1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাথার দাম

৩ এপ্রিল ২০১২

পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈবা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মহম্মদ সাঈদ’কে ধরিয়ে দিলে এক কোটি ডলার দেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ সোমবার রাতে এমন এক ঘোষণার ফলে নানা মহলে প্রতিক্রিয়া শোনা যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/14WuW
ছবি: picture-alliance/dpa

লস্কর-ই-তৈবা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মহম্মদ সাঈদ একাধিক কারণে বিভিন্ন বিতর্কে জড়িত৷ ভারতের অভিযোগ, সাঈদ ২৬/১১র মুম্বই হামলার মূল হোতা, অতএব তার চরম শাস্তি হওয়া উচিত৷ ২০০৮ সালের এই সন্ত্রাসী হামলায় ১৬৬ জন নিহত হয়েছিল৷ পাকিস্তান ভারতের কাছে সাঈদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ দাবি করে আসছে৷ কিছুদিনের জন্য গৃহবন্দি করা হলেও পাকিস্তানে সাঈদের গতিবিধির উপর কার্যত কোনো বাধা নেই, জনসভায়ও তাকে ভাষণ দিতে দেখা গেছে৷ টেলিভিশনের টক শো'য় প্রায়ই দেখা যায় তাকে৷ সম্প্রতি আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে মার্কিন তৎপরতার বিরুদ্ধে দিফা-এ-পাকিস্তান নামের এক পরিষদের নেতা হিসেবেও সাঈদের জোরালো বক্তব্য শোনা গেছে৷

এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হাফিজ মহম্মদ সাঈদকে ধরিয়ে দিলে ১০ মিলিয়ন অর্থাৎ ১ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে৷ সোমবার নতুন দিল্লিতে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান এই ঘোষণা করার পরই রাতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সাঈদের নাম ও পুরস্কারের অঙ্ক প্রকাশ করা হয়৷ তালেবান নেতা মোল্লা মহম্মদ ওমরের মাথার দামও একই৷ একমাত্র আল- কায়েদার পলাতক নেতা এইমান আল জাওয়াহিরি'র জন্য আড়াই কোটি ডলার অর্থমূল্য স্থির করা হয়েছে৷ লস্কর-ই-তৈবার উপ-প্রধান হাফিজ আব্দুল রহমান মাক্কি'র সন্ধান দিলে ২০ লক্ষ ডলার পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করেছে অ্যামেরিকা৷ উল্লেখ্য, মাক্কি সাঈদের আত্মীয়৷

Indien Terroranschlag Mumbai 26.11.2008 26/11 Taj Mahal Hotel
ভারতের অভিযোগ, সাঈদ ২৬/১১র মুম্বই হামলার মূল হোতাছবি: AP

ওয়েবসাইটে সাঈদের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এইভাবে৷ মুম্বই সহ একাধিক সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত সাঈদ৷ ২০০৮ সালের মুম্বই হামলায় নিহতদের মধ্যে ৬ জন মার্কিন নাগরিক ছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে৷ সাঈদ এককালে আরবি ভাষা ও ইঞ্জিনিয়ারিং'এর অধ্যাপক ছিল৷ সাঈদ এমন এক সংগঠনের প্রধান, যা পাকিস্তান ও ভারতের একাংশে চরম ইসলামপন্থী শাসন কায়েম করতে চায়৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাঈদের এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি সংবাদ সংস্থা এপি'র কাছে মার্কিন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বিস্ময় প্রকাশ করেছে৷ সে বলেছে, পাকিস্তানি সরকার বা অন্য কেউ আমাদের সঙ্গে এবিষয়ে কথা বলে নি৷

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণা মার্কিন ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, এর ফলে লস্কর-ই-তৈবা ও তাদের মদতকারীদের কাছে এই বার্তাই পৌঁছে যাবে যে, আন্তর্জাতিক সমাজ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ৷ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির আসন্ন ভারত সফরের ঠিক আগে অ্যামেরিকার এই ঘোষণার ফলে কোনো জটিলতা দেখা যাবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷

হাফিজ মহম্মদ সাঈদ গত শতাব্দীর আশির দশকে লস্কর-ই-তৈবা প্রতিষ্ঠা করে৷ ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সংগ্রাম চালানোর লক্ষ্যে পাকিস্তান, বিশেষ করে সেদেশের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এই গোষ্ঠীকে মদত দিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে৷ ২০০১ সালে মার্কিন প্রশাসন লস্কর-ই-তৈবাকে বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর তালিকায় অন্তর্গত করে৷ তারপর মার্কিন চাপের মুখে পাকিস্তান ২০০২ সালে সরকারিভাবে লস্করকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে৷ কিন্তু বাস্তবে এই গোষ্ঠী পাকিস্তানে বেশ সক্রিয়৷ এমনকি সরকারি অর্থ কাজে লাগিয়ে তারা জনকল্যাণমূলক কাজও চালিয়ে যাচ্ছে৷ মুম্বই হামলার পরই লস্করের শাখা সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়া'কেও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ওয়াশিংটন৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন/এএফপি, এপি

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য