যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিবিদ্বেষ বাড়ছে?
২৮ অক্টোবর ২০১৮যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের শহর পিটসবার্গে শনিবার ইহুদিদের ধর্মীয় স্থান সিনাগগে এই গুলি হামলার ঘটনা ঘটে৷ হামলাকারী রবার্ট বাওয়ার্স নামের ৪৬ বছর বয়সি এক ব্যক্তি৷ গুলি করার সময় তিনি চিৎকার করে বলছিলেন, ‘‘সব ইহুদির মরতে হবে৷''
সিনাগগে সেই সময় এক শিশুর নাম রাখার অনুষ্ঠান চলছিল৷ ঐ ব্যক্তির গুলিতে সেখানে ১১ জন মারা যান৷ আরো ছয় জন আহত হন৷
পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে ঐ ব্যক্তির সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়৷ পরে আহত অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়৷
এই ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে ইহুদিদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে রক্তাক্ত হামলা৷ যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিবিদ্বেষ বাড়ার বিষয়টি এই ঘটনার পর আবারো আলোচনায় উঠে এসেছে৷
গত বছর ইহুদিদের সিভিল রাইটস গ্রুপ অ্যান্টি-ডিফেমেশন লীগ-এর গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৬ সালের তুলনায় পরের বছর যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিবিদ্বেষ ৫৭ ভাগ বেড়েছে৷ ব্রান্ডেস বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, এই বিদ্বেষ বৃদ্ধির কারণে ৮০ ভাগ ইহুদি শঙ্কিত৷
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘটনার পর বলেছেন, ‘‘এই শয়তানি ইহুদি-বিরোধী আক্রমণ আমাদের সবার ওপর আক্রমণ৷''
তাঁর মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘অ্যামেরিকা এই ধর্মান্ধ ও ইহুদি বিরোধীদের কর্মকাণ্ডের চেয়ে ঢের শক্তিশালী৷''
এই ঘটনায় বিপুল সংখ্যক অ্যামেরিকান ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে শোক প্রকাশ করছেন৷ ট্রাম্পেরও পিটসবার্গে যাওয়ার কথা রয়েছে৷ সব সরকারি জায়গায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷
উগ্রবাদী কর্মকাণ্ড মনিটর করে এমন ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স' হামলাকারী বাওয়ার্সের একটি সাম্প্রতিক পোস্ট প্রকাশ করেছে৷ সেখানে লেখা, ‘‘ইহুদিরা শয়তানের সন্তান৷''
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে ২৯টি অভিযোগ আনা হয়েছে৷ তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে৷
ঘটনায় শঙ্কা জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু৷ তিনি এই ঘটনাকে ‘হৃদয়বিদারক' ও ‘ভীতিকর' বলে উল্লেখ করেন৷
জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও এই ‘অন্ধ ইহুদিবিদ্বেষমূলক' কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন৷
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সবাইকে এক হয়ে ‘বর্ণবিদ্বেষ, ইহুদিবিদ্বেষ, ইসলাম-ভীতি ও যত রকমের বিদ্বেষ আছে' সব মোকাবেলা করার আহ্বান জানিয়েছেন৷
জেডএ/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ, এপি, রয়টার্স)