1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হেরে গেল বায়ার্ন

২৪ এপ্রিল ২০১৪

বুধবার মাদ্রিদের বের্নাবেউ স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের ফার্স্ট লেগে রেয়াল বায়ার্নকে হারাল ১-০ গোলে৷ খেলাটা থেকে নানাবিধ জ্ঞানার্জন করলেন বায়ার্নের কোচ গুয়ার্দিওলা ও রেয়ালের কোচ আনসেলত্তি৷

https://p.dw.com/p/1BniP
UEFA Champions League FC Bayern München vs. Real Madrid
ছবি: Getty Images

কোনো বড় ক্লাবের একটা বড় টিম তৈরি হয় কিভাবে, আর কিভাবেই বা সেই টিমকে খেলায় কার্যকরি ও সফল করা যায়: এ হলো ফুটবলের ‘মিলিয়ন ডলার কোয়েশ্চেন' বা সোনার পাথরবাটি, দু'টোই বলা যায়৷

বের্নাবেউ-তে খেলছে রেয়াল মাদ্রিদ, অথচ তারা পুরোপুরি ডিফেন্সিভ, নিজেদের পেনাল্টি এরিয়ার চারপাশে ব্যূহ রচনা করে বায়ার্নের একটানা আক্রমণ রোখার চেষ্টা করছে – সে একটা অদ্ভূত দৃশ্য৷ নিজেদের মাঠে রেয়ালের বল পজেশন প্রথমার্ধে ছিল ২০ শতাংশ, খেলায় সব মিলিয়ে ২৮ শতাংশ – এ যেন ভাবাই যায় না৷

যদি না রেয়ালের কাউন্টার অ্যাটাক বা পাল্টা আক্রমণগুলো থাকতো৷ তার মধ্যে যেটা ফুটবলের ইতিহাসে উঠে গেল, সেটা হলো ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর একটি অসাধারণ পাস, বাঁ দিক ধরে, খাড়া পাস যা ফাবিও কোয়েনট্রাও-এর ক্রসে হঠাৎই কারেম বেনজেমার পায়ে খেলা জেতার গোল হয়ে দাঁড়াল৷

এটা শুধু বায়ার্নের দুর্বল ডিফেন্ডিং দৃষ্টান্ত নয়; রোনাল্ডো কোয়েনট্রাও-কে ‘দেখেননি', বায়ার্নের প্লেয়াররা যেমন দলের সতীর্থকে দেখে পাস করে থাকেন৷ রোনাল্ডো দেখেছিলেন আক্রমণের একটা সম্ভাবনা, যে সম্ভাবনাটিকে যুগপৎ কোয়েনট্রাও এবং বেনজেমাকেও আঁচ করে নিতে হয়েছে৷ এ হলো সুচতুর শ্বাপদদের দলবদ্ধ আক্রমণ, যার আগে থেকে কোনো খসড়া নেই কিংবা থাকে না৷ এর অন্য নাম হলো ফুটবল৷

ঠিক এইভাবেই একবার রোনাল্ডো আর একবার আনহেল ডি মারিয়া হঠাৎ বায়ার্নের গোলের সামনে পায়ে বল পান – ভাগ্যক্রমে দু'জনেই আবোলতাবোল শট করে সে দু'টো সুবর্ণ সুযেোগ নষ্ট করেছেন, নয়ত বায়ার্নকে ০-৩ রেজাল্ট নিয়ে মিউনিখে ফিরতে হতো! ঐ দু'টো নষ্ট সুযোগের প্রসঙ্গ তোলার একমাত্র কারণ হলো এটা স্মরণ করিয়ে দেওয়া যে, বায়ার্ন তরফ অনবরত পায়ে বল রেখে এবং আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলার প্রচেষ্টা করেও খেলা শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে মারিও গোয়েটৎসের ক্লোজ রেঞ্জ থেকে শটটি ছাড়া আর কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি৷ যা থেকে ক্যাপ্টেন ফিলিপ লামকেও বলতে হয়েছে, কপাল খারাপই শুধু নয়, বায়ার্নের আক্রমণে শেষে যেন কিসের অভাব ছিল৷

UEFA Champions League FC Bayern München vs. Real Madrid
গোল করার পর করিম বেনজেমার উল্লাসছবি: Getty Images

বায়ার্নের ফ্রাংক রিবেরি নাকি মুষড়ে আছেন, কেননা তাঁর পরিবর্তে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোকে বিশ্বের সেরা ফুটবলার নির্বাচন করা হয়েছে৷ তাহলে বলতে হয়, তিনি বাস্তবিক মুষড়ে আছেন: বুধবার তাঁকে একবারও ঝলসে উঠতে দেখা যায়নি৷ দলীয় সতীর্থ আরিয়েন রবেন তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মাঠের ডান দিকে নেচে বেরিয়েছেন, বল বাঁ পায়ে রেখে; মাঝেমধ্যে রক্তশূন্য কিছু শট নিয়েছেন৷ কিন্তু বলতে কি, বায়ার্নের এই বিখ্যাত ‘রবারি', অর্থাৎ রবেন প্লাস রিবেরি জুটির পরিবর্তে গুয়ার্দিওলা যদি আরো আগে ম্যুলার-গোয়েটৎসে জুটিকে মাঠে নামাতেন, তাহলেই বোধহয় ভালো করতেন৷ হাজার হোক, খেলায় বায়ার্নের একমাত্র ‘সুবর্ণ সুযোগটি' সৃষ্টি করে ঐ ম্যুলার-গোয়েটৎসে জুটি৷

এবার দেখা যাক বুধবারের ম্যাচটি থেকে গুয়ার্দিওলা ও আনসেলত্তি কি দেখলেন অথবা শিখলেন৷ গুয়ার্দিওলা স্বীকার করেছেন যে, তাঁর দল রেয়ালের পাল্টা আক্রমণের ধাক্কা সামলাতে গিয়ে কিছুটা দিশেহারা হয়ে পড়েছে৷ বায়ার্ন ‘‘প্রচুর ব্যক্তিত্বের সাথে'' খেলেছে, বলেছেন গুয়ার্দিওলা৷ তবে ‘‘মাদ্রিদের ওরা সব অ্যাথলিট৷ পাকা ফুটবলার, আবার অ্যাথলিটও বটে৷'' আরো বেশি ‘ভার্টিকাল', অর্থাৎ খাড়াখাড়ি খেলার বিপদ হতো এই যে, মাদ্রিদের পাল্টা আক্রমণও সেইরকম খাড়া ও দ্রুত হত৷ নয়ত আগামী মঙ্গলবার মিউনিখের আলিয়ানৎস অ্যারেনাতে ফিরতি খেলাও ঠিক বুধবারের মতো হবে, বলে গুয়ার্দিওলার ধারণা৷ তবে স্টেডিয়াম ভরে থাকবে বায়ার্নের ফ্যানরা৷

রেয়ালের কোচ আনসেলত্তি স্বীকার করেছেন যে, বায়ার্নের একটানা বল পজেশনে তিনি সুখি নন৷ কিন্তু ফুটবল তো আর শুধু বল নিজের কাছে রাখা নয়; ফুটবল হলো ডিফেন্ডিং, কাউন্টার অ্যাটাক, আরো কত কি৷ ‘‘আজ রাতে আমাদের যেটা ছিল, সেটা হলো প্লেয়ারদের আত্মত্যাগ,'' বলেছেন আনসেলত্তি৷ এক্ষেত্রে তিনি বিশেষ করে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর কথা বলেছেন, যিনি ২০ দিন পরে মাঠে ফিরেও জান লড়িয়ে খেলেছেন৷ মাদ্রিদের প্রিন্স অফ ওয়েল্স গ্যারেথ বেইল – যার অপর নাম এখন গ্যারেথ বোল্ট! – তিনিও এর আগের তিন দিন ফ্লু-তে ভুগছিলেন৷ মঙ্গলবারের ফিরতি খেলায় দু'জনেরই মাঠে নামার সম্ভাবনা আছে, বলেছেন আনসেলত্তি৷ তবে সে মাথাব্যথা তো আর তাঁর নয়, সে মাথাব্যথা গুয়ার্দিওলার – মন্তব্যটা আমাদের, আনসেলত্তির নয়৷

এসি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য