আসেম সম্মেলন
৫ নভেম্বর ২০১২আলোচনা করার মতো বিষয়ের তো কোনো অভাব নেই: অর্থনৈতিক সহযোগিতা, সন্ত্রাস এবং গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা৷ বৈঠকের মূলমন্ত্র হল ‘‘শান্তির জন্য মিত্র, সমৃদ্ধির জন্য সহযোগী''৷ কিন্তু সব মিলিয়ে শেষমেষ ইউরো সংকটই যে প্রাধান্য পাবে, সে বিষয়ে কারো সন্দেহ নেই৷
এশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ৷ এ বছরের প্রথম ছয় মাসে ইইউ দেশগুলি তাদের পণ্যের ৩১ শতাংশ আসেম সহযোগী দেশগুলিতে রপ্তানি করেছে৷ আমদানি ছিল আরো বেশি, ৪৩ শতাংশ৷ কিন্তু ইউরো সংকটের ছায়া পড়েছে গোটা সম্পর্কটির উপরে৷
বিশেষ করে এশীয় সহযোগীরা চিন্তিত৷ তাদের দুশ্চিন্তা হলো, ইউরো সংকটের ছোঁয়াচ এশিয়াতেও এসে লাগতে পারে৷ বর্তমানে অবশ্য প্রবৃদ্ধি ভালোই, কিন্তু চিন্তা তো থেকেই যায়৷ ইউরোপীয় সহযোগীদের প্রতি এশীয় নেতাদের প্রশ্ন: তোমরা কবে তোমাদের ঘর সামলাবে?
আসল কথা হল, ইউরোপ আর এশিয়ার জন্য ‘টপ প্রায়োরিটি' বা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার নয়৷ এশিয়ার চোখ এখন যুক্তরাষ্ট্রে দিকে, কিংবা তারা নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত৷ দুর্দান্ত প্রবৃদ্ধির কল্যাণে এশিয়া এখন প্রায় স্বতন্ত্র, স্বনির্ভর বললেই চলে৷ কাজেই ইউরোপকেই এখন উদ্যোগী হতে হবে৷
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মার্টিন শেফার ডয়চে ভেলেকে বলেন, আসেম বৈঠকে ইউরোপ তার এশীয় সহযোগীদের বোঝানোর চেষ্টা করবে, ঋণ সংকটের মোকাবিলা করার জন্য কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ এশীয় সহযোগীদের আস্থা ফিরিয়ে আনাই হল মূল কাজ, বলে শেফার মন্তব্য করেন৷
অপরদিকে, জার্মানি সম্পর্কে ইউরোপের এশীয় সহযোগীরা অত্যন্ত উচ্চ ধারণা পোষণ করে৷ কাজেই ইউরোপ-এশিয়া সম্পর্কে জার্মানির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকছে৷ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এ কথা ইতিমধ্যেই সত্য৷ বাণিজ্যিক বিচারে এশিয়ার সঙ্গে জার্মানির চেয়ে বেশি ব্যবসা ইউরোপের আর কোনো দেশ করে না৷ ২০১২ সালের প্রথমার্ধে এশিয়ার সহযোগী দেশগুলি থেকে ইইউ-এর মোট আমদানির ২০ শতাংশ, এবং এশিয়া অভিমুখে ইইউ-এর মোট রপ্তানির ৩৫ শতাংশ ছিল জার্মানির কল্যাণে৷