লুকিয়ে স্কার্টের নীচের ছবি তুললে হাজতবাস
৩১ অক্টোবর ২০১৮২৭ বছরের জিনা মার্টিনের লড়াই শুরু হয় লন্ডনের বিখ্যাত হাইড পার্কে একটি কনসার্টের সময় ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা থেকে৷ উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের লিভারপুল শহরের মেয়ে জিনা তখন কনসার্টে গান শুনতে মগ্ন৷এক ব্যক্তি সেই সুযোগে তাঁর স্কার্টের তলা থেকে মোবাইলে ছবি তোলে৷ বিষয়টি জিনার নজরে আসে যখন সেই ব্যক্তির বন্ধুর ফোনে জিনা নিজের ছবি দেখতে পান৷ লোকটির হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে জিনা পুলিশকে দেখালেও ছবিটি ফোন থেকে মুছে দিয়েই দায় সারেন তারা৷
তবে থেমে থাকেননি জিনা৷ ইংল্যান্ডে এই ‘আপস্কার্টিং' আইনের চোখে অপরাধ নয় জানার পর তাঁর মনে হয় কিছু একটা করা দরকার৷ শিক্ষিত, প্রগতিশীল পরিবারের নারীবাদী মেয়ে জিনা অনলাইনে একটি স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চালিয়ে প্রায় এক লক্ষ সই সংগ্রহ করেন৷ তাঁর লড়াইয়ের ফলে ‘আপস্কার্টিং', যা এতদিন ছিল আইনের আওতার বাইরে, বর্তমানে ব্রিটিশ সংসদে আলোচনার ঝড় তুলছে৷
কিন্তু এই লড়াই মোটেও সহজ ছিল না৷ অনলাইনে গালি-গালাজের পাশাপাশিধর্ষণের হুমকিও পেয়েছেন৷ এক সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছদ্মনাম নিতে হয় তাঁকে৷
কিন্তু তাঁর পরিবার, আইনজীবী ও বন্ধুদের সহায়তায় কঠিন সময় পেরোন তিনি৷ একটুও দমে না গিয়ে ‘আপস্কার্টিং'-এর শিকার অন্য নারীদের সাথে যোগাযোগ করেন৷ এই লড়াইয়ে প্রাথমিক ধাক্কা আসে যখন সাংসদ ক্রিস্টোফার চোপ জিনার প্রস্তাবিত আইন নাকচ করে দেন৷ তবে দিন দিন জিনার উদ্যোগের সমর্থক বাড়তে থাকায় আইন প্রণয়নের কথা ভাবতে বাধ্য হয় টেরেসা মে'র সরকার৷ সুদীর্ঘ সংগ্রামের পর অবশেষে আসছে নতুন আইন৷ লুকিয়ে স্কার্টের তলার ছবি তুললে দিতে হবে জরিমানা৷ কারাদণ্ডও হতে পারে৷
এই সাফল্যের কৃতিত্ব পৃথিবীজুড়ে চলমান ‘মি টু' আন্দোলনকেও দিয়েছেন জিনা৷ তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ করেই আমার লড়াই অনেকটা সহজ হয়ে গেল তখন৷ অনেকেই আমায় মেসেজ করেন তাঁদের সাথে ঘটা এমন ঘটনার কথা জানিয়ে৷ অবশেষে আমি তাঁদের উপযুক্ত লড়াইয়ের পথ বাতলাতে পারবো৷ এই আইন তাঁদেরকেও আমার মতো কিছুটা স্বস্তি দেবে মনে করি৷''
এসএস/এসিবি (এএফপি)