1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোবট যখন ফসল তোলে

৫ ডিসেম্বর ২০১৭

কারখানার পর ফসল তোলার কাজেও রোবট ব্যবহারের উদ্যোগ চলছে৷ রোবট সস্তায় বড় আকারে এই কাজ করতে পারলে কৃষকদের সুবিধা হতে পারে৷ কিন্তু এখনো এই কাজে মানুষের দক্ষতা বেশি৷

https://p.dw.com/p/2ojF4
ছবি: picture-alliance/Zumapress/S. Qing

মিউনিখ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্রে গবেষকরা সবজি চাষে বিপ্লব আনতে চান৷ এক রোবটকে দিয়ে ক্যাপসিকাম ফসল তোলানো হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হলো, ফসল অক্ষত থাকতে হবে৷

বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশ এবং ইসরায়েল ও চিলির সহযোগিতায় ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে প্রথম প্রোটোটাইপ তৈরি হয়েছিল৷ মিউনিখ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টোবিয়াস ব্যার্নিঙার ও তাঁর সহকর্মীরা সেই প্রোটোটাইপের সাহায্যে ল্যাবে অনুশীলন করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে আমাদের রোবটের সামনে হাত রয়েছে আর উপরে এক ভিশন-সিস্টেম রয়েছে৷ সেই চোখ ক্যাপসিকাম শনাক্ত করে৷ তারভিত্তিতে সিস্টেম রোবটের নড়াচড়া স্থির করে দেয়৷তারপর রোবট গাছের কাছে গিয়ে ক্যাপসিকাম তুলে নেয়৷''

কিন্তু এই ফসল তোলা রোবট কি সত্যি মানুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় জিততে পারে? কমপক্ষে আদর্শ পরিস্থিতিতে সেটা সম্ভব হতে পারে৷ টোবিয়াস ব্যার্নিঙার বলেন, ‘‘ল্যাবের পরিবেশ সত্যি খুব ভালো৷ এখানে প্লাস্টিকের তৈরি ক্যাপসিকাম রয়েছে৷ তাদের সবার রং এক৷  কোনো পাতা তাদের ঢেকে রাখছে না৷  তাছাড়া সব ক্যাপসিকামের হুবহু একই বৃদ্ধির হার৷ বাস্তবে পরিস্থিতি এর ঠিক বিপরীত৷ কাছের বৃন্তগুলি একইরকম মোটা হয় না৷ কখনো সেগুলি গাছের খুব কাছে, কখনো দূরে থাকে৷ রং ক্যাপসিকামের থেকে আলাদা৷ যথেষ্ট আলো থাকে না, প্রায়ই ঝাপসা ও অন্যরকম মনে হয়৷''

গাছপালার এমন জটিল জগতে এখনো পর্যন্ত চোখে দেখে নির্ভরযোগ্যভাবে শনাক্ত করার কোনো সিস্টেম না থাকায় রোবটকে হাতে করে চালাতে হয়৷

প্রায় এক মিনিটেই ফসল তোলার কাজ শেষ৷ ক্যাপসিকামেরও কোনো ক্ষতি হয়নি৷ তবে সব প্রজাতির ক্যাপসিকামের ক্ষেত্রে এত ভালো ফল পাওয়া যায় না৷

কিন্তু ফসল তোলার এমন রোবটের প্রয়োজন কী? আসলে ফসল তোলার হাড়ভাঙা খাটুনির জন্য লোক পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে৷ তাছাড়া এমন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ফসল তুলতে পারলে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে ব্যয় কমে যাবে, আরও ভালো করে পরিকল্পনা করা যাবে৷ ফসল তোলার কিছু রোবট উৎপাদনের উপযুক্ত হয়ে উঠেছে৷ যেমন একটি রোবট সেন্সরের সাহায্যে মাটির নীচে অ্যাসপারাগাস শনাক্ত করে তুলে নিতে পারে৷ ৭৫ জনের কাজ সে একাই করে ফেলতে পারে৷ নেদারল্যান্ডসের এক কোম্পানি আগামী বছরই এই রোবট বাজারে আনতে চলেছে৷

মিউনিখের গবেষকরা এখনো এতটা অগ্রগতি করতে পারেননি৷ প্রায় ৪ মিনিট পর কাজ শেষ৷ টোবিয়াস ব্যার্নিঙার বলেন, ‘‘শেষে কাজ হয়েছে বটে, কিন্তু আমরা দু-দু'বার ছুরি দিয়ে ফলের ক্ষতি করেছি৷ কারণ বেশ কয়েকবার নতুন করে চালনা করতে হয়েছে৷ অর্থাৎ সফল হই নি৷

একটি ক্যাপসিকামের জন্য ৪ মিনিট – অর্থাৎ অর্থনৈতিকভাবেসফল হতে রোবটের অনেক দেরি আছে৷ এছাড়া এখনো ফসলের ক্ষতি এড়ানো যাচ্ছে না৷

উলরিশ কাল্টেনস্টাডলার এর পরিণতি খতিয়ে দেখছেন৷ তিন সপ্তাহ আগে এক্সপেরিমেন্ট শুরুর সময় থেকেই তিনি প্রতিদিন রোবটের হাতে তোলা ফসল পরীক্ষা করছেন৷ সেইসঙ্গে মানুষের হাতে তোলা ক্যাপসিকামের সঙ্গে তার তুলনাও করছেন৷ ওজন, তাপমাত্রা ও শর্করার মাত্রাও পরিমাপ করছেন তিনি৷ রোবট ও মানুষের তোলা ফসলের মধ্যে সবচেয়ে স্পষ্ট তফাত কী? বিশেষজ্ঞ হিসেবে উলরিশ কাল্টেনস্টাডলার বলেন, ‘‘হাতে তোলা ফসলে বৃন্ত অক্ষত রয়েছে৷ অন্যদিকে রোবট দিয়ে তোলার বৃন্তে ছত্রাকের স্পষ্ট চিহ্ন দেখা যাচ্ছে৷ ছাঁটার রকমফেরের কারণে এমনটা ঘটছে৷ ছুরি হাতে কাটলে এবং রোবটের কাঁচি দিয়ে কাটলে এই তফাত দেখা যায়৷ বৃন্ত চেপটে গেলে ছত্রাক গজিয়ে ওঠে৷''

শাক সবজি উৎপাদনের সময় ছত্রাকের উৎপাত মেনে নেওয়া যায় না৷

কাটারিনা হয়ডরফার/এসবি 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান