‘নরকের মুরগি’
২১ মার্চ ২০১৪অনেক গবেষণার পর ডাইনোসরটির পরিচয় নিয়ে বুধবার নিশ্চিত হয়েছেন গবেষকরা৷ যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা ও সাউথ ডাকোটা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ‘আনজু ওয়াইলেই' নামের ডাইনোসরের জীবাশ্ম৷ জীবাশ্মটির মাথার আকৃতি অনেকটা পাখির মতো৷ এর দন্তবিহীন ঠোঁট রয়েছে৷ খুলিতে রয়েছে একটি অদ্ভুত ঝুঁটি৷ হাতে বড় ধারালো থাবা, দীর্ঘ পা এবং সেগুলো ছোট পালকে ঢাকা৷
বিজ্ঞানীরা জানালেন, উত্তর অ্যামেরিকায় প্রায় এক শতক আগে এ ধরনের ডাইনোসরের একটি হাড় পাওয়া গিয়েছিল, তখন থেকেই ঐ অঞ্চলে তাদের অনুসন্ধান চলছে৷ অন্তত ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে পৃথিবীতে এদের অস্তিত্ব ছিল বলে জানালেন তাঁরা৷ গবেষক এমা শ্যাখনার বললেন, ‘‘আমি জানি না এরা কি গর্জন করত, হাসত, না দৌড়াত৷ কারণ এটা অদ্ভুত ধরনের একটি মুরগি যা একদম দৈত্যের মতো দেখতে৷''
প্যালিওন্টোলজিস্ট ম্যাট লামানা জানালেন, আনজু ওয়াইলেই ১১ ফুট লম্বা, এর উচ্চতা ৫ ফুট আর ওজন ২০০ থেকে ৩০০ কেজি হতে পারে৷ একজন গবেষক জানালেন, ‘‘একে বর্ণনা করার জন্য নরক থেকে আসা মুরগি বা ‘দ্য চিকেন ফ্রম হেল' উপযুক্ত একটি নাম৷'' তিনি ডাইনোসরটির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘আপনাকে যদি টাইম মেশিনে করে ডাইনোসর যুগের শেষ সময়ে নর্থ অ্যামেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন এই পাখিটিকে দেখে আপনার প্রথম প্রতিক্রিয়া হবে – কী কিম্ভূত দেখতে একটা পাখি! সাধারণত ডাইনোসর বলতে যে চিত্রটি মানুষের চোখে ভেসে ওঠে, এটা তা থেকে একেবারেই ভিন্ন৷''
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ছোট ছোট পালক বিশিষ্ট এই ডাইনোসর থেকেই পূর্ণাঙ্গ পাখিদের রূপ বিকশিত হয়েছিল৷ যদিও প্রাচীন পাখির অস্তিত্ব অন্তত ১৫ কোটি বছর আগে পাওয়া যায়৷ তবে এই ডাইনোসরদের মেরুদণ্ডে বাতাস চলাচলের জায়গা রয়েছে এবং পায়ের হাড়ে আছে গর্ত৷
পালক সমৃদ্ধ ফসিল একেবারেই বিরল এবং আনজু ওয়াইলেই-র মতো মস্তিষ্কের এমন গঠন আজ পর্যন্ত কোনো ডাইনোসরের ফসিলে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা৷
এপিবি/এসবি (রয়টার্স)