ভারতের নতুন সরকার
১৯ মে ২০১৪এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিনিধি দল দিল্লি যাবে বলে জানা গেছে৷ এছাড়া মোদীর প্রথম বিদেশ সফর যেন বাংলাদেশে হয় সে চেষ্টাও চলছে৷
সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং কূটনীতিক মোহাম্মদ জমির মনে করেন, ভারতের নতুন এই সরকার কংগ্রেসের বিপরীত৷ সেকারণে বাংলাদেশ সরকার চাইছে যেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে কোনো ঝুঁকি তৈরি না হয়৷ তার জন্য আগেভাগেই ব্যবস্থা নিচ্ছে৷
শুধু সরকার নয়, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলই এখন বিজেপি এবং মোদীকে তুষ্ট করতে ব্যস্ত৷ শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রবিবার মোদীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন৷
এদিকে ভারতের নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হওয়ার পর পরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এবং প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দুই দিনের সংক্ষিপ্ত সফরে ভারত যাবেন বলে জানা গেছে৷ বাংলাদেশ সরকার চাইছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর মোদী যেন সবার আগে বাংলাদেশ সফরে আসেন৷ প্রতিনিধি দলটি সে চেষ্টাই চালাবে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিফোনে এবং চিঠিতে এরইমধ্যে মোদীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন৷
সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং কূটনীতিক মোহাম্মদ জমির ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘উদ্যোগগুলো একটু আগাম হলেও এর যৌক্তিক কারণ আছে৷ ভারতের নতুন সরকার যারা গঠন করছেন তারা কংগ্রেসের থেকে ভিন্ন আদর্শের৷ তাই বাংলাদেশ সরকার চাইছে, যে দূরত্ব আছে তা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে৷ বাংলাদেশ সরকার ভারতের নতুন সরকার নিয়ে কোনো ঝুঁকিতে থাকতে চাইছে না৷ তাই খুব দ্রুত মোদী সরকারের প্রকৃত মনোভাব জানতে চাইছে তারা৷''
মোহাম্মদ জমির বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ নিয়ে মোদীর নানা ধরণের বক্তব্য এখানে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে৷ তাই বাংলাদেশ সরকার চাইবে আসলেই যেন কোনো বিতর্কিত কাজের সূচনা না করে মোদী সরকার৷ আর এসব কারণেই ভারতের নতুন সরকার নিয়ে বাংলাদেশে তৎপরতা একটু বেশি৷''
তিনি বলেন, ‘‘কৌশলগত এবং ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ এছাড়া নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক কারণও রয়েছে৷ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পানিবণ্টন, সীমান্ত, সমুদ্রসীমা এবং সীমান্ত হত্যাসহ নানা বিষয়ে সমঝোতার বাকি আছে, যা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা এবং উদ্যোগ প্রয়োজন৷''
মোহাম্মদ জমির বলেন, ‘‘এতদিন কংগ্রেস সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটি বোঝাপড়া ছিল৷ সেই বোঝাপড়ায় যাতে ছেদ না পড়ে এবং সমস্যা সমাধানে যাতে সামনে আরো এগিয়ে যাওয়া যায় তার চেষ্টাই করছে বাংলাদেশ সরকার৷'' আর বাংলাদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলও মোদী সরকারের গুড বুকে থাকতে চাইছে৷ এটাই স্বাভাবিক৷ কারণ ভারত সরকারের মনোভাব বাংলাদেশের অনেক কিছুর ওপরই প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন মোহাম্মদ জমির৷