ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে 'রোল মডেল' বললেন হাসিনা
৭ সেপ্টেম্বর ২০২২মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, মোদী থাকলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। জানিয়েছিলেন, দুঃসময়ে ভারত কীরকমভাবে তাকে আশ্রয় দিয়েছিল। দিল্লি কীভাবে বাংলাদেশ যুদ্ধের সময় সেখানকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বুধবার শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে 'বেস্ট অফ রিলেশনস' অর্থাৎ অত্যন্ত সুসম্পর্ক আছে। এবং এটা 'রোল মডেল'। দুই দেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রতিনিধিদের বৈঠকে এই কথা বলেছেন শেখ হাসিনা।
অবশ্য তিনি এটাও জানিয়েছেন, ভারতীয় শিল্পপতিদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসতে হবে। শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, ২০২১-২১ সালে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৩৭০ মিলিয়ান ডলারেরও বেশি। কিন্তু তার মধ্যে ভারতীয় শিল্পপতিদের বিনিয়োগ ছিল প্রায় ১৬ মিলিয়ান ডলার।
হাসিনা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এখন ১০১টি স্পেশাল ইকলমিক জোন আছে এবং ২৮টি হাই টেক পার্ক আছে। ভারতীয় শিল্পপতিদের জন্য দুইটি ইকনমিক জোন আছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ২০৫০ সালে অ্যামেরিকা ও চীনের পর ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি ২০২১ থেকে ২৪-এর মধ্যে ভারতীয় অর্থনীতি সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়বে। মঙ্গলবারের পর বুধবারও ভারতের প্রশংসায় কোনো কার্পণ্য করেননি শেখ হাসিনা।
যৌথ ঘোষণাপত্র
বুধবার ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা তিস্তা চুক্তির কথা তুলেছিলেন। তিনি বলেছেন, ২০১১ সাল থেকে চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়ে পড়ে আছে। এই বিষয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া যৌথ ঘোষণাপত্রে নেই। সেখানে জানানো হয়েছে, ভারত ফেনী নদীর জলবন্টনের বিষয়টি তুলেছিল। বাংলাদেশ জানিয়েছে, তারা বিষয়টির সংজ্ঞান নিয়েছে।
সীমান্ত-হত্যা নিয়ে বলা হয়েছে, সীমান্ত-হত্যার সংখ্যা কম হওয়ায় দুই প্রধানমন্ত্রীই খুশি। তারা একমত যে, সংখ্যাটা শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। বেআইনি অস্ত্র, মাদক, জাল টাকা পাচার রুখতে হবে। সন্ত্রাসবাদ, সহিংসতা ও চরমপন্থার মোকাবিলায় দুই দেশকে হাত মিলিয়ে চলতে হবে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ভারতকে তাদের পেট্রোল, ডিজেলের চাহিদা মেটাবার অনুরোধ করেছে। ভারত জানিয়েছে, দুই দেশের তেল সংস্থা যাতে আলোচনায় বসে, সেটা নিশ্চিত করা হবে।
ভারত জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশ হয়ে মেঘালয় যাওয়ার সুযোগ করে দিতে। বাংলাদেশ জানিয়েছে, ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ডের মধ্যে যে ত্রিপক্ষীয় সড়ক প্রকল্পে আছে. তাতে তাদেরও সামিল করতে হবে। বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে দিয়ে ভুটান পর্যন্ত রেলসংযোগের অনুরোধও জানিয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে ভারত জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশ যেভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, তাতে ভারত ঢাকার প্রশংসা করেছে।
ঘোষণা থেকে স্পষ্ট, এই বিষয়গুলি নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো অগ্রগতি নেই।
জিএইচ/কেএম(শেখ হাসিনার ভাষণ, যৌথ ঘোষণাপত্র)