মতভিন্নতা সত্ত্বেও এক থাকার ঘোষণা
২৮ এপ্রিল ২০১৮ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর পর এবার জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ওয়াশিংটন সফর করলেন৷ মূলত ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বহাল রাখা, এবং ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনাই এ সব সফরের মূল লক্ষ্য৷
হোয়াইট হাউজে ম্যার্কেল
এ মেয়াদে জার্মান চ্যান্সেলর নির্বাচিত হবার পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর করলেন ম্যার্কেল৷ আগেরবার গেল মার্চে যখন তিনি সেদেশে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, তখন মিডিয়ার সামনেই করমর্দন করতে অস্বীকৃতি জানান ট্রাম্প৷ তাতেই দুই দেশের মধ্যে শীতল সম্পর্ক বুঝতে কারো বাকি থাকে না৷
কিন্তু এবার ট্রাম্প ভিন্ন আচরণ করলেন৷ শুধু করমর্দনই করেননি, ম্যার্কেলের গালে চুমুও খেয়েছেন৷
শুক্রবার তাঁর এই উষ্ণ অভিবাদনের অংশ হিসেবে তিনি ম্যার্কেলকে ‘অসাধারণ নারী' হিসেবে আখ্যায়িত করলেন৷
তারপরও এই সফর কতটা কার্যকর হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে৷ বলা হচ্ছে, ইরান প্রসঙ্গ ও মার্কিন মুল্লুকে পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক নিয়ে আলোচনা খুব একটা অগ্রগতি হয়নি৷
আলোচনায় কী ছিল?
ইরান প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘‘এই খুনি শাসকদের কাছে যেন পারমাণবিক অস্ত্র না থাকে তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে৷''
ম্যার্কেল বলেন, ‘‘২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে যে চুক্তি করা হয়েছিল তা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব কমানোর প্রথম পদক্ষেপ৷ তবে এটাও ঠিক যে, ইরানের উচ্চাকাঙ্খায় সীমা নির্ধারণ করতে এই উদ্যোগ যথেষ্ট নয়৷''
এর আগে আসছে ১২ মে'র মধ্যে চুক্তিতে ‘গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন' আনলে ট্রাম্প তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন৷ ম্যার্কেল ও মাক্রোঁ চান চুক্তি বাতিল না হোক৷
বাণিজ্য ঘাটতি বিষয়ে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানির ওপর সে দেশ যে কর বসিয়েছে, তা থেকে ইউরোপকে আপাতত অব্যাহতি দেয়া হয়েছে৷ এই অব্যাহতির সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে৷ তবে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে এখনো সম্মতি দেয়নি৷
গত মাসেই ইস্পাতের ওপর ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়, যা ইউরোপকে মওকুফের সময়সীমা আগামী পয়লা মে শেষ হবে৷ ট্রাম্প ইইউ'র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টি মনে করিয়ে দেন৷
মার্কিন প্রেসিডন্ট জার্মানির কথা সরাসরি না উল্লেখ করলেও প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ ভাগ নির্ধারণ করতে ন্যাটো'র সদস্যরাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানান৷ উত্তর কোরিয়ার ওপর সর্বোচ্চ চাপ অব্যাহত রাখায় ম্যার্কেলকে ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প৷ কোরীয় উপদ্বীপে চলমান শান্তি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র কোনো হস্তক্ষেপ করবে না বলে দাবি করেন তিনি৷ ম্যার্কেলও এই সংকট নিরসনে ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করেন৷
জেডএ/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ, এপি, রয়টার্স)