‘ঠ্যাঙ্গার চরে পাঠানোর সিদ্ধান্তের কোনো প্রয়োজন ছিল না’
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিচার্স ইউনিট (রামরু)-র প্রধান সমন্বয়কারী ড. আবরার প্রথমেই উল্লেখ করেন যে, ২০১৬ সালের ৯ই অক্টোবরের ঘটনার পর ‘একটা বড়সংখ্যক রোহিঙ্গা' বাংলাদেশে আসেন ও আরো বড় কথা, রোহিঙ্গা ইস্যু একটি আন্তর্জাতিক সংবাদে পরিণত হয়৷
তাঁর মতে, এই ঘটনাবলীর সবচেয়ে ইতিবাচক দিক ছিল, মিয়ানমারের শাসকগোষ্ঠীর উপর একটা বড় ধরনের চাপ৷ এক্ষেত্রে তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত কমিশনের রিপোর্ট, এমনকি পোপ ফ্রান্সিসের মন্তব্যের কথাও বলেন৷ ‘‘বাংলাদেশ থেকে একটা কূটনৈতিক ধারাবাহিকতা থেকে এই সাফল্য এসেছে'', বলে তাঁর ধারণা৷
অন্যদিকে রয়েছে রোহিঙ্গাদের ঠ্যাঙার চরে পাঠানোর পরিকল্পনা, যা ‘‘অত্যন্ত ভুল কাজ হয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন'' - বলেন ড. আবরার৷ ২০১৫ সালের এই পরিকল্পনা নতুন করে চালু করার কোনো প্রয়োজন ছিল না বলে তিনি মনে করেন, এক যদি না এর উদ্দেশ্য হয়, ‘‘অন্য রোহিঙ্গাদের সংকেত দেওয়া, তারা যেন এখানে না আসেন'', কেননা এখানে তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন না৷
কাজেই পদ্মানদীর মাঝির হোসেন মিয়ার ময়নাদ্বীপের মতো এই ঠ্যাঙ্গার চরের পরিকল্পনাতেও ভালো যেটুকু দেখছেন ড. আবরার, তা হলো, ‘‘প্রথমবার সরকার স্বীকার করে নিচ্ছেন যে, অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা যারা রয়েছেন, তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা, এই চাহিদাগুলো মেটানো প্রয়োজন৷''
৩০,০০০ নিবন্ধিত রোহিঙ্গা যে ন্যূনতম সুযোগসুবিধা ভোগ করছেন, অনিবন্ধিতরাও সেটা পাবেন ও আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রসমাজ তার ব্যয় বহন করবে বলে ড. আবরারের আশা৷ তবে চরম হতাশা কাটতে শুরু করেছে ও মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফেরৎ নিতে হবে বলেও তাঁর ধারণা৷ বিপুল সংখ্যক অনিবন্ধিত রোহিঙ্গার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রসমাজকে পর্যাপ্তভাবে অবহিত না করাটাই বাংলাদেশের ব্যর্থতা বলে তিনি মনে করেন৷
তাঁর কাছে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন ‘‘তাদের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করা''৷ পুলিশ যেন তাদের তুলে না নিয়ে যায়, বেআইনি অনুপ্রেবেশের জন্য যেন তাদের দায়ী করা না হয়৷ এরপর তাদের বাসস্থান, খাদ্য, শিশুদের জন্য পুষ্টি, চিকিৎসাসেবা ইত্যাদি নিশ্চিত করা উচিত এবং সেটা সম্ভব না হলে, নিজেদের জীবিকা অর্জনের সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন ড. সি আর আবরার৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷