ভারতের সংসদ ভবনে শুধুই নিরামিষ!
১৫ জানুয়ারি ২০২০সংসদেও খাদ্যে কোপ মারবে সরকার?সংসদের মেনু থেকে মাছ, মাংস বা আমিষ খাবার বাদ পড়তে চলেছে, মিলবে শুধুমাত্র নিরামিষ খাবার৷ সংসদ ভবনে সেন্ট্রাল হল-সহ আরও কয়েকটি ক্যান্টিনে পরিবর্তন আনার কথা বলেছিল সরকার৷ খুব শীঘ্রই খাদ্য তালিকায় আমূল পরিবর্তন আনতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার৷ সংসদ সূত্রের খবর, তুলে দেওয়া হবে খাবারে সমস্ত ভর্তুকি৷ ভারতীয় রেলের নিজস্ব সংস্থা আইআরসিটিসি-কে সরিয়ে দেওয়া হবে৷ পরিবর্তে সংসদ ভবনে খাদ্য সরবরাহের দায়িত্বে আনা হতে পারে বেসরকারি সংস্থা হলদিরাম বা বিকানের ভুজিয়াওয়ালা-র মতো সংস্থাদের৷ ‘না লাভ, না লোকসান'নীতিতে ক্যান্টিন চালাবে তারা৷ এতে নাকি সরকারের কোষাগারে বছরে ১৭ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে৷
দীর্ঘদিন ধরে দেশের সংসদ ভবনে খাদ্য সরবরাহের দায়িত্ব সামলাচ্ছে আইআরসিটিসি৷ এটি রেলের সংস্থা৷ লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরা বিশ্রাম নেওয়া বা অন্য কারণে যেখানে বসেন সেটি সেন্ট্রাল হল৷ এই সেন্ট্রাল হল-সহ আও কিছু জায়গায় ক্যান্টিন রয়েছে৷ রিসেপশন বিল্ডিংয়েও রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হয়৷ সাধারণত অন্য ক্যান্টিন গুলির মেনু বেশ সাদামাটা৷ তবে, সেন্ট্রাল হলে মিলত আমিষ, নিরামিষ জাতীয় যাবতীয় ভালো খাবার৷ সবটাই মিলত ভর্তুকিযুক্ত মূল্যে৷
এদিকে, সংসদে স্বল্পমূলের খাবার নিয়ে দেশজুড়ে হইচই হয়েছে বিস্তর৷ যার জেরে কিছুদিন আগেই ভর্তুকি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ সর্বদলীয় বৈঠকে আগেই সেকথা জানিয়েছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা৷ এবার শোনা যাচ্ছে, সংসদ ভবন থেকে তুলে নেওয়া হবে আমিষ খাবারও!স্বভাবতই শুরু হয়েছে বিতর্ক৷ এই খবরে বেজায় চটেছেন সাংসদদের একাংশ৷
রাজ্যসভার নির্দল সাংসদ ঋতব্রত ব্যানার্জি বললেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না সংসদের সেন্ট্রাল হলে বসেই আমাদের পূর্বপুরুষরা দেশের সংবিধান রচনা করেছিলেন৷ সংবিধানে নিজের রুচি অনুযায়ী খাওয়া, পরার অধিকার দেওয়া রয়েছে৷ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই সিদ্ধান্তে একদিকে সরকারি সংস্থার হাত থেকে বরাত কেড়ে নিয়ে বেনিয়া গোষ্ঠীর হাতে দেওয়ার অভিষন্ধি রয়েছে৷ অন্যদিকে, খাবারের রুচি জোর করে চাপিয়ে দিয়ে মানুষের সাংবিধানিক অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চাইছে মোদী সরকার৷''বিরোধীদের পাশাপাশি শাসক দল বিজেপির সাংসদরাও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন৷ বাংলা থেকে মনোনীত রাজ্যসভার এক বিজেপি সাংসদের প্রশ্ন, যে নতুন দুটি সংস্থার কথা শুনছি, তারা কেউই আমিষ খাবার তৈরি বা সরবরাহ করে না৷ তাহলে কি শাকাহারী হয়ে যেতে হবে?
তৃণণূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘শুধু হিন্দিতে কথা বলতে হবে৷ একমাত্র রামের পুজো করতে হবে৷ নিরামিষ খাবারই খেতে হবে৷ দেশবাসী ও সাংসদদের জন্য এমনই মত সব নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহর৷''
যদিও এমনিতে আইআরসিটিসি খাবার নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে সাংসদদের৷ বিশেষত খাবারের গুণ, মান ও পরিমাণ নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকেন সাংসদরা৷ বেশ কিছুদিন ধরেই সংস্থা পরিবর্তন করার কথা ভাবছিল সরকার৷ যদিও এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত সরকারি কোনও ঘোষণা হয়নি৷তবে, যেকোনো সময় সংসদের ফুড প্যানেলের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা৷