1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতর অভিযোগ তদন্তের আহবান

৬ মার্চ ২০১৯

তৈরি পোশাক খাতের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সাম্প্রতিক বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করা ও মিথ্যা মামলা দেয়ার অভিযোগ তদন্ত করতে বাংলাদেশ সরকারকে আহবান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷

https://p.dw.com/p/3EYLZ
Bangladesch Arbeiter in der Textilbranche
ছবি: DW/S. Burman

সেই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনা বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোকেও এসব অভিযোগের তদন্ত ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধে উদ্যোগ নেয়া উচিত বলে মনে করে সংস্থাটি৷

মঙ্গলবার এ নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, এইচআরডাব্লিউ৷ শ্রমিক নেতাদের তথ্য দিয়ে সংস্থাটি বলছে, জানুয়ারিতে সংঘটিত বিক্ষোভের জেরে অন্তত সাড়ে সাত হাজার শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা হয়৷ তাদের একটি অংশের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও লুটতরাজের অভিযোগ আনা হলেও তা সঠিক নয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন বলেন ,‘‘শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও তাদের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে অঙ্গীকার করেছে৷ কিন্তু শ্রমিকরা যখন বাঁচার মতো মজুরির দাবিতে ধর্মঘট করছে, তখন সেই প্রতিশ্রুতি সরকার রক্ষা করতে পারছে না৷''

শ্রমিকদের সম্মিলিত প্রতিবাদের কণ্ঠ রোধ করতে মিথ্যা ফৌজদারি অভিযোগ কিংবা গণহারে ছাঁটাই করা কারখানাগুলোর উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি৷

যা ঘটেছিল

গেল বছর তৈরি পোশাক খাতের জন্য ন্যূনতম মাসিক মজুরি ৫,৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮,০০০ টাকায় উন্নীত করে ন্যূনতম মজুরি কাঠামো ঘোষণা করে সরকার৷ শ্রমিক ও ইউনিয়ন নেতারা দাবি করেন, এতে নতুন নিযুক্ত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে মজুরি বাড়লেও উপরের স্তরে মজুরি তেমন একটা বাড়েনি৷ এ নিয়ে অসন্তোষের জের ধরে গেল বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে ঢাকা, আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুরের প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক বিক্ষোভ করে৷

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, ডিসেম্বরের ৩০ তারিখের জাতীয় নির্বাচনের আগে এধরণের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখা হলে গ্রেপ্তার ও গুম করা হতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিক নেতাদের হুমকি দেয়া হয়৷ জানুয়ারিতে আবারো শ্রমিকরা প্রতিবাদে নামার পর পুলিশ তাদের উপর জলকামান, টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে৷ এতে একজন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়৷

শ্রমিক ছাঁটাই ও কালো তালিকা

জানুয়ারির এই বিক্ষোভের পর এখন পর্যন্ত সাড়ে সাত হাজার শ্রমিককে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে শ্রমিক সংগঠনগুলো৷ পুলিশের বরাত দিয়ে এএফপি বলেছে, কারখানাগুলো ৪,৮৯৯ জনকে চাকরিচ্যুত করেছে৷ শ্রমিক নেতারা বলছে অন্য কোনো কারখানায় যাতে চাকরি না পায় সেজন্য ১,৭০০ শ্রমিককে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে৷ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হলেও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে কারখানাগুলো তাদের নোটিশে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যপ্রমাণ দেয়নি৷

মামলা ও গ্রেপ্তার

জানুয়ারির বিক্ষোভের ঘটনায় ৫৫১ শ্রমিকের নামে ও কমপক্ষে তিন হাজার অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে ২৯টি মামলা করা হয়েছে৷ যার মাধ্যমে পরবর্তীতে আরো শ্রমিককে ছাঁটাই করা হতে পারে বলেও শংকা প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থাটি৷ ইউনিয়ন নেতাদের বরাত দিয়ে সংস্থাটি বলছে, সবশেষ ৪ মার্চ পর্যন্ত ৫২ শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, যাদের ১১ জনের জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে৷ কমপক্ষে দুইজনকে আসামি করে ৩০৭ ধারায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে৷

ব্র্যান্ড ও সরকারের করণীয়

শ্রমিক হয়রানির অভিযোগ নিয়ে গেল ৭ ফেব্রুয়ারি এইচঅ্যান্ডএম একটি বিবৃতি প্রকাশ করে৷ সেখানে তারা নিয়মিত ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনার পাশাপাশি আলোচনা ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিবাদ মেটানোর জন্য সব পক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছে৷ এইচঅ্যান্ডএম, কিক, চিবো, ম্যাংগো, নেক্সট, মাতালান, ভিএফ, টাক্কো, আলডি, মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার, এসপ্রিট, ওয়ালমার্ট, জেসি পেনি এবং টেসকোকে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় দায়িত্ব নিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের বিবৃতিতে আহবান জানিয়েছে৷ শ্রমিক ছাঁটাই যাতে বন্ধ করা হয় সেজন্য চাপ প্রয়োগের পন্থা অবলম্বন করা উচিত বলেও মনে করছে সংস্থাটি৷

এইচআরডাব্লিউ কর্মকর্তা রবার্টসন বলেন, পুলিশ শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে, তাদের উপর রাবার বুলেট ছুড়ছে৷ ‘‘ব্যাপারটি বিদঘুটে শোনালেও বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এমন আচরণই করছে,'' বলে জানান তিনি৷ রবার্টসন আরও বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকারের উচিত এমন ব্যবস্থা নেয়া যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং ক্রেতাদের কাছে প্রতীয়মান হয় যে শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তায় তারা প্রতিশ্রুতিশীল৷''

এফএস/জেডএইচ (এইচআরডাব্লিউ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য