মিশরে গণভোট
১৬ ডিসেম্বর ২০১২মিশরের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে সংবিধানের খসড়া সমর্থনের ব্যাপারে হ্যাঁ-না ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার৷ তবে দেশটির মোট ২৭টি প্রদেশের মধ্যে মাত্র ১০টিতে গণভোট হয়েছে৷ বাকি ১৭টি প্রদেশে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী শনিবার৷ তবে প্রথম দফা ভোটের পর প্রকাশিত ভোটার জরিপের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মুরসির সমর্থক ইসলামপন্থী দল মুসলিম ব্রাদারহুড দাবি করেছে যে, সংবিধানের খসড়া অনুমোদনের পক্ষে হ্যাঁ-সূচক ভোট পড়েছে ৫৭ শতাংশ এবং এর বিপক্ষে অর্থাৎ না-সূচক ভোট পড়েছে ৪৩ শতাংশ৷ তবে গণভোটের চূড়ান্ত এবং সরকারি ফলাফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে অন্তত এক সপ্তাহ৷ দ্বিতীয় দফার ভোট সম্পন্ন হওয়ার পর চূড়ান্ত ফল পাওয়া যাবে৷
এদিকে, শনিবার অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রে দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে মিশরীয়দের ভোট দিতে দেখা গেছে এবং শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে বলে বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে৷ তবে বেশ কিছু শহরে ভোট কেন্দ্রের বাইরে বিরোধীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে৷ তারা ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতি এবং কারচুপির অভিযোগ তুলেছে৷ এছাড়া ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই ইসলামপন্থী সমর্থকরা উদারপন্থী ওয়াফদ পার্টির পত্রিকার কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে৷ উল্লেখ্য ওয়াফদ পার্টি সহ বিরোধী জোট গণভোট বর্জন না করলেও জনগণের প্রতি না-সূচক ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে৷
অবশ্য বিরোধী দলগুলোর জোট ন্যাশনাল স্যালভেশন ফ্রন্ট এর এক নেতা স্বীকার করেছেন যে, ইসলামপন্থীদের তৈরি এই খসড়া সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বলে ভোটার জরিপে দেখা গেছে৷ তবুও এই খসড়ায় বিরোধী দলের রাজনৈতিক অধিকার এবং সংখ্যালঘুদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে এই খসড়া বাতিলের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধী জোট৷ কায়রোর রাজপথে বিক্ষোভরত বিরোধী কর্মী ইসাম আমিন বলেন, ‘‘এই ভোটের জরিপ যদি সঠিকও হয়, তবুও তা সংবিধান অনুমোদনের জন্য যথেষ্ট নয়৷ কারণ এতে দেখা যাচ্ছে মিশরের ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ এর বিপক্ষে রয়েছে৷''
এছাড়া বিরোধী নেতা এবং জাতিসংঘের সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মেদ এলবারাদি টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘‘জাতি আরো বেশি বিভক্ত হয়ে পড়ছে এবং রাষ্ট্রের কাঠামোগুলো নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে৷ দারিদ্র্য এবং নিরক্ষরতার আশ্রয় নিয়ে ধর্মের বাণিজ্য করার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ তবে মানুষের মাঝে এ ব্যাপারে সচেতনতাও বাড়ছে৷''
এএইচ / জেডএইচ (ডিপিএ, এপি, রয়টার্স)