‘বিশ্বনাগরিক’ বারেনবয়েম!
১৫ নভেম্বর ২০১২বিশ্বখ্যাত পিয়ানো বাদক এবং কন্ডাক্টর হলেও ডানিয়েল বারেনবয়েমের আসল পরিচয় তিনি সাহসী এক মানবদরদী শিল্পী৷ সব ভেদাভেদ ভুলে মানুষকে ভালোবাসতে পারেন বলে আর সব বিখ্যাত শিল্পীর চেয়ে তিনি আলাদা৷ জন্মসূত্রে ইহুদি৷ জন্ম রাশিয়ায়, ১৯৪২ সালের ১৫ই নভেম্বর৷ বাবা-মা তাঁদের ছেলেটিকে নিয়ে যখন আর্জেন্টিনায় চলে যান বারেনবয়েম তখনও বলতে গেলে কোলের শিশু৷ পিয়ানোয় হাতেখড়ি সেখানেই৷ বয়স তখন পাঁচ৷ সাত বছরে পা দিতে না দিতেই মঞ্চে পিয়ানো বাজিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে দেন৷ দু’বছর পর ইয়োহান সেবাস্টিয়ান বাখের একটা মাস্টারপিস এমন নিখুঁত বাজালেন যে উপস্থিত প্রায় সবাই বললেন, এ ছেলে বিরল প্রতিভাধর৷ আজ সেই ছেলে ডানিয়েল বারেনবয়েমেরই বয়স ৭০ হলো৷
ডানিয়েল বারেনবয়েম নামটি মানবতাবাদী মানুষ মাত্রই উচ্চারণ করেন শ্রদ্ধাভরে৷ করারই কথা৷ ইসরায়েলে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার গ্রহণের পর যিনি ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুরতার সমালোচনা করতে পারেন সে দেশের প্রেসিডেন্টের সামনে, তাঁকে শ্রদ্ধা না করে পারা যায়? বারেনবয়েম মনে করেন সংগীত সমস্ত ভেদাভেদ ভুলিয়ে মানুষকে এক করে দিতে পারে৷ এ বিশ্বাসের কথা যে শুধু বলে বেড়াচ্ছেন তা-ই নয়, প্যালেস্টাইন, জর্ডান, মিশর, সিরিয়া, লেবানন আর ইসরায়েলের শিল্পীদের নিয়ে গড়েছেন একটি অর্কেস্ট্রা৷ অর্কেস্ট্রার নাম রেখেছেন গ্যোয়টের এক অমর কাব্যের নামে – ওয়েস্ট-ইস্টার্ন ডিভান৷
প্রতি বছর গ্রীষ্মে ওয়েস্ট-ইস্টার্ন ডিভানের শিল্পীরা বেরিয়ে পড়েন সফরে৷ পিয়ানোর সুর-মূর্ছনায় মানুষের দুঃখ ভোলানোর, বিভেদ ভোলানোর সফর৷ সুরে সুরে ছড়িয়ে পড়ে মানুষের জয়গান৷ শুভ জন্মদিন বারেনবয়েম৷ দীর্ঘজীবি হোন৷ যুদ্ধবিরোধী ভাবনার জয় হোক, জয় হোক বিশ্বমানবতার৷