লিখছে কম্পিউটার
৯ আগস্ট ২০১৪উত্তেজিত দর্শক৷ হাজার হাজার অ্যামেরিকানদের জন্য বাস্কেটবল খেলা দেখা যেন অবশ্যই করণীয় একটা বিষয়৷ সবাই এর সঙ্গে জড়িত হতে চায় – কি স্টেডিয়ামে কিংবা খেলার পর ইন্টারনেটে৷
এই টেক্সটের বিশেষত্ব হলো, এর লেখক কোনো মানুষ নয় বরং একটা কম্পিউটার৷ এ সম্পর্কিত সফটওয়্যার ডেভেলপ করেছে মার্কিন কোম্পানি অটোমেটেড ইনসাইটস, যাদের রোবট সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক বলা হয়৷
সংগঠনটির প্রধান স্কট ফ্রেডেরিক-এর কথায়, ‘‘এখন আমরা অনেক পরামর্শের জন্যই মেশিনের সাহায্য নেই৷ আমি নিশ্চিত নয় যে, অনেক ব্যবহারকারী আসলেই জানেন কিনা, তাঁদের কোন কাজটা মেশিন দিয়ে হচ্ছে, আর কোনটা নয়৷ যদি অনেক ডাটা বিশ্লেষণ করতে হয়, তাহলে মেশিন সেটা করতে পারে সহজেই৷ আর যদি আস্থার কথা বলেন, তাহলে আপনি চাইবেন নির্ভুল বিশ্লেষণ৷''
বিশেষ কোড ব্যবহার করে ডাটাগুলোকে বার্তায় পরিণত করে এই কোম্পানি৷ একটি কম্পিউটার এক সেকেন্ডে প্রায় দুই হাজারের মতো রিপোর্ট নির্ভুল ও সাশ্রয়ীভাবে তৈরি করতে পারে তারা৷
অপর এর সংস্থা সিএটিও ফাউন্ডেশনের জিম হারপার জানান, ‘‘রোবট সাংবাদিকতা তার জায়গা করে নেবে৷ কেননা গণমাধ্যম কোম্পানিগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ সাশ্রয়ের পথ খুঁজছে৷ ভবিষ্যতে আপনি দেখবেন কোম্পানিগুলো যতটা সম্ভব স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিপোর্ট তৈরির দিকে ঝুঁকবে৷ তবে এটা রিপোর্টারদের দিয়ে মানবিক বোধ সম্পন্ন প্রতিবেদন লেখার বিকল্প নয়৷''
ফোর্বসের শেয়ার মার্কেট বিষয়ক রিপোর্টগুলো কম্পিউটার লিখে দেয়৷ এলএ টাইমসের রিপোর্টগুলিও কম্পিউটারে লেখা৷
এ ধরনের রিপোর্টিং-এর বিষয়ে হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার অধ্যাপক ইয়ানিক ল্যাম্ব-এর মনে মিশ্র অনুভূতি কাজ করে৷ তিনি জানেন, এটা মেশিনের বিকল্প হতে পারে, রিপোর্টারের নয়৷ তবে ভবিষ্যতের নিউজমেকারদের এই নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে৷
ইয়ানিক ল্যাম্বের বক্তব্য: ‘‘আমরা আমাদের কম্পিউটার বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও চারুকলা বিভাগের সঙ্গে মিলে তথ্য পরিবেশনের নতুন উপায় নিয়ে কাজ করছি, যেন আমরা এক্ষেত্রে অগ্রসর থাকতে পারি৷ আর আমাদের শিক্ষার্থীরাও যেন নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রস্তুত হয়ে থাকতে পারে৷''
এই যেমন লিউক রোসিয়াক৷ এই রিপোর্টার কম্পিউটার কোর্সে পড়ার সময় একটি প্রোগ্রাম ডেভেলপ করেন, যেটা সংসদীয় বক্তৃতা বিশ্লেষণ করতে পারে৷ তিনি ‘ওয়াশিংটন এক্সামিনার'-এ কাজ করেন৷ লিউক রোসিয়াক বলেন, ‘‘এটা সাংবাদিকদের আগের চেয়ে বেশি মেটেরিয়াল দিচ্ছে৷ এটা কোনোকিছুর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে না৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে মনে হয়, এখন আগের চেয়েও বেশি সাংবাদিক প্রয়োজন, কারণ এখন আমাদের কাছে সব তথ্য আছে, যেখান থেকে আমরা রিপোর্ট পেতে পারি৷ তাই আমি মনে করি ভবিষ্যতে আপনি এমন সব প্রতিবেদন পড়বেন, যা আগে কখনো লেখা হয়নি৷''
কম্পিউটার আসলেই তথ্য সংগ্রহ করতে পারে৷ তবে মানুষই অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে৷ ভবিষ্যতেও এর পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই৷