কংগ্রেসের বৈঠক
৯ নভেম্বর ২০১২২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করতে কংগ্রেসের তরফে যে বিশেষ সংলাপ বৈঠক আজ ডাকা হয় দিল্লির কাছে সুরজকুন্ডে, তাতে যোগ দেন দলের ৩৫জন নেতা-কর্মী এবং মনমোহন সিং সরকারের ৩৫ জন মন্ত্রী৷ এই সংলাপ বৈঠক এমন একটা সময়ে ডাকা হয়, যখন কংগ্রেস-নেতৃত্বাধীন সরকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নানা দিক থেকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে৷
কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ২০০৯ সালের কংগ্রেসের নির্বাচনী ইশতাহারে যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল, তার কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে এবং কতটা হয়নি, তা খতিয়ে দেখে অসম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে বলেন দল ও সরকারকে৷ এ ক্ষেত্রে দল ও সরকারের মধ্যে আরো সমন্বয়ের ওপর জোর দেন তিনি৷
সোনিয়া গান্ধী তাঁর বক্তব্যে বলেন, আর্থিক মন্দার জন্য কিছু কড়া পদক্ষেপ নিতে হয়েছে সরকারকে, যার জন্য সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয়েছে৷ যেমন, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, বিমা ও পেনশনে বিদেশি বিনিয়োগ ইত্যাদি৷ এ নিয়ে দলের মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছে৷ কিন্তু কেন নিতে হয়েছে, তা আমজনতাকে বোঝাতে দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি৷ এই প্রেক্ষিতে সোনিয়া গান্ধী সতর্ক করে দিয়ে বলেন, তাঁর ভাষায়, সরকারের বিরোধী শক্তি যেন-তেন প্রকারেণ ক্ষমতা দখল করতে চাইছে৷ তাদের কাছে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা দুর্বল হলেও কিছু যায় আসেনা৷
পাশাপাশি সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়৷ বিভিন্ন রাজ্যে শরিক ও বন্ধু দলগুলির সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ এবং দলের সাংগঠনিক কাঠামো আরো মজবুত করার কথাও ওঠে৷ এ ক্ষেত্রে কংগ্রেসের অঘোষিত ২ নং ব্যক্তি রাহুল গান্ধীকে আরো বড় দায়িত্ব দেয়া হতে পারে৷
রাহুল গান্ধী তাঁর বক্তব্যে গরিব মানুষদের জন্য ১০০ দিনের কাজ, খাদ্য সুরক্ষা প্রভৃতির মত বিভিন্ন সামাজিক কল্যাণ প্রকল্প রূপায়ণের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন৷ গত নির্বাচনের ইশতাহারের অনেক সামাজিক প্রকল্প এখনো দিনের আলো দেখেনি৷
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতার মতে, জোট সরকারের বাধ্যবাধকতার জন্য অনেক প্রকল্পের কাজ আটকে আছে৷ তবে গত ৯ বছরে মনমোহন সিং সরকারের সামগ্রিক সাফল্য প্রশংসাযোগ্য৷
কংগ্রেস সূত্রে বলা হয়, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধী দলের আক্রমণ প্রতিহত করার এবং দুর্নীতি ইস্যুতে বিজেপিকে কীভাবে পাল্টা আঘাত হানা যায়, তার রাজনৈতিক রণকৌশল নিয়ে আজকের সংলাপ বৈঠকে মত বিনিময় হয় সরকার ও দলের মধ্যে৷ চিন্তন বৈঠক নামে সংলাপ বৈঠকের দ্বিতীয় পর্ব বসবে আগামী জানুয়ারিতে রাজস্থানে৷
এই বৈঠক চলে আজ সারাদিন৷ একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ছাড়া সোনিয়া, রাহুল থেকে নিয়ে আর সবাই সুরজকুন্ডে যান বাসে করে৷ বৈঠকে সংবাদ মাধ্যমের প্রবেশ ছিল বারণ ৷