মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পর কী পেলেন হাসিনা?
৬ সেপ্টেম্বর ২০২২দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ বৈঠক হলো। বৈঠকের পর নরেন্দ্র মোদী ও শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন। দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা হলো। মোদী ও হাসিনা তাদের কথা বললেন। কিন্তু তিস্তা চুক্তি হলো না, সীমান্ত-হত্যা নিয়ে একটি কথাও কেউ বললেন না, রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল পাওয়ার ব্যাপারে কোনো কথাও হলো না। এমনকী সাতটি সমঝোতা হলেও বিশাল বড় কোনো ঘোষণা হলো না। সাধারণত, একজন প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের পর প্রাপ্তি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার শীর্ষ বৈঠকের পর প্রাপ্তির তালিকা খুঁজতে গিয়ে সমস্যায় পড়লেন সাংবাদিকরা।
মোদীর প্রশংসা
তবে দুই প্রধানমন্ত্রীই উজ্জীবিতভাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। শেখ হাসিনা তো প্রধানমন্ত্রী মোদীর মুক্তকণ্ঠে প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মোদী থাকলে সব সমস্যার সমাধান হবে। হাসিনার কথার সঙ্গে বিজেপির স্লোগান ‘মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’-এর অদ্ভুত মিল রয়েছে। হাসিনা এটাও জানিয়েছেন, মোদী হলেন ভিশনারি নেতা। ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্বের সম্পর্কের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদও দিয়েছেন।
কুশিয়ারার জলবণ্টন
শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, কুশিয়ারা নদীর জলবণ্টন নিয়ে সমঝোতায় সই হয়েছে। কিন্তু আরো ৫৪টি নদী আছে যা ভারত ও বাংলাদেশ দিয়ে বইছে। সেই সব নদীর জল নিয়েও সমঝোতা নিশ্চয়ই হবে। তিস্তা চুক্তিও হবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন। মোদীও ৫৪টি নদীর উল্লেখ করে বলেছেন এর সঙ্গে দুই দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা জড়িয়ে আছে। মোদী জানিয়েছেন, বন্যা সংক্রান্ত রিয়েল টাইম ডেটা বাংলাদেশকে সরবরাহ করা হবে।
সাত সমঝোতা
কুশিয়ারা নদীর জলবন্টন নিয়ে সমঝোতার পাশাপাশি বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণার ক্ষেত্রে সমঝোতা হয়েছে। ভোপালের ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমির সঙ্গে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সমঝোতা হয়েছে। রেলের কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং রেলে তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ প্রযুক্তি এবং প্রসার ভারতী ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।
পুরোনো কথা
শেখ হাসিনার কথায় আবেগ খুব বেশি ছিল। তিনি বলেন, ''আমি ছয় বছর ভারতে ছিলাম। যখন বাবা ও পরিবারের অন্যদের মারা হয়েছিল, তখন আমাকে ও আমার বোনকে আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। দুঃখের সময় ভারত পাশে থেকেছে।''
৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও ভারত পাশে থেকেছে। যার ফলে দুই দেশের মানুষ উপকৃত হয়েছেন।
মোদীর বক্তব্য
মোদী বলেছেন, বাংলাদেশ হলো ভারতের অন্যতম বড় বাণিজ্য সহযোগী। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কিত সব বিষয়ে বিস্তারে আলোচনা হয়েছে। শীঘ্রই দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সম্পদ বজায় রাখার ব্যাপারেও ভারত চেষ্টা করছে।