ম্যার্কেলকে আক্রমণের পথ পাচ্ছেন না শুলৎস
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭এসপিডি দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী শেষমেষ আঙ্গেলা ম্যার্কেলের বিরুদ্ধে ‘নির্লিপ্ততা'-র অভিযোগ করেছেন৷ শুলৎস হার অবশ্যম্ভাবী বলে মেনে নিয়েছেন বলে ডয়চে ভেলের মার্সেল ফ্যুর্স্টেনাউ-এর ধারণা৷
নির্বাচনের চার সপ্তাহ আগে পরিস্থিতি এই যে, সিডিইউ-সিএসইউ দল মিলে ৪০ শতাংশের কিছু কম ভোট পেতে চলেছে; অপরদিকে এসপিডি দলের বরাদ্দে ২০ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পড়বে বলে জরিপে দেখা যাচ্ছে৷ আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে ৩৮ শতাংশ বনাম ২২ শতাংশ৷ এই পরিস্থিতিতে দুই তরফের দুই প্রার্থী জার্মানির প্রধান দু'টি সরকারি টেলিভিশন সংস্থা এআরডি ও জেডডিএফকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন৷
মাসের পর মাস পিছিয়ে থাকার পরেও এআরডি টেলিভিশনের ‘বার্লিনের রিপোর্ট' অনুষ্ঠানে শুলৎসকে লড়াকু দেখা যায়৷ আর তিনি করবেনই বা কী৷ সাক্ষাৎকারেও তাঁকে নতুন কিছু বলতে শোনা যায়নি৷ তুরস্কের প্রতি দৃঢ়তা প্রদর্শন; পেট্রোল ও ডিজেল গাড়ি চলাচল ও উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার আবেদন; উন্নততর শিক্ষাব্যবস্থা৷ সব বিষয়েই পরিচিত অবস্থান, যা বস্তুত সিডিইউ-সিএসইউ দলও সমর্থন করে থাকে৷
নিরাপত্তা হলো সিডিইউ-সিএসইউ দলের পেটোয়া বিষয়
এসপিডি ও শুলৎস প্রাণপণে আক্রমণের কোনো পন্থা খুঁজছেন, কিন্তু ম্যার্কেল ও সিডিইউ-সিএসইউ যেন নিশ্ছিদ্র৷ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উভয়পক্ষই নিজেদের কড়া বলে জাহির করতে চান, যেটা সিডিইউ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়েরের পক্ষে করা অনেক সোজা, কেননা, তিনি পুলিশমন্ত্রী৷ সবে গত বুধবার ডেমেজিয়ার বার্লিনের একটি রেল স্টেশনে হাজির হয়ে অপরাধীদের মুখ চিনতে সক্ষম ক্যামেরা সম্বলিত একটি ডিডিও নজরদারির প্রণালী জনসমক্ষে পেশ করেছেন৷ তার পরদিনই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খুবই দৃষ্টিগোচরভাবে একটি উগ্র বামপন্থি ওয়েবসাইট নিষিদ্ধ করেন৷
অপরদিকে ম্যার্কেল সংসদের গ্রীষ্মকালীন বিরতি শুরু হবার আগেই সমকামী বিবাহ যাতে সংসদে অনুমোদিত হয়, তার ব্যবস্থা করে গিয়েছিলেন৷ ফলে আরো একটি গরম গরম বিষয় এসিপিডির হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে৷
ম্যার্কেল আর যা-ই হন, ‘নির্লিপ্ত' নন
বারুদ ফুরিয়ে আসছে, কাজেই উপায় না দেখে শুলৎস এখন ম্যার্কেলের দিকে তাক করেছেন৷ ম্যার্কেল নাকি ‘নির্লিপ্ত' ও ‘নাক-উঁচু', বলে জনগণের ধারণা – তাঁর গ্রীষ্মকালীন সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন শুলৎস৷ সত্যি? তাহলে তো শুলৎসের ম্যার্কেলের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হবার কথা৷ অথচ জার্মানিতে যদি সরাসরি ভোটের মাধ্যমে চ্যান্সেলর নির্বাচন করা হতো, সেক্ষেত্রেও শুলৎস ম্যার্কেলের ধারে-কাছে আসতে পারতেন না৷ জরিপে যেমনটাই দেখা যাচ্ছে৷
এক কথায়, শুলৎস জানেন যে, চ্যান্সেলর হওয়ার প্রতিযোগিতায় তাঁর হার অবধারিত, কাজেই তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণের মাধ্যমে এখনও হাওয়া পালটানোর চেষ্টা করছেন, যা ব্যর্থ হতে বাধ্য, কেননা, জার্মানির অধিকাংশ মানুষ এ ধরনের ব্যক্তিগত আক্রমণ পছন্দ করেন না, যদি না তার পিছনে কোনো বাস্তব তথ্য বা সত্য থাকে৷
অপরদিকে ম্যার্কেল তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর আক্রমণের জবাবে শুধুমাত্র বলেছেন, ‘‘আমি মানুষজনের সামনে নিজেকে পেশ করি বলে আমার ধারণা৷'' জেডডিএফ-এর ‘সরাসরি বার্লিন' অনুষ্ঠানে বর্তমান চ্যান্সেলরকে বিশেষ বিচলিত মনে হয়নি৷
টেলিভিশন বিতর্ক
আগামী তেসরা সেপ্টেম্বর দুই প্রতিযোগী একটি টেলিভিশন বিতর্কে মুখোমুখি হবেন৷ ম্যার্কেলের কাছে অথবা পক্ষে এই টেলিভিশন বিতর্কের মূল্য সামান্যই৷ কিন্তু শুলৎসকে দেখাতে হবে যে, তিনি অন্তত এই রণাঙ্গণে ম্যার্কেলের সমকক্ষ অথবা তার চেয়ে বেশি৷ দু'জনকে নিয়ে আলাদা করে যে রিহার্সাল হয়েছে, তাতে অবশ্য ম্যার্কেলই এগিয়ে ছিলেন বলে শোনা যাচ্ছে৷
মার্সেল ফ্যুর্স্টেনাউ/এসি
জার্মান নির্বাচন নিয়ে কিছু জানার থাকলে লিখুন আমাদের, নীচের ঘরে৷