যানবাহনে আলাদা আসনের পক্ষে বেশির ভাগ নারী!
৩০ অক্টোবর ২০১৪বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১৫টি রাজধানী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল শহর নিউ ইয়র্কের ৬ হাজার তিনশ নারীর মধ্যে জরিপ চালিয়ে আশ্চর্যজনক এই তথ্য পেয়েছে টমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন৷ জরিপে দেখা গেছে, নিউ ইয়র্কের পরিবহন ব্যবস্থাই নারীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ৷ অথচ ২৫ বছর আগেও নিউ ইয়র্কের রাস্তাঘাট ছিল মহা আতঙ্কের৷ ১৯৮৯ সালে সেন্ট্রাল পার্কে দৌড়াতে গিয়ে ধর্ষিত হন এক তরুণী ব্যাংকার৷ ধর্ষণের পর তাঁকে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে চলে যায় ধর্ষকরা৷ তারা ভেবেছিল তরুণীটি মারা যাবে৷ কিন্তু অনেক সংগ্রাম করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরায় সাহসী সেই তরুণী স্থান পেয়ে গেছেন ইতিহাসে৷ ‘সেন্ট্রাল পার্ক জগার' বললে যুক্তরাষ্ট্রের সবাই এখনো চিনে নেয় তাঁকে৷
সেই শহরের রাস্তা-ঘাট, বাস, ট্রাম, পাতাল ট্রেন – সবই এখন সর্বাধুনিক এবং নিরাপদ৷ তারপরও জরিপে সত্তর ভাগ নারীই বলেছেন, বাস এবং ট্রেনে মেয়েদের জন্য আলাদা আসন থাকলে তাঁরা আরো নিরাপদ বোধ করবেন৷ বাসে-ট্রেনে কিংবা ট্যাক্সিতে উঠলে মেয়েরা যে নিয়মিত যৌন নিপীড়নের শিকার হন, নিউ ইয়র্কে ব্যাপারটা এত খারাপ পর্যায়ে নেই৷ শতকরা ৩০ ভাগ নারী জানিয়েছেন, পাবলিক ট্রান্সপোর্টে তাঁরা মৌখিকভাবে নিগৃহীত হয়েছেন৷
ফিলিপাইন্সের রাজধানী ম্যানিলার প্রায় ৯৪ ভাগ নারী মেয়েদের জন্য একেবারে আলাদা বাস, ট্রাম এবং ট্যাক্সির পক্ষে মত দিয়েছেন৷ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা, মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি এবং ভারতের রাজধানী দিল্লিরও ৯০ ভাগেরও বেশি নারী যানবাহনে অপরিচিত পুরুষের পাশে বসার বিপক্ষে৷ তবে জরিপে অংশ নেয়া নিউ ইয়র্কের নারীদের মধ্যে মাত্র ৩৫ ভাগ এই দাবির পক্ষে৷
বিশ্বের অনেক আধুনিক শহরেই ইতিমধ্যে নারীদের জন্য বাসে এবং ট্রেনে আলাদা আসন রাখা শুরু করেছে৷ জরিপের শহরগুলোর মধ্যে এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আছে টোকিও৷ পথে-ঘাটে মেয়েদের যৌন নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচাতেই নেয়া হচ্ছে এমন উদ্যোগ৷ এক্ষেত্রে টোকিওর পরেই আছে মেক্সিকো আর জাকার্তা৷
কিন্তু প্রশ্ন হলো, মেয়েদের নিরাপত্তা দিতে আলাদা বাস, ট্রাম, ট্যাক্সি বা আলাদা বসার ব্যবস্থা করাই কি যথেষ্ট? এ সব উদ্যোগ কি মেয়েদের জন্য খুব সুন্দর ভবিষ্যতের ইঙ্গিত? বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ট্রান্সপোর্ট স্পেশালিস্ট জুলি ব্যাবিনার্ড বললেন, ‘‘যানবাহনে নারীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা সাময়িক সুফল বয়ে আনতে পারে, এটা দীর্ঘমেয়াদি কোনো সুফল বয়ে আনবে বলে মনে হয় না৷''
এসিবি/ডিজি (টমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন)