‘ডকুমেন্টা’
১২ জুন ২০১২১৯৫৫ সালে প্রথম ডকুমেন্টার আয়োজন করা হয়েছিল৷ তখন থেকে প্রতি পাঁচ বছর পর পর জার্মানির কাসেলে এই প্রদর্শনী হয়ে থাকে৷ অনেক নতুন শিল্পী সেখানে তাদের ক্যারিশমা দেখিয়ে বিখ্যাত হয়েছেন৷ যেমন চীনা শিল্পী আই ওয়েওয়ে৷ ২০০৭ সালের ডকুমেন্টায় অংশ নিয়ে তিনি সবার প্রিয় হয়ে ওঠেন৷ অনেকে ডকুমেন্টা'কে চিত্রকলার অলিম্পিক বলে থাকেন৷
বাংলাদেশের চিত্রশিল্পী ওয়াকিলুর রহমান অনেকদিন জার্মানিতে ছিলেন৷ এসময় তিনি কয়েকবার ডকুমেন্টায় গিয়েছিলেন৷ কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে৷ তিনি বললেন, ‘‘ডকুমেন্টা হচ্ছে একটা ঘটনা৷ ১০০ দিন ধরে এটা চলে৷ যারা ভিজ্যুয়াল আর্ট নিয়ে ভাবেন, যাদের এর প্রতি আগ্রহ আছে তাদের কাছে ডকুমেন্টা একটা বিশাল ব্যাপার৷ আগামী পাঁচ দশ বছরে পৃথিবীতে যে বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শনী হবে বা শিল্পীদের সমাগম হবে তার একটা দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে৷''
রহমান বলেন, ডকুমেন্টা কর্তৃপক্ষ একজন কিউরেটর নিয়োগ দেন৷ এই কিউরেটরই পাঁচ বছর ধরে ডকুমেন্টার মটো কী হবে, কারা সেখানে অংশ নেবেন এসব বিষয় ঠিক করে থাকেন৷ অর্থাৎ পুরো দায়িত্ব থাকে একজন কিউরেটরের ওপর৷ এবার যার ভার পড়েছে ক্যারোলিন ক্রিস্টোভ-বাকারগিয়েভ'এর ওপর৷ তিনি এবারের ডকুমেন্টার জন্য যে মটো ঠিক করেছেন সেটা হচ্ছে ‘কোল্যাপস অ্যান্ড রিকভারি', অর্থাৎ ‘ধ্বংস এবং পুনরুদ্ধার'৷ বর্তমানে বিশ্বে যে মারামারি, হানাহানি আর ধ্বংসযজ্ঞ চলছে সেটাকেই মটো হিসেবে বেছে নিয়েছেন বাকারগিয়েভ৷
ডকুমেন্টা চলাকালীন পুরো কাসেল শহরটা যেন একটা জাদুঘরে পরিণত হয়৷ কেননা এসময় শহরের কয়েকটা জাদুঘর থাকে ডকুমেন্টার শিল্পীদের চিত্রকর্মে ঠাসা৷ এছাড়া পার্ক এমনকি রেল স্টেশনেও দেখা যায় বিভিন্ন চিত্রকর্ম৷ অনেক শিল্পীকে খোলা জায়গায় তাঁর চিত্রকর্মের কাজ করতে দেখা যায়৷ এসময় তারা দর্শকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন৷
এবারের ডকুমেন্টা উপলক্ষ্যে চীনা শিল্পী সঙ ডঙ ময়লার এক স্তুপকে নতুন করে জন্মানো ঘাস দিয়ে সাজিয়ে তুলেছেন৷ আর থাই দুই শিল্পী সাদা রঙয়ের একটি ভাস্কর্য গড়েছেন৷ তাদের মতে, সেটা হচ্ছে ভুতের প্রতিকৃতি৷ থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহতদের স্মরণ করিয়ে দেবে এই ভাস্কর্য৷ এছাড়া এবার বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওজনের উল্কাপিণ্ড দেখানোর পরিকল্পনা করেছিলেন৷ অবশ্য শেষ পর্যন্ত সেটা বাতিল করা হয়৷
কাসেল ছাড়াও আফগানিস্তান, মিশর ও ক্যানাডায়ও ডকুমেন্টার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে৷ যেমন আফগানিস্তানে হবে একটি প্রদর্শনী৷ এছাড়া একটা ফিল্ম সিরিজও হবে সেখানে৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন