1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভিন্ন ধারায় নচিকেতা

২৩ জুন ২০১২

সংগীতে অসামান্য কীর্তি প্রদর্শনের পর নচিকেতার কলমে এবার সৃষ্টি হলো সাহিত্য, উপন্যাস, রম্যরচনা৷ তবে নচিকেতা নিজে মনে করেন, তাঁর গানগুলোও ছিলো গল্পের ধাঁচে৷ এবার শুধু সেগুলো গল্পের চেহারায় প্রকাশ পেলো৷

https://p.dw.com/p/15KGK
ছবি: Fotolia/Freesurf

সম্প্রতি কলকাতার একটি বিপণি বিতানে তাঁর বই ‘নতুন নচিকেতা অমনিবাস'-এর মোড়ক উন্মোচন করেন কথাশিল্পী শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়৷ বইটিতে রয়েছে নচিকেতার লেখা দুটি উপন্যাস, ১১টি গল্প, ৬টি রম্যরচনা এবং একগুচ্ছ গান৷ পাশাপাশি আছে তাঁর গাওয়া ‘আমার প্রিয় গান' নামের একটি সিডি৷ এটি প্রকাশ করেছে পত্রভারতী৷

গানের পাশাপাশি লেখালেখির জগতে বিচরণ নিয়ে ডয়চে ভেলের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এই জনপ্রিয় শিল্পী বলেন, ‘‘আসলে আমি যখন গান লিখতাম তখনও গানের মধ্যেই গল্প থাকতো৷ নীলাঞ্জনাও একটা গল্প, পেসমেকার, বৃদ্ধাশ্রম এগুলো সবই একেকটা গল্প৷ যে গানগুলো লিখেছি সেগুলো মূলতই গল্প৷ তবে আমি একটু কুঁড়ে আসলে৷ অনেকক্ষণ ধরে পাতার পর পাতা লিখতে ইচ্ছে করে না বলেই গান লিখি৷ গল্প লেখার ইচ্ছেটাও প্রথম থেকেই ছিল৷ তবে আমার বন্ধুপ্রতীম দাদা অধ্যাপক অনীশ দেব আমাকে খুব উৎসাহ দেন লেখার ব্যাপারে৷ এর আগেও আমার প্রথম যে উপন্যাস বের হয় ‘আগুন পাখির আকাশ', সেটি ১৯৯৪ সালে লেখা৷ সেসময় আমি খুব ব্যস্ত, খুব কাজের চাপ ছিল৷ হঠাৎ করে নাম হয়ে যাওয়া এবং চাপ বেড়ে যাওয়াতে আমি সময় খুব কম পেতাম৷ তবুও আমি প্রতিদিন এক পাতা করে লিখতাম৷ এভাবেই লেখা হয়েছিল সেই গল্পটা৷ সেটার পরে অনেকদিন আর লিখিনি৷ তারপরে অনীশ দেবের সাথে আমার পরিচয়৷ তাঁকে আমার হাবিজাবি কিছু লেখা দেখাই৷ তিনি সেগুলো দেখে বেশ উৎসাহের সাথে বলেন যে, এগুলো ছাপানো যায়৷ ভালো কাজ হয়েছে৷ তারপরই লেখতে শুরু করলাম৷''

তাঁর নতুন বইটিতে থাকা উপন্যাসগুলো সম্পর্কে নচিকেতা বলেন, ‘‘এতে দু'টি উপন্যাস রয়েছে৷ একটির নাম ‘ক্যাকটাস'৷ আর দ্বিতীয়টি ‘জন্মদিনের রাত'৷ তবে বইটিতে ‘আগুন পাখির আকাশ' বড় গল্প হিসেবে থাকলেও সেটিও মূলত একটি উপন্যাস৷ যাহোক, উপন্যাস দু'টিই থ্রিলার৷ তবে আবার শুধুই থ্রিলার নয়৷ এর মধ্যে মানবিক কতগুলো দিক নিয়েও কাজ করা হয়েছে৷ এক বৃদ্ধ মানুষকে নিয়ে আমার ‘ক্যাকটাস' গল্পটি৷ তবে লেখাগুলো অবশ্যই ভিন্নরকম৷ আমি গল্প সম্পর্কে অবশ্য এখনই বেশি কিছু বলবো না, বরং পড়ে দেখতে হবে৷''

Interview Nachiketa on his works and writing for online - MP3-Mono

তাঁর গান ও লেখায় যে ভিন্ন ধারার বহিঃপ্রকাশ ঘটে সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমার গানে যে ধারাটা হয়েছে, গল্পেও ঠিক প্রায় সেরকমই ধারা৷ আমার গল্পগুলো পড়লেই পাঠক বুঝতে পারবেন যে, তথাকথিত বাংলা সাহিত্যের গল্পের মতো নয়৷ একটি অন্য রকম ভাবধারার৷ আবার আমি হয়তো বাজে লিখেছি, কিন্তু বিষয়গুলো খুব অদ্ভুত৷ লেখাটা খুব ভিন্নরকম করার চেষ্টা করেছি অন্তত৷''

অদূর ভবিষ্যতে তাঁর বিশাল শ্রোতা ও পাঠক সমাজকে কী ধরণের কাজ উপহার দিতে যাচ্ছেন - এমন প্রশ্নের উত্তরে নচিকেতা বলেন, ‘‘আমি এখন পরিবেশ নিয়ে খুব চিন্তিত৷ এই মুহূর্তে পরিবেশ নিয়েই খুব ভাবছি৷ তবে আমি এখনও মন স্থির করিনি৷ আমি অবশ্য মন স্থির করেই মাঠে নামি৷ আসলে আমরা বিশেষ করে এই উপমহাদেশের মানুষ পরিবেশের ব্যাপারে সচেতন নই৷ ব্যাপকহারে গাছ কাটা হচ্ছে, জলাদিঘি ভরাট করা হচ্ছে৷ এতে পরিবেশের প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে৷ এ বিষয়টা মানুষকে একটু জানানোর কথা ভাবছি৷ কারণ এই পৃথিবীটা তো শুধু মানুষের বসবাসের জায়গা নয়, এখানে আরো অনেক প্রাণী আছে৷ পৃথিবীটা কারো বাবার সম্পত্তি - তা তো নয়৷ অথচ মানুষ সেটাই যেন ভেবে ফেলেছে৷ পৃথিবী থেকে অন্য প্রাণীরা সব বিলুপ্ত হতে চলেছে৷ এজন্য সচেতন হওয়া দরকার৷ আরেকটা ব্যাপার দেখুন, আমরা সবকিছু জন্যই দাম দিচ্ছি৷ আমরা খাবার জন্য, জলের জন্য, থাকার জন্য পয়সা খরচ করছি৷ কিন্তু আমরা অক্সিজেনের জন্য কোন দাম দিচ্ছি না৷ তাই এখন আমি মনে করি ‘অক্সিজেনের জন্য দাম দাও' এই স্লোগান হওয়া উচিত৷ প্রত্যেকটা মানুষের অন্তত দুটো তিনটে করে গাছ লাগিয়ে যাওয়া উচিত৷ কারণ একজন মানুষ সারাদিনে প্রায় ১৫ লিটার অক্সিজেন গ্রহণ করে৷ আর সেটা সরবরাহ করতে ছয়টা পূর্ণবয়স্ক গাছ দরকার৷ তাই নিজে যে অক্সিজেনটুকু গ্রহণ করছে, মানুষ অন্তত সেজন্য ছয়টা গাছ লাগিয়ে যাক৷ অথচ আমরা যেভাবে গাছ কাটা শুরু করেছি এরপরে আমাদের অক্সিজেন কে দেবে জানি না৷''

সাক্ষাৎকার: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য