শিশু নির্যাতন: চোখ-কান খোলা রাখুন
৮ আগস্ট ২০১৮তদন্তকারীদের প্রতিবেদন অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য ঠেকছিল৷ শুধু সঙ্গীকে অনুমতিই দেননি, নিজেও নিজের সন্তানকে যৌন নিপীড়ন করেছেন মা৷ এটা কীভাবে সম্ভব? শুধু তাই নয়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই যুগল পুরো বিশ্বের শিশু যৌন নিপীড়কদের কাছে সন্তানকে ভাড়াও দিয়েছেন!
কীভাবে এমন কাজ করতে পারে মানুষ! এ ঘটনা মনে পড়লেও এমন সব চিত্র মনে আসতে থাকে যে চিন্তা করাই বন্ধ করে দিতে ইচ্ছে হয়৷ এমনিতেই এখন একের পর এক বাজে খবর আসছেই৷ পরিস্থিতি একেবারেই অসহনীয়৷
এই শিশুটিকে গত কয়েক বছর কী ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, ভাবলে নিজেকেই অসুস্থ মনে হয়৷ সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে ইচ্ছে হয়৷ কিন্তু এটাই হবে সবচেয়ে বড় ভুল৷
দক্ষিণ জার্মানির স্টাউফেনে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা অস্বাভাবিক মাত্রায় ভয়াবহ৷ কিন্তু এর মানে এই না যে জার্মানির আর কোথাও যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে না৷ স্টাউফেনের ঘটনা থেকে আমরা যা জানতে পেরেছি তাতে শিশু স্বার্থ রক্ষায় নিয়োজিত কর্মকর্তারা কেন আগেই কোনো তথ্য পেলেন না, তা বিষ্ময়কর৷
একজন শিশু নির্যাতক এবং নির্যাতিত শিশু বছরের পর বছর ধরে কীভাবে একই ছাদের নীচে বসবাস করে আসছে! তাও আবার জার্মানির এত বিস্তৃত প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যে থেকে! স্টাউফেনের ঘটনা এমন প্রশ্নই সামনে নিয়ে এসেছে৷
এমন ভয়াবহ অপরাধের কারণ খুঁজতে বসার আগে জার্মানদের অন্য বিষয়ে আলোচনা শুরু করা উচিত৷ শিশু সুরক্ষা কর্মকর্তাদের আরো ক্ষমতা দেয়া উচিত, যাতে শিশুদের রক্ষায় তাঁরা প্রয়োজনে সবকিছু করার সামর্থ্য রাখেন৷
জার্মানির মতো সম্পদশালী একটি দেশে কর্তৃপক্ষ যখন অধিকতর তথ্য-প্রমাণ জোগাড়ের ক্ষেত্রে সামর্থ্যের অভাব নিয়ে অভিযোগ করেন, তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না৷
পাশাপাশি, আশেপাশে ঘটে চলা অস্বাভাবিক যে কোনো কিছুর ব্যাপারে সব নাগরিককেই তাঁদের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে এবং কর্তৃপক্ষকে জানানোর দায়িত্ব নিতে হবে৷ এটা যদি নিজেদের ‘কমফোর্ট জোন' থেকে বেরিয়ে এসে করতে হয়, তবুও তা করতেই হবে৷ নিজেদের রক্ষায় অক্ষম সদস্যদের কীভাবে সমর্থন দেয়া হচ্ছে, তার ওপরই নির্ভর করে সে সমাজটি আসলে কেমন৷ সমাজ কোনো বিমূর্ত ধারণা নয়, আমি-আপনি মিলেই সমাজ৷ ফলে আমরা তো আর আমাদের চোখ বন্ধ রাখতে পারি না, তাই না?
ইনেস পোল/এডিকে