সংশোধনী বিল নিয়ে বিতর্ক
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪শেখ মেহেদী মির্জা এই বিলের পক্ষে সামহয়্যার ইন ব্লগে লিখেছেন,
‘‘বিচারপতি অপসারণে চাই সঠিক তদন্ত কমিটি৷ সম্প্রতি উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনায় সর্বত্র পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক চলছে৷ কিন্তু আমি এতে কোনো খারাপ কিছু দেখি না৷ ব্যারিস্টার মওদুদ তাঁর এক বইয়ে লিখেছিলেন যে তাঁরা ক্ষমতায় থাকতেও একই কাজ করতে চেয়েছিলেন এবং এই কিছুদিন আগেও স্পিকারের রুলিং নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের সময়েও তিনি বলেছিলেন যে, বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা যেন সংসদের হাতে ফেরানো হয়৷ কিন্তু এখন এই ঘটনার জন্য বিএনপি হরতাল ডাকছে৷''
তিনি বিএনপির পদক্ষেপের সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘‘হরতাল ডাকলে তো আগেই ডাকা যেত, যেন সরকার এটা পাশ না করে, পাশ করার পর আর হরতাল ডেকে কী লাভ? এইটা বুঝানোর মতো লোকও বিএনপিতে নেই, এই আজ পরিস্থিতি৷''
তিনি দিতে চেয়েছেন অন্য বিষয়ে৷ লিখেছেন, ‘‘একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযুক্ত বিচারপতির অপরাধ ঐ তদন্ত কমিটি দ্বারা তদন্ত যেন করা হয় এবং ঐ তদন্ত কমিটি গঠন করার ক্ষেত্রে যেন প্রধান বিচারপতির পরামর্শ নেয়া হয়৷ সবচেয়ে ভালো হয় ঐ তদন্ত কমিটি প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের কয়েকজন বিচারপতি এবং সাবেক প্রধান বিচারপতিদের সমন্বয়ে করা হলে৷ এবং এখানে অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত দু'জনেই যেন আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ পায়৷ এ জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত কার্যে যেন সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারে তাও নিশ্চিত করতে হবে৷''
শেখ মেহেদী মির্জা একই বিষয় নিয়ে লিখেছেন,
‘‘১/১১-এর জন্য যদি একজন দায়ী থাকে, তিনি মওদুদ আহমেদ৷ তিনিই প্রথম খালেদা জিয়াকে কুমন্ত্রণা দিয়ে নিজের লোক দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করানোর জন্য সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের বয়স বাড়ানো হলো৷ কলঙ্কিত করা হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে৷ দেশ পরে গেল ভয়াবহ রাজনৈতিক জটিলতায়৷ সেই ভয় থেকে আওয়ামী সরকার এই সরকার ব্যবস্থা বাতিল করলো৷ ফলে মওদুদ সৃষ্ট সেই সমস্যার জের আরো কতদিন যে এ দেশের মানুষকে ভোগ করতে হয়, তা কেবল সৃষ্টিকর্তা জানেন৷
মওদুদ তাঁর এক বইতে লিখেছিলেন, ‘‘আমরা পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হবার পরে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতাটা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার চিন্তা-ভাবনা করছি৷ কিন্তু এখন বলছেন পুরোই উল্টো কথা৷''
আশফাক সফল একই ব্লগে লিখেছেন,
‘‘বিচারপতি, তোমার বিচার করবে যারা
আজ জেগেছে সেই তো জনতা...
নাহ, এই জনতাকে জাগিতে দেওয়া যাইবে না৷ বড়ই খাতরনাক জিনিস এরা৷ আজ ইহাকে ভাললাগে তো কাল উহাকে৷ আর এই বিচারপতিদের দল, মুখে যাহা আসে বলিয়া দেয়, কথায় কথায় মোটা মোটা পুস্তককথা বলিয়া বসে৷''
তিনি একটি রূপক গল্প বলেছেন৷ লিখেছেন, ‘‘উপরের গানটি নিয়ে চিন্তিত আইন বাহাদুর৷ তিনি এক ফন্দি পাতিলেন৷ রাখাল বাহাদুরকে ডাকিয়া পাঠাইলেন৷
রাখাল বাহদুর, গানের মাঝেয় তো সমস্যার সমাধান আছে? কহিলেন আইন বাহাদুর৷
রাখাল বাহাদুরের প্রশ্ন: ‘কী রূপে?'
‘তোমার বিচার করবে যারা, এই রূপে' কহিতে থাকিলেন আইন বাহাদুর৷ বলিলেন, ‘লুই কান সাহেবের নকশা করা ঘরে যারা বসে তাহারাইতো জনগণ৷ জনপ্রতিনিধি বলিয়া কথা৷'
‘কেন আপনার মনে নেই ? আগে তো আমারাই অভিশংসন করিতে পারিতাম৷ মূল আইন পুস্তকে একখানা সংশোধন করিলেই সমস্যার সমাধান' – ব্যখ্যা করিলেন আইন বাহাদুর৷
যেরূপ ভাবনা সেরূপ কর্ম, কালকে বিল্মবিত হইতে না দিয়া, এক দশ ছয়তম সংশোধন করিয়া ফেলিলেন৷''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ