1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতীয়দের বেশি ব্যয় খাবারে

অনিল চট্টোপাধ্যায় নতুনদিল্লি
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মধ্যবিত্ত ভারতীয়রা গড়ে তাদের মাসিক আয়ের দুই-তৃতীয়াংশ ব্যয় করে খাদ্যসামগ্রীতে৷ গ্রামাঞ্চলে সেটা আরও বেশি৷ তবু দারিদ্র্য আর অপুষ্টি কমেনি৷

https://p.dw.com/p/2szfg
Indien Kolkata schwimmende Märkte
ছবি: DW/Prabhakar

ভারতের গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলের, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ভারতীয় পরিবারগুলি তাদের মাসিক রোজগারের ৮৪ শতাংশ খরচ করে খাবার-দাবারের মতো অত্যাবশ্যক ভোগ্যসামগ্রীতে৷ পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয়ের জাতীয় নমুনা সমীক্ষায় এই রকম ছবিই উঠে এসেছে৷ সমীক্ষা চালানো হয় গোটা ভারতের গ্রামাঞ্চলের ৭৪৬৯ টি গ্রামে এবং শহরাঞ্চলের ৫২৬৮টি ব্লকে৷ গ্রামের লোকেরা খাবার-দাবারে আয়ের সিংহভাগ খরচ করে৷ অন্যান্য ক্ষেত্রম যেমন, জ্বালানি বা বিদ্যুতের জন্য খরচ করে থাকে আট শতাংশ, জামা কাপড় ও জুতোর জন্য সাত শতাংশ, চিকিত্সায় ৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং শিক্ষায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশ৷ তবু মাথা পিছু গড় ক্যালোরি, প্রোটিন, ফ্যাট বিশ্বের মধ্যে ভারত সবথেকে কমের তালিকায় পড়ে৷ এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও ইন্দোনেশিয়া থেকেও কম, বলেছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা৷

সরকার ভরতুকি দামে খাদ্যশস্য সরবরাহ বাড়িয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷ কিন্তু তারপরও  পুষ্টিমাত্রা বাড়ানো এখনও চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে৷ মাথাপিছু খাদ্যের জোগানের হিসেবটা হয় খাদ্যশস্য উত্পাদনের পরিমাণ তারসঙ্গে যোগ করা হয় আমদানি, বিয়োগ করা হয় রপ্তানি৷ তারপর সেই অঙ্কটা ভাগ করা হয় দেশের জনসংখ্যা দিয়ে৷ সেটাই ভারতের খাদ্য সরবরাহের পরিস্থিতি৷ মাথাপিছু খাদ্যের জোগান দেশের দারিদ্রের প্রতিফলন৷ তবে হ্যাঁ, বিশ্ব ব্যাংকের অভিমত, ভারত দারিদ্র্য দূরীকরনে এক বড় ভূমিকা নিয়েছে৷ ২০১১-১২ সালে ভারতের ১৬ কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার ওপরে উঠেছে৷ যদি সাধারণ মানুষের হাতে যথেষ্ট টাকা-পয়সা থাকতো, তাহলে মাথাপিছু খাদ্যের জোগান আরও বাড়তো৷ উদ্বৃত্ত মজুত ভান্ডার থাকতো না, বলেছেন জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ইকোনমিক স্টাডিজ অ্যান্ড প্ল্যানিং শাখার অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ধর৷ মজুত খাদ্যশস্যের অপচয় সরবরাহের অপ্রতুলতার জন্য আংশিক দায়ী৷ ২০১৫-১৬ সালে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার হিসেবে দেখানো হয় তিন হাজার টন খাদ্যশস্য নষ্ট হয়েছে৷ তার আগের বছরে হয়েছিল ১৯ হাজার টন৷ এর বিহিত করা একটা দীর্ঘকালীন চ্যালেঞ্জ হলেও সরকার স্বল্পকালীন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন, যাতে মাথাপিছু প্রোটিনযুক্ত দানা শস্য, চিনি তেল ইত্যাদি সরবরাহ করা যায়৷

তাই নয়, বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেও ভোগ্য পণ্য তথা জীবন ধারণের ব্যয়ে তারতম্য লক্ষ্য করা গেছে৷ যেমন, শহর ও গ্রামাঞ্চলে এই ব্যবধানের কারণ মুসলিমরা ভারতীয় সমাজে অপেক্ষাকৃত গরিব৷ তাঁরা খাদ্য সামগ্রীতে খরচ করে আয়ের তুলনায় বেশি৷ পল্লি এলাকায় হিন্দুরা যেখানে ব্যয় করে মাসে ১৭৫৭ টাকা মুসলিমরা ব্যয় করে গড়ে ১৭৬৫ টাকা৷ শহরাঞ্চলে হিন্দুরা যেখানে গড়ে খরচ করে মাসে ২৯৩৫ টাকা, মুসলিমরা করে ২৩৫৫ টাকা৷ পাশাপাশি খ্রিস্টানরা করে গ্রামাঞ্চলে এবং শহরাঞ্চলে যথাক্রমে গড়ে মাসিক ২২০০টাকা এবং ৩২৪২ টাকা৷

আমরা জানি, ভারতীয় সমাজে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বেশি৷ খাবার-দাবারের ক্ষেত্রে ছবিটা কিন্তু ঠিক উল্টো৷ আয়ের চেয়ে ধনীরা  খাদ্য সামগ্রীতে তুলনামূলকভাবেমাসে খরচ করে কম৷ বিলাসবহুল ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে অবশ্য অসাম্যটা অনেক বেশি প্রকট৷ খাবার-দাবারের ক্ষেত্রে কেন নয়? প্রশ্নটা উঠতেই পারে৷ ধরা যাক, একজন মানুষ কতটা খেতে পারে? সেই পরিমাণের একটা সীমা আছে৷ শহরাঞ্চলে ধনীদের সংখ্যা যদি পাঁচ শতাংশ হয়, তাহলে ফলফলাদি খাওয়ার পরিমাণকে উদাহরণের একটা নমুনা হিসেবে সমীক্ষায় তুলে ধরে বলা হয়, একজন ধনী মাসে ১৫টা কলা, মাসে আধা কিলো আম, একটা ডাব বা নারকেল, ৭০০ গ্রাম আপেল এবং দুশ' গ্রাম আঙুর খেয়ে থাকে৷ তরল পানীয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে৷ ভারতের পাবলিক মনে করে, প্রোটিন এবং ক্যালরির মাত্রা কম হলেও ভারতীয়রা চর্বিজাতীয় খাবার বেশি খায় বলে স্থুলত্ব বেশি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য