1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রক্ষকই যখন ভক্ষক – সরকারি কম্পিউটার ট্রোজান নিয়ে জার্মানিতে বিতর্ক

১২ অক্টোবর ২০১১

কম্পিউটার ব্যবহার করেন অথচ কোনোদিন ভাইরাস বা অন্যান্য ক্ষতিকারক সাইবার পোকামাকড়ের পাল্লায় পড়েন নি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন৷ কিন্তু হ্যাকারের বদলে রাষ্ট্রই যদি ট্রোজান হর্স পাঠায়? জার্মানিতে এ নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক৷

https://p.dw.com/p/12qE2
Mitarbeiter des Nationalen Cyber-Abwehrzentrums sitzen am Donnerstag (16.06.2011) in Bonn an Computern. Bundesinnenminister Hans-Peter Friedrich hat das Nationale Cyber-Abwehrzentrum offiziell eröffnet. Foto: Oliver Berg dpa/lnw
সরকারি কম্পিউটার ট্রোজান নিয়ে জার্মানিতে বিতর্কছবি: picture alliance / dpa

আজকের যুগে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ছাড়া এক পা এগোনো কঠিন৷ বিশেষ করে শিল্পোন্নত দেশগুলিতে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েই চলেছে৷ সবাই অবশ্য ইন্টারনেট ব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন নয়৷ অ্যান্টি ভাইরাস বা মৌলিক নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারও ব্যবহার করেন না তারা৷ বা করলেও নিয়মিত আপডেট'এর তোয়াক্কা করেন না৷ তাদের সেই দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা ফাঁক ফোকর দিয়ে ভাইরাস, ওয়ার্ম, ট্রোজান হর্স কম্পিউটারে চালান করে দেয় এবং নানা অবৈধ উপায়ে মানুষের ক্ষতি করে৷ হ্যাকারদের চিহ্নিত করা বা করতে পারলেও তাদের নাগাল পাওয়া সহজ নয়৷ কম্পিউটারকে দুর্গ হিসেবে মনে করে তা মজবুত রেখেই এদের মোকাবিলা করা সম্ভব৷

কিন্তু সমস্যা হলো, হ্যাকারদের এই অবৈধ কার্যকলাপের পদ্ধতি রাষ্ট্রের কাছেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে৷ অপরাধী হিসেবে কাউকে সন্দেহ করলে পুলিশ তার বাড়িঘর বা দপ্তরে তল্লাশি চালাতে পারে, অবশ্যই আইনি কাঠামোর মধ্যে৷ কিন্তু এই সাইবার যুগে পুলিশের নজর কম্পিউটারের দিকেও৷ সেখানেই জমে রয়েছে অসংখ্য ‘ক্লু' বা যোগসূত্র৷ ই-মেল যোগাযোগ থেকে শুরু করে ফাইলের ভাণ্ডার – এসব ঘেঁটে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে পারলে পুলিশের কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়৷ তবে সন্দেহভাজন ব্যক্তির মনে সন্দেহ জাগলে চলবে না৷ গোপনে তার বাড়িতে ঢুকে কম্পিউটার চালিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে বাড়ি ফিরে সে পুলিশের মতলব টের পেয়ে যেতে পারে৷ অতএব তল্লাশিও করতে হবে সাইবার পদ্ধতিতে৷ গ্রিক রূপকথার কাহিনীর মতো দুর্গের মধ্যে ট্রোজান হর্স পাঠিয়ে আঘাত হানতে চায় পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলি৷ কিন্তু পুলিশ হয়ে আবার আইনও ভাঙা যায় না৷ তাই প্রণয়ন করতে হয়েছে নতুন আইন৷ বিতর্কও অবশ্য কম হয় নি৷ সে আইনের কাঠামোর মধ্যে অনলাইন তল্লাশির উদ্যোগও শুরু হয়ে গেছে৷ কিন্তু এবার সর্ষের মধ্যেই ভুত পাওয়ায় শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক৷

ARCHIV - Besucher des Jahreskongresses des Chaos Computer Clubs (CCC) in Berlin arbeiten am 27.12.2010 an ihren Laptops. Dem Chaos Computer Club (CCC) ist nach eigenen Angaben eine «staatliche Spionagesoftware» zugespielt worden, die von Ermittlern in Deutschland zur Überwachung von Telekommunikationsverbindungen eingesetzt wird. «Die untersuchten Trojaner können nicht nur höchst intime Daten ausleiten, sondern bieten auch eine Fernsteuerungsfunktion zum Nachladen und Ausführen beliebiger weiterer Schadsoftware», teilte der Verein am Samstagabend (08.10.2011) in Berlin mit. Foto: Tim Brakemeier dpa +++(c) dpa - Bildfunk+++
ফাইল ছবিছবি: picture alliance / dpa

জার্মানির একাধিক রাজ্য সরকার কম্পিউটার তল্লাশির জন্য অর্ডার দিয়ে ট্রোজান হর্স তৈরি করে ব্যবহার করছে৷ সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ইন্টারনেটের মাধ্যমে টেলিফোন করলে সেই সংলাপ বা সংলাপ সংক্রান্ত তথ্য জমা করছে এই ট্রোজান৷ প্রতিটি ক্ষেত্রেই দাবি করা হয় যে, তদন্তকারীরা নিয়ম-কানুন মেনেই দায়িত্বজ্ঞান দেখিয়ে এই কাজ করছেন৷ কিন্তু বাভেরিয়া সরকারের এক ট্রোজান আবার প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশি সক্রিয় – তার প্রমাণ পাওয়া যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিতর্কের ঝড়৷ সেই ট্রোজান থেকে থেকে কম্পিউটারের স্ক্রিনশট নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেয়, যা মোটেই আইনসঙ্গত কাজ নয়৷ চাপের মুখে পড়ে জার্মানির বিচারমন্ত্রী নতুন এক কর্তৃপক্ষ গঠনের অঙ্গীকার করেছেন, যার কাজ হবে রাষ্ট্রীয় স্তরে ট্রোজান বা অন্যান্য অনলাইন তল্লাশির উপকরণ ও পদ্ধতির উপর নজর রাখা, যাতে কোনো অবস্থায় আইন ভাঙা না হয়৷

যারা এই অনলাইন তল্লাশির কাজ করেন, সেই পুলিশ ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা দপ্তরগুলিও নিজেদের অস্বস্তির কথা জানিয়েছে৷ পুলিশ কর্মীদের সংগঠন স্পষ্ট আইনি কাঠামোর দাবি তুলেছে, যাতে তদন্তকারী কর্মীরা বর্তমান অস্পষ্টতার কারণে ফেঁসে না যান৷ ২০০৮ সালে জার্মানির সাংবিধানিক আদালত এক্ষেত্রে অত্যন্ত কড়া নিয়ম ও স্পষ্ট সীমা বেঁধে দিলেও দৈনন্দিন খুঁটিনাটি কাজের ক্ষেত্রে এখনো অস্পষ্টতা রয়ে গেছে৷

বাভেরিয়ার তদন্তকারীরা গত এপ্রিল মাস থেকে ৫ বার ট্রোজান ব্যবহার করে ই-মেল ও ইন্টারনেট টেলিফোন কলের পাশাপাশি হাজার-হাজার স্ক্রিনশট'ও সংগ্রহ করেছে৷ একটি ক্ষেত্রে ২৯,৫৮৯ স্ক্রিনশট জমা পড়েছে৷ অর্থাৎ সন্দেহভাজন ব্যবহারকারী মনিটরের পর্দায় যা কিছু দেখেছে, তার হুবহু স্থিরচিত্র পৌঁছে গেছে তদন্তকারীদের হাতে৷ প্রতিটি তদন্তের ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি সংগ্রহ করা হলেও অবৈধভাবে স্ক্রিনশট সংগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে৷ ‘ডিগিটাস্ক' নামের এক সংস্থাই মূলত এই সব ট্রোজান সরবরাহ করেছে৷ ফলে এই সংস্থার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷ এমনকি এই সংস্থার তৈরি আড়ি পাতার সফটওয়্যারের প্রযুক্তির মান নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছে এক মহল৷ নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলি একাধিকবার এই সংস্থার কার্যকলাপ সম্পর্কে অভিযোগ তুলেছে৷ তাদের দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবেই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলেছে এই সংস্থা৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান