র্যাব প্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদ
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪সোমবার বেলা আড়াইটা থেকে বিকাল ৪টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সচিবালয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান শাহজাহান আলী মোল্লার কক্ষে র্যাব মহাপরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়৷ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে মোখলেছুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বাহিনীর প্রধান হিসাবে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করাই বাঞ্ছনীয়৷ তাঁরা যা যা জানতে চেয়েছেন সব কিছুই বলেছি৷ যেটা সত্যি সেটাই বলেছি৷''
অবশ্য কোন কোন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে তা তিনি প্রকাশ করেননি৷ শুধু বলেছেন, ‘‘যেহেতু কমিটি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, সেহেতু সব বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ, সব বিষয়েই বলেছি৷'' তবে তাঁর দাবি, ‘‘র্যাবের স্বচ্ছতা আছে৷ র্যাব যেটা সত্য সেটাই করে৷ র্যাব সব সময় আইন, ন্যায় ও সত্যের পথে থাকে৷''
তদন্ত কমিটির প্রধান শাহজাহান আলী জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এই হত্যা মামলায় র্যাব সদস্যরা আসামি, তাঁদের কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়েছেন৷ তাই সংস্থার প্রধান হিসেবে মোখলেছুর রহমান যা জানেন, সে বিষয়ে আমরা কথা বলেছি৷ এই হত্যার ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে যেসব খবর এসেছে, সাক্ষীরা যা বলেছেন, আমরা যেসব তথ্য পেয়েছি তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে৷'' এছাড়া ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে তা নিশ্চিত করতে র্যাব মহাপরিচালকের ‘পরামর্শ' নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি৷
গত ২৭শে এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়৷ তিন দিন পর ৩০শে এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে তাঁদের লাশ পাওয়া যায়৷ লাশ উদ্ধারের পর হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৬ই মে অভিযোগ তদন্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান আলী মোল্লাকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার৷
শাহজাহান আলী মোল্লা জানিয়েছেন, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদ শেষের পথে৷ শিগগিরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে৷'' তিনি আরো জানান, প্রধান আসামি নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনকে শেষ পর্যন্ত না পেলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ না করেই প্রতিবেদন দেয়া হবে৷ নূর হোসেন এখন ভারতের কারাগারে আটক৷
উল্লেখ্য, এই কমিটি এর আগে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে৷ গ্রেপ্তার হওয়া র্যাব-১১-র তিন শীর্ষ কর্মকর্তা তাঁদের জবানবন্দিতে বলেছেন, কর্নেল জিয়াউল আহসানের নির্দেশেই নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সাতজনকে আটক এবং গুমের ঘটনা তিনিও জানতেন৷
এদিকে এই মামলার ফৌজদারি তদন্তও প্রায় শেষ পর্যায়ে৷ র্যাব ১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে গ্রেপ্তারের পর তাঁরা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন৷ এই তিন কর্মকর্তাসহ মোট দশজন র্যাব সদস্যকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ ঘটনার সাক্ষী হিসেবে র্যাবের নয় সদস্যসহ মোট ১২ জন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন৷