অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫২০১৪ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ প্রতিবেদনে ইউক্রেন, নাইজেরিয়া, সিরিয়া, ইরাকসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মানবাধিকার লংঘনে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়৷ পাশাপাশি সেসব এলাকার সংকট নিরসন করে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পাশ্চাত্যের দেশগুলোর উদ্যোগের সমালোচনাও করা হয়৷
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০১৪ সালে পাঁচ কোটি মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আর কখনো এক বছরে এত মানুষ গৃহহারা হয়নি৷
ইউক্রেনে মানবাধিকার লংঘনের জন্য ইউক্রেন সরকার এবং রুশপন্থি বিদ্রোহী দু'পক্ষকেই দায়ী মনে করে অ্যামনেস্টি৷ মানবাধিকার সংস্থাটির গবেষণা বিভাগের পরিচালক আনা নেইস্টাট বলেছেন, ‘‘সাধারণ মানুষদের জীবন রক্ষায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে দু'পক্ষই ব্যর্থ হয়েছে, ফলে যুদ্ধকালীন আইন লংঘিত হয়েছে৷''
অ্যামনেস্টির সেক্রেটারি জেনারেল সলীল শেঠি এর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দায়ী করে বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ যতটা নৃশংস আক্রমন এবং দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ সেই তুলনায় অপ্রতুল৷''
এছাড়া অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে ইসলামি জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম এবং ইসলামিক স্টেটের ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসী কার্যকলাপেও তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে৷ সংস্থাটি মনে করে, বোকো হারাম এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস) হত্যা, ধর্ষণ এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বাস্তুচ্যুত করার মাধ্যমে ব্যাপক হারে মানবাধিকার লংঘন করছে৷
অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দৃষ্টিভঙ্গিরও কঠোর সমালোচনা রয়েছে প্রতিবেদনে৷ সিরিয়া, লিবিয়া এবং নাইজেরিয়া ছাড়তে বাধ্য হওয়া মানুষদের প্রতি ইইউ যথেষ্ট সহানুভূতিশীল আচরণ করছে না – এমন মত প্রকাশ করে অ্যামনেস্টি বলেছে, ‘‘ইইউ বাঁচানোর চেষ্টা না করে মানুষকে ভূমধ্যসাগরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করছে৷'' অ্যামনেস্টির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে ৩,৪০০-র মতো মানুষ ভূমধ্যসাগরে ডুবে মারা গেছে৷
জাতি সংঘের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের কেউ কেউ ‘ভেটো' ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে – এমন ইঙ্গিত দিয়ে এর সমালোচনাতেও মুখর হয়েছে অ্যামনেস্টি৷ বিশেষ করে সিরিয়া প্রসঙ্গে মানবাধিকার সংস্থাটি মনে করে, সেখানে ব্যাপক মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ব্যবস্থা নিতে পারেনি মূলত চীন এবং রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে৷
এসিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)