শরিয়া আইন শিথিল করেছে গ্রিস
১০ জানুয়ারি ২০১৮এ অঞ্চলে প্রায় এক লাখ বিশ হাজার মুসলিমের বাস৷ মঙ্গলবার এ আইন পাশ হয় সংসদে৷
আইন অনুযায়ী, সব পক্ষ রাজি থাকলে শরিয়া আদালতগুলো বিবাহ বিচ্ছেদ, শিশুর জিম্মা এবং উত্তরাধিকার বিষয়ে রায় দিতে পারবে৷ কিন্তু কোনো বিষয়ে কোনো পক্ষ যদি বেঁকে বসেন, তাহলে সাধারণ গ্রিক আইন প্রযোজ্য হবে৷
শতবর্ষ পুরোনো এই আইন সংস্কার হওয়ায় গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস একে ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ' বলে অভিহিত করেছেন৷ বলেছেন, এতে ‘‘সব গ্রিকদের জন্য আইনের সমান অধিকার নিশ্চিত হলো'' এবং একইসঙ্গে গ্রিস সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘‘বিশেষ আইনি ব্যবস্থার প্রতিও শ্রদ্ধাশীল'' থাকলো৷
ইউরোপে একমাত্র গ্রিসেই মুসলিমদের শরিয়া আদালত আছে৷ রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত মুফতিরা শরিয়া আইন অনুযায়ী পারিবারিক বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি করেন৷
অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর ১৯২৩ সালে তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যকার লৌজান চুক্তি অনুযায়ী শরিয়া আইন চালু হয়৷
চুক্তি অনুযায়ী, এছাড়াও প্রায় ২০ লাখ অধিবাসী বিনিময় করে তুরস্ক ও গ্রিস, যাতে বাদ পড়েন এবং এই পশ্চিম থ্রেস অঞ্চলের তুর্কি ভাষাভাষী মুসলিমরা৷
তুরস্ক সনাতনী গ্রিকদের এবং গ্রিস তুর্কি মুসলিমদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মচর্চার অধিকার দেয়, যা ঐ চুক্তিতে ছিল৷
মজার ব্যাপার হলো, গ্রিসের মুসলিমরা এখনো শরিয়া আইন মোতাবেক চলে, যেখানে তুরস্কে পরবর্তীতে অসাম্প্রদায়িক আইনি ব্যবস্থা চালু হয়৷ তুরস্ক সীমন্তবর্তী এই অঞ্চলে তুর্কি জাতির পাশাপাশি এখানে বুলগেরীয় ভাষাভাষি পোমাক সম্প্রদায়ও আছে৷
তবে এই আইনের পরিবর্তন করা নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় ছিল গ্রিস৷ তাদের অনেকেরই ধারণা যে, এ ধরনের পরিবর্তন করা হলে তুরস্ক লৌজান চুক্তিতেও পরিবর্তন চাইতে পারে৷
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান তো গেল মাসে গ্রিস সফরে অভিযোগই করে বসেছিলেন যে, এথেন্স মুসলিমদের প্রতি চুক্তি মোতাবেক আচরণ করছে না৷
আর এমন একটি সময়ে গ্রিস আইনটি পাস করলো যখন মানবাধিকার বিষয়ক ইউরোপীয় আদালত, ইসিএইচআর-এ এক মুসলিম নারীর নালিশের রায় ঝুলছে৷
পশ্চিম থ্রেসের ৬৭ বছর বয়সি সেই বিধবা নারীর অভিযোগ গ্রিসের বিরুদ্ধে৷ মৃত স্বামীর বোনদের সঙ্গে সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে গ্রিসের সাধারণ আদালত প্রথমে ঐ নারীর পক্ষে রায় দিলেও পরে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেন যে, মুসলিম সম্পত্তি কোন্দলের নিষ্পত্তি করার এখতিয়ার কেবল মুফতিদেরই আছে৷ এরপর ঐ নারী ইউরোপীয় আদালতে নালিশ করেন৷
জেডএ/ এসিবি (এএফপি, এপি, ডিপিএ)