বিমান পরিবহণ
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১২আর্থিক সংস্কার তথা পুনরুজ্জীবনে মনমোহন সিং সরকার এক পা এগোলে দু'পা পিছিয়ে আসে৷ দেশে বিদেশে প্রধানমন্ত্রীকে পড়তে হয় সমালোচনার মুখে৷ সিদ্ধান্তহীনতার ভাবমূর্তি ঝেড়ে ফেলতে কংগ্রেস-জোট সরকার ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর পরই বেসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের দরজা খুলে দিতে চলেছে৷
শুত্রবার নতুনদিল্লিতে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভার বৈঠকে এবিষয়ে আলোচনা হয়৷ আলোচনা হয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বিলগ্নীকরণ নিয়ে৷ আর্থিক দিক থেকে কিংফিশারের মতো অভ্যন্তরীণ বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলির বেহাল দশা৷ তা কাটিয়ে ওঠার জন্য তারা বিদেশি বিনিয়োগের অনুমতি দিতে সরকারকে চাপ দিয়ে আসছে৷
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রতন খাসনবিশ ডয়চে ভেলেকে সে কথাটাই বললেন, ভারতে রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ার ইন্ডিয়াসহ যতগুলি বিমান সংস্থা আছে প্রত্যেকটারই অবস্থা বেশ খারাপ৷ কোনোটাই এখনকার পরিস্থিতিতে ঠিকমত চলতে পারছে না৷ কিছুদিন আগে কিংফিশার ঋণের বোঝা নামাতে বিদেশ থেকে টাকা ধার করার অনুমতি চেয়েছিল সরকারের কাছে৷ কাজেই এইসব কোম্পানিগুলি নিজেরাই চাইছে বিদেশি বিনিয়োগ৷
সরকারের খসড়া প্রস্তাবে বর্তমান নীতিমালা সংশোধন করে ভারতের অভ্যন্তরীণ বেসরকারি বিমান সংস্থায় ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ারে বিনিয়োগ করতে পারবে বিদেশি বিমান সংস্থাগুলি৷ তবে কোম্পানি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং দুই-তৃতীয়াংশ বোর্ড সদস্য থাকবেন ভারতীয়৷ আগের নিয়ম অনুসারে, বিমান পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন বিদেশি কোম্পানিই ভারতের বেসরকারি বিমান কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারতো৷
বিনিয়োগের দরজা খুলে দিলে কেমন সাড়া পাওয়া যাবে ? সে প্রসঙ্গে অধ্যাপক খাসনবিশ মনে করেন, বিদেশি বিমান সংস্থাগুলি সাড়া দেবে৷ ভারতে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক এভিয়েশন মার্কেট ভালোই গড়ে উঠেছে৷ গত ২০ বছরে ভারতের উচ্চবিত্তের হাতে টাকা এসেছে, যাতায়াতের চাহিদা বেড়েছে৷ দ্বিতীয়ত, বিদেশি বিমান সংস্থাগুলি এলে একটা কম্পিটিশন তৈরি হবে, তাতে ভাড়া বা পরিষেবার দিক থেকে লাভবান হবেন যাত্রিরা, বাড়বে বিমান যোগাযোগ৷
ভারতের শিল্পমহল মনে করে ভারতীয় বাজারের হালহকিকৎ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এমন সব বিমান সংস্থা প্রথমে ঢুকতে চাইবে৷ যেমন কাতার এয়ারওয়েজ বা এমিরেটস এয়ারলাইন্সের মতো মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থাগুলো৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: জাহিদুল হক