মনমোহন সিং সরকারের দ্বিতীয় পর্বের আর্থিক সংস্কার
৪ অক্টোবর ২০১২খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির পর, বিমা এবং পেনসন ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের অনুমোদন দিল মনমোহন সিং মন্ত্রিসভা৷ সংস্কারের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী যে পিছু হটবেন না, এটা তারই প্রমাণ৷ বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াবে ৪৯ শতাংশ৷
পেনসন ক্ষেত্রও খুলে দেয়া হচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য৷ এর পরিমাণ হবে ২৬ শতাংশ৷ পেনসন বিল সংসদে পেশ হবে৷ মোদ্দা কথা, পেনসন তহবিলে টাকা দেবে সরকার ও সরকারি কর্মচারি৷ টাকা খাটানো হবে বাজারে৷ ফেরত লাভ যেটা হবে, সেটা দেয়া হবে পেনসন আকারে৷ এতে সরকারের বাড়তি আর্থিক বোঝা অনেকটা কম হবে৷
তবে বিমা ও পেনসন বিল সংসদে পাশ করানো নিয়ে সংশয় আছে৷ কারণ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এর বিরোধী৷ প্রধান বিরোধী দল বিজেপি বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নিতে আপত্তি করেনি, কিন্তু ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোতে আপত্তি তুলেছে৷ তাই রাজনৈতিক কারণে এই বিল পাশে বাধা দিতে পারে তারা৷ তবে সংসদে সরকারের ২৫২ জন সাংসদ৷ বাইরে থেকে আছে এসপ এবং বিএসপি'র সমর্থন৷
পরিকাঠামো প্রকল্পের দ্রুত অনুমোদন দিতে প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে গঠিত হচ্ছে জাতীয় বিনিয়োগ পর্ষদ৷ নানা স্তরে অনুমোদনের জটিলতা হ্রাস পাবে৷ আজ মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয় ফরওয়ার্ড ট্রেডিং বিল নিয়ে৷ ভবিষ্যতে কৃষিপণ্যের দাম কী হবে আন্দাজ করে আগাম লেনদেন৷
আর্থিক সংস্কারে মনমোহন সিং-এর দৃঢ়তা দেখে বাজারে সাড়া পড়ে গেছে৷ শেয়ার বাজারে তেজিভাব, ডলারের নিরিখে টাকার দাম বেড়েছে৷ সরকারের সাহসী পদক্ষেপের রাজনৈতিক পরিণাম নির্ভর করছে এর সুফল আমজনতার কাছে কবে এবং কতাটা পৌঁছাবে, তার ওপর৷
এই সংস্কারের ভালো-মন্দ দিকগুলি বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দীপঙ্কর দাসগুপ্তের কাছে একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে আছে৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বললেন, ‘‘এক ধাক্কায় সব দরজা খুলে না দিয়ে ধীরে ধীরে খোলা উচিত ছিল৷ কিছুটা খোলার পর যদি শুভসংকেত দেখা যায়, তাহলে দরজা আরও একটু খোলা যায়৷ ১৯৯১ সালের সংস্কারে আর্থিক প্রবৃদ্ধি হয়ত বেড়েছে, কিন্ত আয় বৈষম্য বেড়েছে তার থেকে বেশি৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ