‘মহাকাশযান বানাতে প্রতিযোগিতা হোক': নাসা
১৮ মে ২০১২নাসার ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর৷ নাম তাঁর লোরি গ্রাভার৷ সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি যখন কথাবার্তা বলেন, সেটাও অনেকটা মহাশূন্য মার্কাই হয়ে থাকে৷ গ্রাভার ভিডিও কনফারেন্স করে সাংবাদিক সম্মেলনে জানালেন, ‘মহাশূন্যে যাওয়ার জন্য যানবাহন তৈরি করতে একা নাসা কেন? অন্যরাও এগিয়ে আসুক, তারাও বানাক দু-চারটে যানবাহন৷ তাতে প্রতিযোগিতা বাড়বে৷ ভালো মানের যান পাওয়া যাবে৷ দামও কমতে পারে৷'
আসল গপ্পোটা এখানে অবশ্য অন্যরকমের৷ আর তা হল, মহাশূন্যে স্পেস স্টেশন তৈরি করার কাজ হয়ে গেছে অনেকদিন আগেই৷ তাতে যন্ত্রপাতি ইত্যাদি বসানোর কাজও অনেকটাই শেষ৷ এবার গবেষণার পালা৷ আর স্পেস স্টেশনে না পৌঁছতে পারলে সেসব গবেষণা হবে কোত্থেকে?
সমস্যা হল, নাসার তৈরি করা মহাকাশযানগুলো একের পর এক বয়স বেড়ে বুড়ো হয়ে পড়তে শুরু করেছে৷ তারা আর মহাশূন্যে যায়না, থাকে এখন মিউজিয়ামে৷ লোকে টিকিট কেটে তাদের দেখে৷ কিন্তু তাতে তো আর কাজের কাজ হবে না! তাই দরকার নতুন নতুন মহাকাশযানের৷ যেগুলো ওই ফেরি সার্ভিসের মতো এপার ওপার করবে খালি৷ একের পর এক মহাকাশচারীদের পৌঁছে দেবে স্পেস স্ট্শনে৷ নিয়ে আসা, নিয়ে যাওয়া করবে মালপত্র, খাবারদাবার৷
আসলে এখানেই শেষ নয়৷ নাসার দপ্তর মহাশূন্যের গবেষণা এবং আরও নানাবিধ কাজকর্মে যেসব অর্থব্যয় করে, তার হিসেব-নিকেশ ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে মার্কিন সিনেটে৷ স্বভাবতই রাজনীতির সেই কোঁতকা ঘাড়ে পড়ার পর, ঝেড়ে উঠে বসেছে নাসা কর্তৃপক্ষ৷ তাই এবারে অন্যদিকে তাকাতে শুরু করেছে নাসা৷ যেখানে বাজার থেকে মহাকাশযান কিনে নিয়ে তাতে চেপে শূন্যে পাড়ি জমানো যাবে৷ মহাকাশযান বানাবার চাপ কিছুটা হলেও কমবে৷
তবে সমস্যাও আছে৷ যেমন মহাকাশযান নাসা চায়, তেমনটা বেসরকারি উদ্যোগে বানাতে সময় লাগবে নিদেনপক্ষে আরও প্রায় তিন থেকে পাঁচ বছর৷ আর ততোদিন কী নাসার মহাকাশচারীরা আকাশের দিকে তাকিয়েই কাটিয়ে দেবে? তা তো হতে পারেনা! সে কারণেই এখন প্রতিযোগিতার প্রসঙ্গ তোলা৷ বলছে, মার্কিন মহাকাশ অভিজ্ঞ মিডিয়া৷ এদিকে, মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চপদস্থ সদস্য ফ্রাঙ্ক উল্ফ, যাঁর ওপর এই নাসার বাজেটের দায়দায়িত্ব, তিনি নাকি একথাও বলেছেন যে, নাসার বাজেট এবার মুখ থুবড়ে পড়তে পারে৷ কারণ, এতো বেশি অর্থ বরাদ্দ করার আগে সিনেট এ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা করবে৷
শোনা যাচ্ছে, ক্যালিফোর্নিয়ার স্পেস এক্স নামের এক সংস্থা বানাতে শুরু করেছে মহাকাশযান৷ আগামী সেপ্টেম্বরে তারা প্রথম দেখাবে, কী তারা বানাচ্ছে৷ শোনা এমনটাও যাচ্ছে, সেই মহাশূন্যযান নাকি নাসা'র ডিজাইন মেনেই তৈরি হচ্ছে৷ তাই এখন জরুরি কিছু সময়ের অপেক্ষা!
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় (এএফপি, এপি)
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ