যৌন নিপীড়নের ঘটনায় যাজকদের কৌমার্য নিয়ে বিতর্ক
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮জার্মানির ক্যাথলিক বিশপদের সংগঠন ‘জার্মান বিশপস কনফারেন্স'-এর উদ্যোগে পরিচালিত এক প্রতিবেদন বলছে, ১৯৪৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জার্মানিতে কমপক্ষে ১,৬৭০ জনের দ্বারা ৩,৬৭৭ জন যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন৷ অভিযুক্তদের মধ্যে বেশিরভাগই যাজক৷
জার্মানির ফুলডা শহরে আজ থেকে শুরু হওয়া বিশপ সম্মেলনে আলোচিত প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার কথা৷ তবে তার আগেই ১১ সেপ্টেম্বর জার্মান দৈনিক ‘ডি সাইট' ও ম্যাগাজিন ‘ডেয়ার স্পিগেল'-এ প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য অংশ প্রকাশিত হয়ে যায়৷
তদন্ত প্রতিবেদনে যৌন হয়রানির যে সংখ্যা বেরিয়েছে তা বাস্তবে আরও বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা৷ কারণ, ক্যাথলিক গির্জা পরিচালিত সব প্রতিষ্ঠান ঐ তদন্তের আওতায় ছিল না৷
যাজকদের দ্বারা এত শিশু ও কমবয়সি মানুষের যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঘটনায় কয়েকটি বিষয় আলোচনায় উঠে এসেছে৷ এর মধ্যে যাজকদের অবিবাহিত থাকা এবং কারো সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন থেকে বিরত থাকার বাধ্যবাধকতার বিষয় একটি৷ জার্মানির গির্জাগুলোতে বহুদিন থেকে এই বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের পর সেটি আরও বেশি সামনে এসেছে৷
ফুলডায় শুরু হওয়া বিশপ সম্মেলনে বিষয়টি আরো বিস্তারিতভাবে আলোচিত হওয়ার কথা রয়েছে৷ এছাড়া যৌন নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেয়া, যাজকদের প্রশিক্ষণ ও যাজকদের জন্য নির্ধারিত বাসভবনে একা থাকার বিষয়ও আলোচনায় আসতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা৷
সম্মেলন শেষে সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করবে জার্মান বিশপস কনফারেন্স৷
যৌন নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদের সংগঠন ‘স্কয়ার টেবিল ফাউন্ডেশন'-এর প্রতিষ্ঠাতা মাটিয়াস কাটশ মনে করেন, যাজকদের কৌমার্য ব্রত গ্রহণের বিতর্কটি গুরুত্বপূর্ণ৷ তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়টি আলোচনা করা৷
ফুলডা থেকে রোম
যাজকদের হাতে শিশু ও কমবয়সিদের নিপীড়িত হওয়ার বিষয়টি শুধু যে জার্মানিতে ঘটেছে তা নয়৷ কাটশ মনে করেন, যে দেশে ক্যাথলিক চার্চ রয়েছে সেখানেই এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে৷ এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, চিলি, ফ্রান্স, ফিলিপাইন্স, নেদারল্যান্ডসে এমন ঘটনার খবর প্রকাশিত হয়েছে৷
আগামী ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বের সব বিশপকে নিয়ে ভ্যাটিকানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে পোপ ফ্রান্সিস কথা বলতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেছে৷
তবে কাটশ মনে করেন, ঐ আলোচনা শুধু বিশপদের নিয়ে করলে হবে না, সেখানে ভুক্তভোগীদেরও থাকতে দিতে হবে৷ তাহলে ক্যাথলিক গির্জার সর্বোচ্চ পর্যায় যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, সবার কাছে সে বার্তা পৌঁছে যাবে৷
ক্রিস্টোফ স্ট্রাক/জেডএইচ