1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভুল স্বীকার সিপিএমের

৮ জুলাই ২০২১

ভুল স্বীকার করল সিপিএম। তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণের ক্ষেত্রে।

https://p.dw.com/p/3wCXa
ব্রিগেড ভরাতে পরেছিল সিপিএম তথা বামের। কিন্তু একটা আসনেও জিততে পারেনি। ছবি: Sandip Saha/Pacific Press/picture alliance

সিপিএমের বিশেষত্ব হলো, তারা মাঝেমধ্যেই গুরুতর রাজনৈতিক ভুল করে। পরে পর্যালোচনা করে সেই ভুল স্বীকার করে। তারপর আবার ভুল করে। এর আগে নেতাজির মূল্যায়নে তারা ভুল করেছে, জ্যোতিবাবুকে প্রধানমন্ত্রী হতে না দিয়ে 'ঐতিহাসিক ভুল' করেছে, পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের শাসন শেষ হওয়ার পর অনেক খামতি ও ভুলের কথা  তারা স্বীকার করেছে। এবার রাজ্যের মানুষ তাদের শূন্য হাতে ফিরিয়েছে। তারপর রাজ্যে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র স্বীকার করেছেন, তৃণমূলকে বিজেমূল বলা, তাদের জনকল্যাণমুখি কর্মসূচির বিরোধিতা করা ভুল হয়েছিল।

বিজেমূল  মানে হলো, বিজেপি ও তৃণমূল একসঙ্গে, অর্থাৎ, বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে ভিতরে ভিতরে আঁতাত আছে। বিজেপি-র সঙ্গে ঘনিষ্টতা বোঝাতে এই বিজেমূল শব্দটি ভোটের আগে ব্যবহার করতে শুরু করে সিপিএম। তা নিয়ে প্যারোডি করা হয়। সামাজিক মাধ্যমে তা ঘুরতে থাকে। তাতেই সিপিএম নেতাদের মুখ উজ্জ্বল হয়। কিন্তু তারা এতদিনে বুঝতে পারলেন, তাদের ভাবনায় ভুল ছিল।

সূর্যকান্ত মিশ্র বুধবার সামাজিক মাধ্যমে সিপিএম কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতা দিয়েছেন। সেখানেই তিনি মেনে নিয়েছেন দলের ভুলের কথা। তিনি যা বলেছেন তার মোদ্দা কথা হলো, তৃণমূলকে বিজেমূল বলা যেমন ঠিক হয়নি, তেমনই ভোটের আগে 'দিদিকে বল', 'দুয়ারে সরকার'-এর মতো বেশ কিছু প্রকল্প চালু করেছিলেন মমতা। সিপিএম তারও ভরপুর সমালোচনা করেছিল। বিদ্রুপ করেছিল। এখন সূর্যকান্তের উপলব্ধি, সেসব ভুল হয়েছিল। হুইলচেয়ারে বসা মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়েও তারা নানারকম কথা বলেছেন, সেগুলোও ঠিক হয়নি।

সূর্যকান্ত বলেছেন, তারা প্রচুর চিঠি পাচ্ছেন। অনেক চিঠিতে কুৎসিত গালাগালিও থাকছে। কিন্তু সেসব কিছুই ফেলে দিচ্ছেন না।

ঘটনা হলো, আজ বিধানসভায় সিপিএমের আসন শূন্য। প্রভাব কমতে কমতে তারা এখন  এই জায়গায় এসে পৌঁছেছে। এখন ভুলস্বীকার করছে তারা। কিন্তু বারবার তো সেই ভুলের ফাঁদেই জড়িয়ে পড়ছে সিপিএম! প্রবীণ সাংবাদিক ও সাবেক সিপিএম হোলটাইমার আশিস গুপ্ত মনে করেন, ''এই ভুল তো আজকের নয়। ২০০৬ সালে বিপুল ভোটে জিতে আসার পর যাদের সাম্রাজ্য  ২০১১ সালে তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায়, যারা নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুরের আন্দোলনের চরিত্র বুঝতে পারে না, তাদের সঙ্গে তো অনেকদিনই সাধারণ মানুষের যোগ ছিন্ন হয়ে গেছে।''

আশিসের মতে, আগে তারা সব বাড়ি বড়ি গিয়ে ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সা চাঁদা নিতেন। চাঁদা নেয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভাবনা জানা যেত, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হতো। সেসব অনেকদিন বন্ধ হয়ে গেছে। পার্টির কর্মীরা আর মানুষের কাছে যান না। তিনি মনে করেন, কিছু ছাত্রছাত্রী পার্টির প্রতি আকর্ষিত হচ্ছে, হবেও। কিন্তু তাদের দিয়ে গ্রামে গঞ্জে পার্টিকে দাঁড় করানো সম্ভব নয়। তারা শহরের দিকে কাজ করতে পারে। আর মানুষের সঙ্গে থেকে রাজ্য জুড়ে কাজ করে ভুল না করে পার্টিকে দাঁড় করনোর কাজটা এখন খুবই কঠিন।

জিএইচ/এসজি(আনন্দবাজার)