভাবে, পরে প্রতিনিধি স্তরে আলোচনা হয়৷ আফগান প্রেসিডেন্টের ভারত সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল আফগানিস্তানে ভারতের বিনিয়োগ টানা এবং দুদেশের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা আরো গভীর করা৷ সই হয় চারটি চুক্তি৷ কয়লাসহ খনিজ সম্পদ আহরণ, ছোট ব্যবসায়িক প্রকল্প, যুব বিষয়ক এবং সার৷
আফগানিস্তান থেকে ধাপে ধাপে যৌথসেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে শক্ত ভিতে দাঁড় করাতে ভারতের সঙ্গে কৌশলগত অর্থনৈতিক সহযোগিতা মজবুত করতে কারজাই যে বদ্ধপরিকর, সেই বার্তাই দিয়ে গেলেন তিনি৷
আলোচনা শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ড. সিং সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল ও শক্তিশালী আফগানিস্তান গড়ে তোলার প্রতি ভারতের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, গত বছর স্বাক্ষরিত দুদেশের কৌশলগত সহযোগিতার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়৷ আলোচনা হয় আফগানিস্তানের আশপাশ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে৷
ভারত বিশ্বাস করে, আন্তর্জাতিক সমর্থন অব্যাহত থাকলে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে সন্ত্রাসী হামলাসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে আফগানিস্তান৷ অর্থনৈতিক সহযোগিতার অঙ্গ হিসেবে আফগানিস্তানে ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে কৃষি ও ছোট ব্যবসা, মাইনিং ও অবকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ওপর জোর দেয়া হয়, যা হবে উভয় দেশের জনগণের উন্নতির সোপান৷
উত্তরে আফগান প্রেসিডেন্ট কারজাই আফগানিস্তানের পুনর্গঠন ও উন্নয়নে ভারত যেভাবে নিরন্তর সাহায্য দিয়ে এসেছে তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমি ভারতে এসেছি ভারতীয় বাণিজ্য মহলকে বোঝাতে, যাতে তাঁরা যেন আফগানিস্তানে আরো বেশি বিনিয়োগ করেন৷ আফগানিস্তানে বিনিয়োগ পরিবেশ আগের চেয়ে অনেক ভালো৷ তাই বন্ধু দেশ বিশেষ করে ভারতের বিনিয়োগে আগ্রহী৷
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের পুনর্গঠন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভারত এখন পর্যন্ত ২০০ কোটি মার্কিন ডলার সাহায্য দিয়েছে৷ বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত আকরিক লোহা, পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস৷ চুক্তি সই হলে আকরিক লোহা আহরণে ভারত এক হাজার কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে৷ এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট কারজাই বলেন, পাকিস্তানের ভূখণ্ড দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা দিতে আফগান-পাকিস্তান বৈঠকে ভারতকে সামিল করা দরকার এবং সেই সম্ভাবনা এখন অনেক উজ্জ্বল৷